বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে যতগুলো উন্নত ও সম্ভ্রান্ত মুসলিম দেশ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কুয়েত । এখানে বাংলাদেশের লাখ লাখ শ্রমিক বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত রয়েছেন । আমাদের বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষের স্বপ্ন হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোতে গিয়ে কাজ করা এবং অর্থ উপার্জন করা । তাই অনেকে জানতে চান কুয়েত কোন কাজের বেতন কত ।
বর্তমানে বাংলাদেশে অসংখ্য তরুণ ও তরুণী রয়েছে যারা পড়াশোনা শেষ করে বেকার অবস্থায় এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে । সরকারি চাকরি তো দূরের কথা ভাল কোন বেসরকারি চাকরি পাচ্ছে না । তারপর নিজের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতে করতে বার বার ডিপ্রেশনে চলে যাচ্ছে ।
আরও পড়ুন ➝ সিঙ্গাপুর যেতে কত টাকা লাগে
আপনি যদি এমন পরিস্থিতির শিকার হন তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশ থেকে কুয়েত আসুন । এখানে আপনার জন্য কাজের সুব্যবস্থা রয়েছে । আপনি চাইলে সম্পূর্ণ নতুন অবস্থায় কোন রকম অভিজ্ঞতা ছাড়াই কুয়েত এসে কাজ করার সুযোগ পাবেন । আপনার জন্য রয়েছে মোটা অংকের চাকরি করার সুব্যবস্থা ।
এখন আমরা জানব কুয়েতে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি এবং বেতন কত টাকা । আপনি যদি কখনো কুয়েত গিয়ে অর্থ উপার্জন করতে আগ্রহী হন তাহলে অবশ্যই এই পোস্টটি আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে । তাই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন । তো চলুন মূল আলোচনা শুরু করা যাক ।
কুয়েত কোন কাজের চাহিদা বেশি
আমরা জানি কুয়েত হচ্ছে উন্নত ও সম্ভ্রান্ত একটি দেশ যেখানে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কলকারখানা, বাড়িঘর ও স্থাপনা তৈরি করা হয় । এর জন্য বিপুল পরিমাণ দক্ষ জনবল এর দরকার হয় । তাই প্রতি বছর কুয়েত সরকার তাদের এই সকল কাজকর্ম করার জন্য বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ লোক নিয়োগ করে থাকে ।
আমরা যদি কখনো বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যেতে আগ্রহী হই তাহলে জানা দরকার বর্তমানে কুয়েত কোন কাজের চাহিদা বেশি । আপনাদের সুবিধার্থে নিচে তুলে ধরা হলো বর্তমানে কুয়েতে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি ।
- সাধারণ শ্রমিক
- ডেলিভারি বয়
- এসি মেকানিক
- ইলেকট্রিশিয়ান
- ড্রাইভার
- প্লাম্বার
- ওয়েল্ডার
এখানে যতগুলো কাজের নাম তুলে ধরা হয়েছে সবগুলো কাজ সবচেয়ে বেশি পরিমাণে চাহিদা রয়েছে । আপনি যদি উল্লেখিত কাজে পারদর্শী হন তাহলে শুরুতেই উচ্চ বেতনে কাজ করার সুযোগ রয়েছে । সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে এই কাজ গুলো আপনি সারা বছর অর্থাৎ ১২ মাস করার সুযোগ পাবেন ।
কুয়েত কোন কাজের বেতন কত
আমার যদি কখনো কুয়েত যেতে আগ্রহী হই তাহলে সবার প্রথমে প্রশ্ন আসছে কুয়েতে কোন কাজের বেতন কত টাকা । এখানে আপনি বিভিন্ন ক্যাটাগরির কাজ করার সুযোগ পাবেন তা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছেন । কিন্তু আমাদের অবশ্যই জানার দরকার কুয়েতে কোন কাজের জন্য কত টাকা বেতন ধরা হয় । নিচে একটি ছকে তা তুলে ধরা হলো ।
কাজের ধরণ | কাজের বেতন (মাসিক) |
---|---|
সাধারণ শ্রমিক | ৩৫,৫০০ টাকা |
ডেলিভারি বয় | ৪৪,৩৭৫ টাকা |
এসি মেকানিক | ৪৮,১৭৫ টাকা |
ইলেকট্রিশিয়ান | ৪৪,৩৭৫ টাকা |
ড্রাইভার | ৪৮,১৭৫ টাকা |
প্লাম্বার | ৩৮,৫০০ টাকা |
ওয়েল্ডার | ৩৮,৫০০ টাকা |
আরও পড়ুন ➝ কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন কত
এখানে উল্লেখিত কুয়েত কোন কাজের বেতন কত টাকা সম্পর্কিত ছকটি বর্তমান সময়ের বিভিন্ন অনলাইন ট্রাস্ট সোর্স এবং গুগল সার্চে দেওয়া তথ্য অনুসারে তুলে ধরা হয়েছে । তবে সময়ের সাথে সাথে ও চাহিদার পরিমাণ বৃদ্ধি হওয়ার উপর ভিত্তি করে কুয়েত কাজের বেতন কিছুটা কম বা বেশি হতে পারে ।
কুয়েত যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে
আমরা যদি কখনো কুয়েত গিয়ে কাজ করতে চাই তাহলে অবশ্যই কুয়েত ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তৈরি করতে হবে । এই ভিসা তৈরি করার জন্য আমাদের প্রথমে বেশ কিছু কাগজপত্র জোগাড় করার দরকার হবে । এখন নিচে তুলে ধরা হলো কুয়েত যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে ।
- পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- বৈধ বাংলাদেশী পাসপোর্ট
- পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
- মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট
এখানে যতগুলো কাগজপত্রের নাম তুলে ধরা হয়েছে সাধারণত কুয়েত কাজের ভিসা বা কুয়েত ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য এই কাগজপত্র গুলো দরকার হবে । আপনি নিজে কুয়েত ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদনের জন্য অথবা কোন এজেন্সি অথবা দালালের মাধ্যমে কুয়েত ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদনের পূর্বে উল্লেখিত কাগজগুলো সংগ্রহ করুন ।
কুয়েত কাজের ভিসা পাওয়ার উপায়
বর্তমানে কুয়েত কাজের ভিসা পাওয়ার উপায় হচ্ছে দুইটি । প্রথমটি হচ্ছে সরকারিভাবে কুয়েত কাজের ভিসা পাওয়া এবং দ্বিতীয় হচ্ছে বেসরকারিভাবে কুয়েত কাজের ভিসা পাওয়া । প্রতি বছর বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক কুয়েতে বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজের বিষয়ে লোক নিয়োগ করা হয়ে থাকে । এক্ষেত্রে কম খরচে কুয়েত যাওয়ার সুযোগ রয়েছে ।
তাছাড়া আপনার পরিবারের অথবা আত্মীয় স্বজনের কেউ যদি ইতিমধ্যে কুয়েত অবস্থান করে তাহলে আপনি তার রেফারেন্সে কুয়েতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে । কিন্তু এগুলো ছাড়াও আপনি চাইলে বিভিন্ন এজেন্সি অথবা দালালের মাধ্যমে কুয়েত কাজের ভিসা পেতে পারেন । তবে এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই বিশ্বস্ত এজেন্সি বা দালাল বাছাই করতে হবে ।
আমাদের শেষ কথা
সম্মানিত পাঠক, আজকের পোস্টে আমরা মধ্যপ্রাচ্যের উন্নত ও সম্ভ্রান্ত মুসলিম দেশ কুয়েতে কোন কাজের চাহিদা বেশি, বেতন কত টাকা এবং ভিসা পাওয়ার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করেছি । আপনি যদি কখনো কুয়েত যেতে আগ্রহী হন তাহলে উল্লেখিত তথ্যগুলো ফলো করে কুয়েত ভিসার জন্য আবেদন করুন ।
আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার খুবই ভালো লেগেছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আপনি যদি সামান্যতম উপকার পান তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব ও ফ্যামিলিতে পোস্টটি শেয়ার করুন । তাছাড়া আমার এই পোস্ট সম্পর্কে যদি আপনার কোন ব্যক্তিগত মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না । ধন্যবাদ ।