আপনি কি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ট্রেনের সময়সূচী ও ভাড়ার তালিকা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? আপনার উত্তরটি যদি হ্যাঁ হয়ে থাকে তাহলে সঠিক জায়গাতে এসেছেন । কেননা আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করব ঢাকা টু চট্টগ্রাম রেল পথে চলাচলকারী ট্রেনের তালিকা, ভাড়ার তালিকা, সময়সূচী এবং বিরতি স্টেশন সম্পর্কে ।
আমরা সচরাচর ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম চলাচল করার জন্য বাস অথবা মাইক্রো ব্যবহার করে থাকি । এই সড়ক পথে চলাচল করলে আমাদের বেশ কিছু ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয় । বিশেষ করে ঈদের সময়ে রাস্তাঘাটে প্রচুর পরিমাণে জ্যাম থাকে । এমন সময় দেখা যায় আপনাকে জ্যামে কয়েক ঘন্টা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয় ।
আরও পড়ুন ➝ মালদ্বীপ যেতে কত টাকা লাগে ও বেতন কত
কিন্তু যদি আপনি রেলপথে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যান তাহলে কিন্তু কোন জ্যাম এবং ঝামেলা নেই । সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে আপনি সঠিক সময়ে ট্রেনে আপনার গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পারছেন । তাছাড়া সড়ক পথে বাস অথবা মাইক্রো ব্যবহার করলে যত টাকা খরচ হবে রেলপথে গেলে তার অনেক কম খরচে যেতে পারবেন ।
আপনি যদি ইতিমধ্যে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রেল পথে যেতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আমার বিশ্বাস আপনি ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবেন । তাই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন । তো চলুন শুরু করা যাক ।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ট্রেনের তালিকা
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রেল পথে বেশ কয়েকটি ট্রেন নিয়মিত চলাচল করছে । আমরা যদি ঐ সকল ট্রেনের নাম সম্পর্কে জানি তাহলে পছন্দের ট্রেন বাছাই করতে পারব এবং সেই ট্রেনের টিকিট কেটে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারবো । নিচে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল পথে চলাচলকারী ট্রেনের নাম তুলে ধরা হলো ।
- সোনার বাংলা এক্সপ্রেস
- মহানগর প্রভাতী
- সুবর্ণ এক্সপ্রেস
- মোহনগর এক্সপ্রেস
- তূর্ণা
- চট্টগ্রাম মেইল
- কর্ণফুলী এক্সপ্রেস
- চট্টলা এক্সপ্রেস
এখানে উল্লেখিত আন্তঃনগর এবং মেইল ট্রেনগুলো খুবই বিলাসবহুল এবং সিতা তাপ নিয়ন্ত্রিত ট্রেন । এখান থেকে আপনার পছন্দের ট্রেন বাছাই করে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাতায়াত করতে পারেন ।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ট্রেনের সময়সূচী
আমাদের প্রত্যেকের ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ট্রেনের সময়সূচী সম্পর্কে ধারণ থাকা উচিত । এর মূল কারণ হচ্ছে আমরা যদি ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে চলাচলকারী ট্রেনের সময়সূচী সম্পর্কে জানি তাহলে সঠিক সময় স্টেশনে যেতে পারবো । তারপর পছন্দের ট্রেন ধরে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারবো । এখন নিচে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল পথে চলাচলকারী ট্রেনের সময়সূচি তুলে ধরা হলো ।
ট্রেনের নাম | ছাড়ার সময় | পৌঁছার সময় |
সোনার বাংলা এক্সপ্রেস | সকাল ০৭ঃ০০ | দুপুর ১২ঃ১৫ |
মহানগর প্রভাতী | সকাল ০৭ঃ৪৫ | দুপুর ০২ঃ০০ |
সুবর্ণ এক্সপ্রেস | রাত ০৯ঃ২০ | রাত ০৪ঃ৩০ |
মোহনগর এক্সপ্রেস | রাত ০৯ঃ২০ | ভোর ০৫ঃ৫০ |
তূর্ণা | বিকাল ০৪ঃ৩০ | রাত ০৯ঃ৫০ |
চট্টগ্রাম মেইল | রাত ১০ঃ৩০ | সকাল ০৮ঃ১০ |
কর্ণফুলী এক্সপ্রেস | সকাল ০৮ঃ৩০ | সন্ধ্যা ০৬ঃ০০ |
চট্টলা এক্সপ্রেস | বিকাল ০৪ঃ৩০ | রাত ০৯ঃ৫০ |
সোনার বাংলা এক্সপ্রেস – এই ট্রেনটি ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সকাল ০৭ঃ০০ টার সময় যাত্রা শুরু করে এবং চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে পৌঁছায় দুপুর ১২ঃ১৫ মিনিটে । এই ট্রেনের সাপ্তাহিক কোন বন্ধের দিন নেই ।
মহানগর প্রভাতী – ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সকাল ৭ঃ৪৫ মিনিটে এই ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে এবং দুপুর ০২ঃ০০ টার সময় চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে পৌছায় । এই ট্রেনের সাপ্তাহিক কোন বন্ধের দিন নেই ।
সুবর্ণ এক্সপ্রেস – রাত ০৯ঃ২০ মিনিটে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে এই ট্রেনটি ছাড়ে এবং চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন গিয়ে পৌঁছাই রাত ৪ঃ৩০ মিনিটে । সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের সাপ্তাহিক বন্ধের দিন হলো সোমবার ।
মোহনগর এক্সপ্রেস – ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে এই ট্রেনটি রাত ৯ঃ২০ মিনিটের যাত্রা শুরু করে এবং চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে পৌঁছায় ভোর ৫:৫০ মিনিটে । এই ট্রেনের সাপ্তাহিক কোন বন্ধের দিন নেই ।
তূর্ণা – বিকাল ০৪ঃ৩০ মিনিটে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে এই ট্রেনটি ছাড়ে এবং চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে পৌঁছায় রাত ০৯ঃ৫০ মিনিটে । এই ট্রেনের সাপ্তাহিক কোন বন্ধের দিন নেই
চট্টগ্রাম মেইল – রাত ১০:৩০ মিনিটে ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে এবং চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে পৌঁছাই সকাল ০৮ঃ১০ মিনিটে । এই ট্রেনের সপ্তাহের কোনো ছুটির দিন নেই ।
কর্ণফুলী এক্সপ্রেস – ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সকাল ৮:৩০ মিনিটে এই ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে এবং চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে পৌঁছে সন্ধ্যা ০৬ঃ০০ টার সময় । এই ট্রেনের সাপ্তাহিক কোন ছুটির দিন নেই ।
চট্টলা এক্সপ্রেস – বিকাল ০৪ঃ৩০ মিনিটে ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে এই ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে এবং রাত ০৯ঃ৫০ মিনিটে চট্টগ্রাম স্টেশনে গিয়ে পৌঁছায় । এই ট্রেনের সাপ্তাহিক কোন ছুটির দিন নেই ।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ট্রেনের বিরতি স্টেশন
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রেলপথে চলার সময় ট্রেনগুলো বেশ কিছু স্টেশনে যাত্রা বিরতি নিবে । এখন আমরা ওই সকল বিরতি কালীন স্টেশন গুলোর নাম সম্পর্কে জানব । তাহলে সেখানে যদি আমাদের কোন পরিচিত জায়গা অথবা গন্তব্য স্থল থাকলে নামতে পারব ।
- পাহাড়তলী
- ভাটিয়ারী
- সীতাকুণ্ড
- লাকসাম জংশন
- কুমিল্লা
- আখাউড়া জংশন
- ব্রাহ্মণবাড়িয়া
- আশুগঞ্জ
- ভৈরব বাজার জংশন
- নরসিংদী
- টঙ্গী জংশন
- ঢাকা বিমানবন্দর
- ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ট্রেনের ভাড়া
ঢাকা হতে চট্টগ্রাম ট্রেনের ভাড়া কত টাকা হবে তা নির্ধারণ করা যাবে আপনি কত দামী সিট বুকিং করতে চাচ্ছেন তার উপর ভিত্তি করে । আপনি যদি বেশি দামী সিট বুকিং করেন তাহলে বেশি টাকা খরচ করতে হবে এবং যদি কম দামি সিট বুকিং করেন তাহলে কম টাকা খরচ করতে হবে । মোট কথা এখানে আপনি কম দামি সিট থেকে শুরু করে বেশি দামি সিট বুকিং করার সুযোগ পাবেন । এখন নিচে ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রেনের কোন সিটের ভাড়া কত তা তুলে ধরা হলো ।
সিটের নাম | সিটের ভাড়া |
শোভন | ২৮৫ টাকা |
শোভন চেয়ার | ৩৪৫ টাকা |
স্নিগ্ধা | ৬৫৬ টাকা |
ফাস্ট সিট | ৪৬০ টাকা |
ফাস্ট বার্থ | ৬৮৫ টাকা |
এসি সিট | ৭৮৮ টাকা |
এসি বার্থ | ১১৭৯ টাকা |
ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল পথে চলাচলকারী ট্রেনের ভাড়া হচ্ছে যথাক্রমে শোভন ২৮৫ টাকা, শোভন চেয়ার ৩৪৫ টাকা, ফাস্ট সিট ৪৬০ টাকা, ফাস্ট বার্থ ৬৮৫ টাকা, স্নিগ্ধা ৬৫৬ টাকা, এসি সিট ৭৮৮ টাকা এবং এসি বার্থ ১১৭৯ টাকা । এখানে উল্লেখিত সাতটি সিটের মধ্যে আপনার যে সিট পছন্দ হয় সেই সিটের টিকিট কেটে আপনার যাত্রা সম্পন্ন করতে পারেন ।
আরও পড়ুন ➝ বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যেতে কত টাকা লাগে
আমাদের শেষ কথা
সুপ্রিয় দর্শক, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রেল পথে চলাচলের জন্য বেশ কয়েকটি ট্রেনের নাম, সময়সূচী, ভাড়ার তালিকা এবং বিরতি স্টেশন সম্পর্কে আমরা আজকের পোস্টে জানতে পেরেছি .। আপনি যদি কখনো ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাতায়াত করতে চান তাহলে উপরে উল্লেখিত ট্রেনগুলো থেকে যে কোন একটি ট্রেনের টিকিট কেটে আপনার যাত্রা সম্পন্ন করতে পারেন ।
আশা করি আমার এই পোস্ট পড়ে আপনার খুবই ভালো লেগেছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আপনি যদি সামান্যতম উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুবান্ধব ও ফ্যামিলিতে শেয়ার করবেন । তাছাড়া চাইলে আপনার ব্যবহৃত ফেসবুক ও টুইটার প্রোফাইলে ও শেয়ার করতে পারেন । এই পোস্ট সম্পর্কে যদি আপনার কোন মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন । ধন্যবাদ ।