বর্তমানে বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে প্রবাসী হিসেবে কাজ করছে । কেউ কেউ দুবাইতে কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে, কেউ কেউ ট্যাক্সি চালাচ্ছে, কেউ কেউ রেস্টুরেন্টে কাজ করছে আবার কেউ কেউ ব্যবসা করছে । কিন্তু আমরা অনেকে জানতে চাই দুবাই কোন কাজের চাহিদা বেশি ।
আমরা জানি সংযুক্ত আরব আমিরাত হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের উন্নত ও মুসলিম সম্প্রদায় ভুক্ত একটি দেশ । এই দেশের উন্নত একটি শহরের নাম হচ্ছে দুবাই । এই দুবাইতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কনস্ট্রাকশন বিল্ডিং এবং কল কারখানা সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তৈরি জন্য দরকার দক্ষ ও বিপুল পরিমাণ জনবল নিয়োগ ।
আরও পড়ুন ➝ ফ্রান্স যেতে কত টাকা লাগে
প্রতিবছর সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার দুবাই সহ সারাদেশে লাখ লাখ মানুষ নিয়োগ করে থাকে । আমরা যদি কখনো বিদেশি গিয়ে অর্থ উপার্জন করার চিন্তা ভাবনা করি । তাহলে অবশ্যই সবার প্রথম সারিতে দুবাইকে রাখবো । এখানে যদি আপনি যেতে পারেন তাহলে উন্নত জীবন যাপন করার পাশাপাশি উচ্চ বেতনে চাকরি করতে পারবেন ।
আমরা এখন দুবাইতে কোন কাজে সবচেয়ে চাহিদা বেশি ও বেতন কত এই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানবো । আপনি যদি ইতিমধ্যে এ সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হন তাহলে পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন । তো চলুন আমাদের মূল আলোচনায় যাওয়া যাক ।
দুবাই কোন কাজের চাহিদা বেশি
অনেকের স্বপ্ন দুবাইতে গিয়ে উন্নত জীবন যাপন করার পাশাপাশি উচ্চ বেতনে চাকরি করা । কিন্তু আমরা যদি কখনো দুবাইতে গিয়ে কাজ করতে চাই তাহলে আমাদের সবার প্রথমে জানা দরকার বর্তমানে দুবাইতে কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং বেতন বেশি দেওয়া হয় ।
দুবাইতে প্রায় প্রতিটি সেক্টরে প্রতি বছর লোক নিয়োগ করা হয়ে থাকে । আমরা যদি জানতে পারি দুবাই কোন কাজের চাহিদা বেশি তাহলে ওই বিষয়ে অভিজ্ঞতা থাকলে তো ভালোই । আর না হলে অভিজ্ঞ হওয়ার চেষ্টা করব । তাহলে দেখা যাবে শুরু থেকে উচ্চ বেতনে চাকরি করতে পারবে । এখন নিম্নে তুলে ধরা হলো দুবাই কোন কাজের চাহিদা বেশি সম্পর্কে ।
- কনস্ট্রাকশন
- রেস্টুরেন্ট
- ইলেকট্রনিক্স
- ওয়েল্ডিং
- ড্রাইভিং
- প্লাম্বিং
- ক্লিনিং
যতগুলো কাজের কথা তুলে ধরা হয়েছে বর্তমানে দুবাইতে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে এই কাজে দক্ষ জনবল নিয়োগ করা হয়ে থাকে । আপনি যদি উপরে উল্লেখিত কাজে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন তাহলে শুরু থেকেই উচ্চ বেতনে চাকরি করতে পারবেন এবং কাজের অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে প্রতি বছর বেতন বাড়তে থাকবে ।
দুবাই কাজের বেতন কত
আমরা ইতিমধ্যেই দুবাইতে কোন কোন কাজে চাহিদা সবচেয়ে বেশি তা জানতে পেরেছি । এখন আমরা জানবো দুবাই কাজের বেতন কত । ধরুন আপনি কনস্ট্রাকশন কাজে দুবাই গেলেন কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ বেতন পেলেন না তাহলে কিন্তু হলো না । তাই আমরা কখনো যদি দুবাই আসি তাহলে অবশ্যই ওই কাজের বেতন সম্পর্কে জেনে আসবো । এখন নিম্নে একটি ছক তৈরি করা হলো যেখানে আপনি জানতে পারবেন কোন কাজের বেতন কত ।
দুবাই কাজের নাম | দুবাই কাজের বেতন |
কনস্ট্রাকশন | ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা |
ড্রাইভিং | ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা |
ক্লিনিং | ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা |
ইলেকট্রনিক্স | ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা |
শ্রমিক | ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা |
উপরে উল্লেখ করা দুবাই কাজের বেতন বিভিন্ন ট্রাস্টেড ওয়েবসাইট ও সার্চ ইঞ্জিনের তথ্য অনুযায়ী তুলে ধরা হয়েছে । তবে সময়ের সাথে সাথে উপরে উল্লেখিত কাজগুলোর বেতন কম অথবা বেশি হতে পারে ।
দুবাই শ্রমিকদের বেতন কত
আপনি যদি একজন শ্রমজীবী মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে দুবাইতে আপনার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে । বর্তমানে দুবাইয়ে অসংখ্য কনস্ট্রাকশন কোম্পানি, কলকারখানা ও হাউজ বিল্ডিং তৈরি প্রতিষ্ঠান আপনার এই শ্রমকে সম্মান জানাবে । তারা আপনাকে প্রতি মাসে মোটা অংকের বেতন দিয়ে চাকরি দিবে ।
তাই এটা আপনার জন্য এক সুবর্ণ সুযোগ বলে মনে করা যায় । তবে আমরা যদি একজন শ্রমজীবী মানুষ হিসেবে দুবাইতে চাকরি করি তাহলে বেতন কত ধরা হবে তা জানা দরকার । আপনাদের কথা চিন্তা করে এখন আমরা জানব দুবাই শ্রমিকদের বা শ্রমজীবী মানুষদের বেতন কত টাকা করে ধরা হয়ে থাকে ।
আরও পড়ুন ➝ ইন্দোনেশিয়া যেতে কত টাকা লাগে
আপনি যদি একজন লেবার হয়ে থাকেন অর্থাৎ লেবার পোস্ট নিয়ে দুবাইতে কাজ করেন তাহলে শুরুতে আপনার বেতন ধরা হবে ৩০ হাজার টাকা থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ।
আপনি যদি কোন কাজে অভিজ্ঞ না হয়ে থাকেন তাহলে সচরাচর দুবাই কন্সট্রাকশন, কল কারখানা, এবং হাউজ বিল্ডিং প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি কাজে সাধারণ শ্রমিক হিসেবে আপনার বেতন ধরা হবে ৩০ হাজার টাকা থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ।
অতঃপর আপনি লেবার বলুন অথবা সাধারণ শ্রমিক বলুন ওই কাজে যদি অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন তাহলে আপনার বেতন বাড়বে । এক্ষেত্রে আপনার ১ বছর বা ২ বছরের ভিতরে বেতন হতে পারে ৪০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ।
আপনি যদি কখনো দুবাইতে গিয়ে কাজ করেন তাহলে অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে হবে । শুধুমাত্র শ্রমজীবী হিসেবে নয় আপনি অন্য বড় কোন পোস্টে চাকরি করলেও মনোযোগ দিয়ে কাজ করা দরকার । এ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের নজর আপনার দিকে পড়বে । অতঃপর আপনি খুব দ্রুত প্রমোশন পাবেন বা আপনার বেতন বছর বছর বাড়তে থাকবে ।
দুবাই যেতে কত টাকা লাগে
দুবাই যেতে কত টাকা লাগে এই কথাটি যখন আপনার মাথায় আসবে তখন আপনার ভাবতে হবে আপনি কোন কাজে দুবাই যাবেন । কারণ দুবাইতে বিভিন্ন ক্যাটাগরির উপর ভিসা পাওয়া যায় । আপনি যদি দুবাই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নেন তাহলে খরচ একরকম হবে । আবার যদি দুবাই টুরিস্ট ভিসা নেন তাহলে তার খরচ আরেক রকম হবে ।
আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে দুবাইয়ে কাজ সম্পর্কে । অর্থাৎ আমরা দুবাই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে গেলে কত টাকা খরচ হবে তা সম্পর্কে জানব । আপনার পরিবারের কেউ যদি ইতিমধ্যে দুবাই থাকে তাহলে উনার রেফারেন্সে আপনি দুবাই যেতে পারেন এক্ষেত্রে খরচ হতে পারে ৩ লাখ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ।
আবার আপনার যদি কোন পরিচিত আত্মীয় বা পরিবারের কেউ দুবাই না থাকে তাহলে আপনি বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে দুবাই যেতে পারেন । এক্ষেত্রে দুবাই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিতে আপনার খরচ হতে পারে ৬ লাখ টাকা থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত । তবে একটা বিষয় মাথায় রাখবেন আপনি যদি কোন এজেন্সি ব্যবহার করে দুবাই যান তাহলে অবশ্যই সেই এজেন্সি ১০০% বিশ্বস্ত কিনা তা যাচাই করে নিবেন ।
আমাদের শেষ কথা
সম্মানিত পাঠক, আজকের পোস্টে আমরা দুবাইতে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি, দুবাইতে শ্রমিকদের বেতন কত, দুবাই কাজের বেতন কত এবং সবশেষে দুবাই যেতে কত টাকা খরচ হয় সে সম্পর্কে জেনেছি । আপনি যদি ইতিমধ্যে দুবাই যেতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে উপরে উল্লেখিত স্টেপ গুলো ফলো করুন এবং আপনার দুবাই যাত্রা সম্পন্ন করুন ।
আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার খুবই ভালো লেগেছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আপনি যদি সামান্যতম উপকার পান তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব ও ফ্যামিলিতে এই পোস্টটি শেয়ার করুন । তাছাড়া এই পোস্ট নিয়ে যদি আপনার কোন মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না । ধন্যবাদ ।