দক্ষিণ ইউরোপের অন্যতম উন্নত দেশের নাম হচ্ছে পর্তুগাল । বর্তমানে এখানে বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন । কেউ কেউ পড়াশোনা করছেন, কেউ কেউ চাকরি করছেন অথবা ব্যবসা করছেন । আমাদের অনেকের জানার খুব আগ্রহ রয়েছে পর্তুগাল ভিসার দাম কত ।
আমাদের বেশিরভাগ মানুষের স্বপ্ন হচ্ছে ইউরোপের উন্নত দেশে গিয়ে কাজ করা । পাশাপাশি সেখানকার উন্নত জীবন যাপন উপলব্ধি করা এবং উচ্চ বেতন পাওয়া । তবে বেশিরভাগ মানুষের এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয় না । কেননা ইউরোপের অনেক দেশে আপনি খুব সহজে ভিসা পাবেন না অথবা ভিসার খরচ অনেক বেশি ।
আপনি যদি একজন শিক্ষিত এবং স্মার্ট ব্যক্তি হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই পর্তুগাল যেতে পারেন । এখানে আপনার উচ্চ বেতনে চাকরি করার পাশাপাশি উন্নত জীবন যাপনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে । তাছাড়া ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে পর্তুগালের ভিসা পাওয়া খুবই সহজ বলে মনে করা যায় ।
একজন সফল এবং প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি হিসেবে সমাজে নিজেকে তৈরি করতে হলে আপনাকে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে হবে । আপনি যেহেতু ইতিমধ্যে মনস্থি করেছেন বিদেশ গিয়ে অর্থ উপার্জন করবেন তাহলে অবশ্যই চেষ্টা করবেন পর্তুগাল আসার জন্য । কেননা এখানে আপনি অনেক বেশি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন ।
এখন আমরা পর্তুগাল ভিসার দাম কত সহ আরো অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করব । আপনি যদি ইতিমধ্যে এই বিষয় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে পোস্টটি আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে । তাই অবশ্যই মনোযোগ সহকারে পোস্টটি পড়তে থাকুন । তো চলুন মূল আলোচনা শুরু করা যাক ।
পর্তুগাল ভিসার দাম কত
আপনি যদি কখনো বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যেতে চান তাহলে অবশ্যই পর্তুগালের ভিসা তৈরি করতে হবে । এর কারণ হচ্ছে আপনি ভিসা ছাড়া কখনো পর্তুগাল যেতে পারবেন না এবং যদি ভুলক্রমে ভিসা ছাড়া অথবা জাল ভিসা নিয়ে পর্তুগাল আসেন তাহলে অবশ্যই পুলিশ গ্রেফতার করবে এবং জেলেও প্রেরণ করে দিতে পারে ।
আরও পড়ুন ➝ লুক্সেমবার্গ যেতে কত টাকা লাগে ও বেতন কত
তাই আমাদের প্রথমে জানা উচিত বর্তমানে পর্তুগাল ভিসার দাম কত । এখানে মূলত ভিসার ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে পর্তুগাল ভিসার দাম নির্ধারণ করা যায় । বর্তমানে পর্তুগাল কোম্পানি ভিসা, পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা, পর্তুগাল ফ্যামিলি ভিসা পর্তুগাল এবং ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া যায় । এই প্রতিটি ভিসার জন্য দাম আলাদা আলাদা হয়ে থাকে ।
আপনাদের কথা চিন্তা করে আমরা পর্তুগাল ভিসার দাম কত সম্পর্কে একটি ছক তৈরি করা হয়েছে । এই ছকে এখন তুলে ধরা হলো পর্তুগালের কোন ভিসার দাম কত ।
ভিসার ধরন | ভিসার দাম |
---|---|
কোম্পানি ভিসা | ৪ লাখ – ৫ লাখ |
স্টুডেন্ট ভিসা | ২ লাখ – ৩ লাখ |
ফ্যামিলি ভিসা | ১.৫ লাখ – ৫ লাখ |
ওয়ার্ক পারমিট (সরকারি) | ৪ লাখ – ৫ লাখ |
ওয়ার্ক পারমিট (এজেন্সি) | ৫ লাখ – ৬ লাখ |
উল্লেখিত ছকে বিভিন্ন অনলাইন ট্রাস্টেড সোর্স এর তথ্য অনুযায়ী উল্লেখিত পর্তুগাল ভিসার দাম তুলে ধরা হয়েছে । তবে সময়ের সাথে সাথে এবং চাহিদার কথা বিবেচনা করে পর্তুগাল সরকার কর্তৃপক্ষ চাইলে এই ভিসার দাম কিছুটা বেশি অথবা কম করতে পারে ।
পর্তুগাল ভিসা পাওয়ার উপায়
আমরা অনেকে পর্তুগাল যেতে চাই কিন্তু কিভাবে পর্তুগাল যাওয়া যায় সেই সম্পর্কে জানিনা । দেখুন বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যাওয়ার প্রথম উপায় হচ্ছে বৈধ ভিসা তৈরি করা । আপনি কখনোই অবৈধ ভিসা বা জাল ভিসা ব্যবহার করে পর্তুগাল যেতে পারবেন না এবং যদি ভুল করে সেখানে যান তাহলে আপনার পরিণতি খারাপ হতে পারে ।
এইজন্য প্রথমে আপনাকে বিশ্বস্ত ভিসা এজেন্সি খুঁজে বের করতে হবে যার মাধ্যমে আপনি পর্তুগাল যাওয়ার ভিসা তৈরি করতে পারবেন । ভিসা এজেন্সি বাছাই করার পূর্বে তাদের অফিসে সরাসরি যোগাযোগ করুন এবং অনলাইনে গ্রাহকদের কি কি রিভিউ রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে অবগত হন ।
আরও পড়ুন ➝ কানাডার ভিসা পাওয়ার সহজ উপায়
তাছাড়া আপনি চাইলে নিজে থেকে পর্তুগাল যাওয়ার ভিসা আবেদন করতে পারবেন অনলাইনের মাধ্যমে । তবে আপনার পরিবারের কোন ব্যক্তি যদি ইতিমধ্যে পর্তুগাল থাকে তাহলে উনার রেফারেন্স ব্যবহার করে সেখানে যেতে পারেন । মূলত ওই ব্যক্তি আপনাকে পর্তুগাল যাওয়ার ভিসার ব্যবস্থা করে দিতে পারবে । এক্ষেত্রে আপনার খরচ কিছুটা কম হবে ।
পর্তুগাল যেতে কি কি লাগে
আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যেতে হলে অবশ্যই পর্তুগালের ভিসা তৈরি করতে হবে । আর এই ভিসা তৈরি করার জন্য আপনাকে বেশ কিছু কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে । ওই সকল কাগজপত্র ব্যবহার করার মাধ্যমে মূলত পর্তুগালের ভিসা তৈরি করা হয়ে থাকে ।
আপনাদের কথা চিন্তা ভাবনা করে পর্তুগাল যেতে কি কি কাগজপত্র বা ডকুমেন্ট লাগে সেগুলো বাছাই করে ।ছি এখন নিম্নে ঐ সকল কাগজপত্রের নাম তুলে ধরা হলো ।
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট ফটোকপি
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট
- মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
- পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
আপনি যদি কখনো পর্তুগাল যেতে চান তাহলে প্রথমে উল্লেখিত কাগজপত্রগুলো সংগ্রহ করুন এবং বিশ্বস্ত এজেন্সির কাছে জমা দিন । তাছাড়া এগুলো ছাড়াও যদি অতিরিক্ত কোন কাগজপত্রের দরকার হয় তাহলে পর্তুগাল ভিসা এজেন্সির পরামর্শ অনুযায়ী অফিসে জমা দিন ।
পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে
সাধারণত ভিসার ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে তা নির্ধারণ করা যায় । আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা, পর্তুগাল ফ্যামিলি ভিসা, পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এবং পর্তুগাল কোম্পানি ভিসা এগুলো পাওয়া যায় । তাই এই ভিসা গুলোর দামের উপর ভিত্তি করে পর্তুগাল যাওয়ার খরচ নির্ধারণ করা যায় ।
আপনি যদি একজন স্টুডেন্ট হিসেবে বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যেতে চান তাহলে এক্ষেত্রে পর্তুগাল যেতে সর্বনিম্ন ২ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে । তাছাড়া আপনি যদি ফ্যামিলির ভিসায় পর্তুগাল যেতে চান তাহলে এক্ষেত্রে খরচ হতে পারে ২ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ।
আপনার চিন্তা থাকে যদি পর্তুগাল গিয়ে কাজ করবেন এবং অর্থ উপার্জন করবেন তাহলে পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিতে পারেন । সাধারণত এই ভিসায় পর্তুগাল যেতে আপনার ৮ লাখ টাকা থেকে ১৩ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে । এখন আপনি কোন ভিসায় পর্তুগাল যাবেন তা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিন ।
পর্তুগাল যেতে কত বছর বয়স লাগে
আমাদের অনেকের সাধারণ একটি প্রশ্ন পর্তুগাল যেতে কত বছর বয়স লাগে । এই প্রশ্নটির উত্তর দেওয়ার পূর্বে আপনাকে জানতে হবে আপনি মূলত কোন কাজে বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যেতে চাচ্ছেন । সাধারণত পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বা পর্তুগাল কাজের ভিসায় যেতে আপনার সর্বনিম্ন ১৮ বছর বয়স লাগবে ।
কিন্তু আপনি যদি টুরিস্ট ভিসায় পর্তুগাল যেতে চান তাহলে ১৮ বছরের নিচে হলেও আপনি সেখানে যেতে পারবেন । তবে অবশ্যই এক্ষেত্রে আপনার অভিভাবকের অনুমতি পত্র থাকা লাগবে । কিন্তু আপনি এবং আপনার অভিভাবক যদি একই সময় পর্তুগাল যেতে চান তাহলে কোন অনুভূতি পত্রের দরকার নেই ।
আমাদের শেষ কথা
সম্মানিত দর্শক, আজকের পোস্টে আমরা বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যেতে কত টাকা খরচ লাগে, কোন ভিসার দাম কত এবং যেতে কত বছর বয়স লাগে সম্পর্কে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে । তাই আপনি যদি কখনো বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যেতে চান তাহলে প্রথমে পছন্দের ভিসা বাছাই করুন এবং তারপর উল্লেখিত নির্দেশনা ফলো করুন ।
আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার খুবই ভালো লেগেছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আপনি যদি সামান্যতম উপকার পান তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব ও ফামিলিতে পোস্টটি শেয়ার করুন । তাছাড়া আমার এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার যদি কোন মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানান । ধন্যবাদ ।