আমাদের অনেক ভাই ও বোন ইতালি স্পন্সর ভিসা সম্পর্কে জানতে চান । আপনিও কি এ বিষয়ে জানতে আগ্রহী আছেন? যদি আপনার উত্তরটি হ্যাঁ হয় তাহলে সঠিক জায়গাতে এসেছেন । কারণ আজকের পোস্টে আমরা জানব ইতালি স্পন্সর ভিসা কি, আবেদন করতে কি কি ডকুমেন্ট লাগবে, ভিসার খরচ কত এবং স্পনসর ভিসার বেতন কত ।
বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশে শিক্ষিত মানুষের তুলনায় চাকরির হার অনেক কম । গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার শিক্ষিত মানুষদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণের চাকরি ব্যবস্থা করতে পারছে না । তাছাড়া ছোট খাটো মিল ফ্যাক্টরি গুলোতেও এখন ভালো মানের চাকরি করার সুযোগ নেই । আপনি যেখানেই চাকরি নিতে যাবেন ঘুষ দিতে হবে ।
আরও পড়ুন ➝ ইতালিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি
এখন নাকি সরকারি চাকরি নিতে হলে মামা ও খালু থাকতে হয় । তাই আমাদের দেশের যুবক ও যুবতীদের সরকারি চাকরি প্রতি রুচি কমে গেছে । সরকারি চাকরি অথবা বেসরকারি চাকরি কোনটা না হওয়াতে বেশিরভাগ যুবক এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে । আর সমাজে ও পরিবারের কাছে খুঁটা শুনতে হচ্ছে ।
একজন বেকার ব্যক্তি বলতে পারবে বেকার থাকলে কতটুকু কথা শুনতে হয় পরিবারের কাছ থেকে । তাই সমাজের বেকার যুবক-যুবতী বিদেশ যাওয়ার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠছে । মূলত ইউরোপের উন্নত দেশগুলো এখন তাদের টার্গেটের মধ্যে রয়েছে । আমরা জানি ইউরোপের বেশিরভাগ দেশ উন্নত ।
ইউরোপের যতগুলো উন্নত দেশ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো ইতালি । এই দেশটির নাম আমরা প্রায় কম বেশি শুনে থাকবো । ইতালি হলো পশ্চিম ইউরোপের উন্নত একটি দেশের নাম । এদেশের জনসংখ্যা তুলনামূলক কম । তাছাড়া এখানকার জনগণের মাথাপিছু আয় অনেক বেশি সেই সুবিধার্থে মুদ্রার মান অনেক বেশি ।
আপনি যদি সমাজ ও পরিবারের খোঁটা থেকে বাঁচতে চান এবং নিজের জীবনকে উপভোগ করতে চান তাহলে অর্থ উপার্জন করতে হবে । আর যদি অধিক পরিমাণে অর্থ উপার্জন করতে চান তাহলে ইতালিতে আসতে পারেন । এখন আমরা ইতালিতে কিভাবে স্পন্সর ভিসায় আসা যায় সে সম্পর্কে আলোচনা করব । তাই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন ।
ইতালি স্পন্সর ভিসা
ইতালি স্পন্সর ভিসা হলো এমন একটি ভিসা যার মাধ্যমে আপনি ইতালিতে সর্বোচ্চ ৯০ দিন থাকার সুযোগ পাবেন । তবে আপনি যদি এই ভিসা পেতে চান তাহলে অবশ্যই একজন স্পন্সর দরকার হবে । আপনার পরিবারের অথবা আত্মীয়স্বজনের কেউ যদি ইতালি থাকে তাহলে তার থেকে স্পন্সর নিতে পারেন ।
ইতালি হচ্ছে আমাদের বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীদের জন্য স্বপ্নের দেশ । এখানে যদি আপনি স্পন্সর ভিসাতে একবার আসতে পারেন তাহলে আপনি ৯০ দিন থাকার সুযোগ পাচ্ছেন । এই ৯০ দিনে আপনি নতুন ভাবে এখানে থাকার জন্য ভিসার আবেদন করতে পারেন এবং অর্থ উপার্জন করতে পারেন ।
ইতালি স্পন্সর ভিসা আবেদন
আপনি যদি ইতালিতে স্পন্সর ভিসা পেতে চান তাহলে অবশ্যই এই ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে । আপনার পরিবারের অথবা আত্মীয়-স্বজনের কেউ যদি ইতালি থাকে তাহলে আর আপনাকে আবেদন করা নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে হবে না । তারাই আপনার ব্যবস্থা করে দেবে । তবে এই ভিসার আবেদন করতে কি কি ডকুমেন্ট লাগবে এখন আমরা জানব ।
- বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে
- ভিসা আবেদন ফি দিতে হবে
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি তুলতে হবে
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র
- ফিঙ্গারপ্রিন্ট সাবমিশন করতে হবে
- ইতালি ভাষায় পারদর্শী হতে হবে
- পুলিশ ভেরিফিকেশন করতে হবে
এখানে উল্লেখিত ডকুমেন্টগুলো অবশ্যই আপনাকে ইতালি স্পন্সর ভিসা আবেদন করার পূর্বে সংগ্রহ করে নিতে হবে । অতঃপর উপরোক্ত ডকুমেন্টগুলো তথ্য আপনার পরিচিত ব্যক্তির কাছে পাঠিয়ে দিবেন । তখন বাকি সব ব্যবস্থা উনি করে দিবে ।
ইতালি স্পন্সর ভিসা খরচ কত
আপনি যদি ইতালি স্পনসর ভিসা নিতে চান তাহলে অবশ্যই ভিসা বাবদ টাকা খরচ করতে হবে । বর্তমানে ইতালি স্পন্সর ভিসা দুই ভাবে আপনি তৈরি করতে পারবেন । আপনার পরিবারের কেউ যদি ইতালি থাকে তাহলে তার মাধ্যমে স্পন্সর ভিসা তৈরি করতে পারেন অথবা এজেন্সি ও দালাল দিয়ে স্পন্সর ভিসা তৈরি করতে পারেন ।
আরও পড়ুন ➝ দুবাই থেকে আমেরিকা যাওয়ার সহজ উপায়
আপনার পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে ইতালি স্পন্সর ভিসা তৈরি করতে খরচ হবে ৪ লক্ষ থেকে ৬ লক্ষ টাকা । কিন্তু আপনি যদি কোন এজেন্সি বা দালাল মাধ্যমে ইতালির স্পন্সর ভিসা তৈরি করেন তাহলে কিন্তু ৮ লক্ষ থেকে ১৫ লাখ টাকা খরচ হবে । তাই আমি সাজেশন করবো আপনার পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে ইতালি স্পন্সর ভিসা তৈরি করুন ।
ইতালি স্পন্সর ভিসা বেতন কত
আমরা ইতিমধ্যে ইতালি স্পন্সর ভিসা আবেদন করতে কি কি ডকুমেন্ট লাগবে এবং খরচ কত হবে সে সম্পর্কে জানতে পেরেছি । এখন আমরা জানব এই বিষয়ে ইতালি গেলে কত টাকা প্রতি মাসে বেতন পাব । হ্যাঁ, আমরা যদি কখনো ইতালি যাই স্পন্সর ভিসা দিয়ে তাহলে অবশ্যই জেনে নিব আমাদের কত টাকা বেতন ধরা হবে ।
আপনি যদি নতুন অবস্থায় ইতালি স্পন্সর ভিসায় যান তাহলে বেতন ধরা হবে সর্বনিম্ন ১ লক্ষ টাকা । কিন্তু আপনি যদি নির্দিষ্ট কোন কাজের উপর অভিজ্ঞ থাকেন তাহলে আপনার বেতন ২ লাখ টাকা থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ধরা হবে । তাই ইতালি যাওয়ার পূর্বে যে কোন একটি বিষয়ে পারদর্শী হয়ে তারপর যাবেন । তাহলে শুরু থেকে বেশি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন ।
আমাদের শেষ কথা
সম্মানিত পাঠক, আজকের পোস্টে ইতালি স্পন্সর ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছি । এই ভিসা পেতে কি কি ডকুমেন্ট লাগবে, কত টাকা খরচ হবে এবং বেতন কত টাকা হবে সে সম্পর্কেও জেনেছি । আপনি যদি কখনো ইতালিতে যেতে চান তাহলে উপরোক্ত তথ্য ফলো করে স্পন্সর ভিসা নিয়ে সেখানে যেতে পারেন ।
আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার খুবই ভালো লেগেছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে যদি ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধুবান্ধব ও ফ্যামিলিতে শেয়ার করবেন । তাছাড়া চাইলে আপনার ব্যবহৃত ফেসবুক ও টুইটার প্রোফাইলেও শেয়ার করে রাখতে পারেন । অতএব আজকের মত এখানেই শেষ করছি । সবাই ভালো থাকুন । আল্লাহ হাফেজ ।