আপনি কি কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? আপনার উত্তরটি যদি হ্যাঁ হয় তাহলে সঠিক জায়গাতে এসেছেন । কারণ আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করব কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে কি কি কাগজপত্র লাগে, খরচ কত এবং বেতন কত ইত্যাদি সম্পর্কে ।
কানাডা হচ্ছে উত্তর আমেরিকার উন্নত একটি দেশের নাম । এদেশের জনগণের মাথাপিছু আয় তুলনামূলক অনেক বেশি । সেই সুবিধার্থে এখানকার মুদ্রার দামও বেশি । কানাডার মুদ্রার নাম হচ্ছে কানাডিয়ান ডলার । এখানকার জনগণের জীবনযাত্রা অতি উচ্চপর্যায়ের । তাই আমাদের বাংলাদেশীদের সবার পছন্দের তালিকা রয়েছে কানাডা ।
আরও পড়ুন ➝ মালয়েশিয়া ভিসার দাম কত
বর্তমান দেশে অনেক যুবক ও যুবতী পড়ালেখা শেষ করে এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে । এই জায়গা সেই জায়গায় ইন্টারভিউ দিয়েও কোন চাকরি পাচ্ছে না । সরকারি চাকরি তো দূরের কথা কোন বেসরকারি ভালো চাকরিও পাচ্ছে না । আর ওই সকল যুবক-যুবতী বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশগুলোতে অর্থ উপার্জনের জন্য আগ্রহী হচ্ছে ।
সারাবিশ্বে যতগুলো উন্নত দেশ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কানাডা । এখানে বাংলাদেশের মানুষ উন্নত জীবন যাপন এবং মোটা অংক অর্থ উপার্জনের জন্য যেতে খুবই আগ্রহী । মূলত কানাডার টাকার মান অনেক বেশি হওয়াতে কম পরিশ্রম করে প্রতিমাসে মোটা অংকের অর্থ উপার্জন করা যায় । আর এই কারণে আমাদের কানাডা যাওয়ার সবার ইচ্ছা ।
আপনি যদি ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন কানাডা যাবেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে । তাই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন । তাহলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে আপনার বিস্তারিত ধারণা হয়ে যাবে । তো আর দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক ।
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
বর্তমানে কানাডাতে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা পাওয়া যায় । যেমনঃ কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা, কানাডা টুরিস্ট ভিসা, কানাডা কোম্পানি ভিসা, কানাডা জব ভিসা এবং কানাডা রেস্টুরেন্ট ভিসা । এই সকল ভিসা ছাড়া আরও অসংখ্য ভিসা রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি বাংলাদেশ থেকে খুব সহজে কানাডা যেতে পারবেন ।
আমাদের মূল উদ্দেশ্য যদি হয় কানাডায় গিয়ে অর্থ উপার্জন করার তাহলে আমাদের কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দরকার । এই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বলতে বোঝানো হয় কাজের ভিসাকে । আপনার ইচ্ছা থাকে যদি কানাডায় যাওয়ার পর মোটা অংকের অর্থ উপার্জন করবেন তাহলে আমি সাজেশন দিচ্ছি অন্য কোন ভিসা না নিয়ে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিন ।
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে কি কি লাগে
আপনি যদি কানাডার ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে চান তাহলে বেশ কিছু কাগজপত্র সবার প্রথমে সংগ্রহ করতে হবে । অতঃপর সেই সকল কাগজপত্র ব্যবহার করে আপনি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন । এখন কি কি কাগজপত্র থাকলে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করা যায় তা নিচে তুলে ধরা হলো ।
- বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে
- পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- মেডিকেল রিপোর্ট ফটোকপি
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ভেরিফিকেশন
- কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট
- ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা থাকতে হবে
- ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট দিতে হবে
আপনি যদি কখনো কানাডার ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে চান তাহলে সবার প্রথমে উপরের উল্লেখিত কাগজপত্র সংগ্রহ করবেন । অতঃপর এই সকল কাগজপত্র কোন এজেন্সি অথবা দালালের কাছে জমা দিবেন অথবা চাইলে আপনি নিজে থেকেই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন ।
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার খরচ কত
বর্তমানে কানাডাতে আপনি সরকারিভাবে এবং বেসরকারিভাবে দুই উপায়ে যেতে পারবেন । যদি সরকারিভাবে কানাড়া যান তাহলে কম খরচে যেতে পারবেন । তবে সরকারিভাবে কানাডা যেতে হলে অবশ্যই আপনাকে সরকারি সার্কুলারে বিজয়ী হতে হবে । প্রতিবছর বাংলাদেশ সরকার কানাডা যাওয়ার জন্য বিভিন্ন সার্কুলার ছেড়ে থাকে ।
আরও পড়ুন ➝ কাতার রেস্টুরেন্ট ভিসা বেতন কত
আপনি ঐ সকল সার্কুলার এ প্রতিযোগিতা করবেন । অতঃপর সেখানে যদি বিজয়ী লাভ করতে পারেন তাহলে অর্ধেক খরচে কানাডা যাওয়ার সুযোগ পাবেন । সাধারণভাবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার খরচ ১০ লাখ থেকে ১২ লাখ টাকা । কিন্তু আপনি যদি সরকারি ভাবে কানাডা যান সে ক্ষেত্রে আপনার খরচ হতে পারে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা । তাহলে বুঝতেই পারছেন কত কম খরচে সেখানে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন ।
কিন্তু আপনি যদি সরকারিভাবে কানাডা যেতে চান টাকা যেহেতু কম লাগছে আপনার ভাগ্যও সে রকম ভালো থাকতে হবে । অবশ্যই আপনাকে সরকারি সার্কুলারে বিজয়ী লাভ করতে হবে । তবেই আপনি কম খরচে কানাডা যেতে পারবেন । তাছাড়া আপনার পরিবারের কেউ যদি কানাডা থাকে তাহলে তার রেফারেন্সে কম খরচে যেতে পারবেন ।
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার বেতন কত
আমাদের উদ্দেশ্য যদি হয় কানাডায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে উচ্চ বেতনে অর্থ উপার্জন করা তাহলে অবশ্যই জানা দরকার ওয়ার্ক পারমিট ভিসার বেতন কত টাকা হয় । এর কারণ হচ্ছে আমরা কানাডায় যদি ১০ লাখ থেকে .১২ লাখ টাকা খরচ করে যাই আর যদি বেতন কম ধরা হয় তাহলে সেখানে গিয়ে আমাদের কোন লাভ নেই ।
আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে কানাডা যান তাহলে শুরু থেকে আপনার বেতন ধরা হবে ৯০০ কানাডিয়ান ডলার থেকে ১০০০ কানাডিয়ান ডলার । এই টাকাকে বাংলাদেশী টাকায় রূপান্তর করলে গিয়ে দাঁড়ায় ৭০ হাজার টাকা থেকে ৮০ হাজার টাকা । তাহলে বুঝতেই পারছেন শুরুতেই যদি আপনি কোন অভিজ্ঞতা ছাড়া ৭০ হাজার টাকা থেকে ৮০ হাজার টাকা উপার্জন করতে পারেন ।
কিন্তু আপনি যদি কোন বিষয়ে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হন তাহলে শুরুতেই ১২০০ কানাডিয়ান ডলার থেকে ১৫০০ কানাডিয়ান ডলার পাবেন । এক্ষেত্রে ক্যালকুলেটর করলে আমরা পাই ৯৬ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা । তাহলে বুঝতেই পারছেন শুধুমাত্র অভিজ্ঞতা থাকলেই শুরু থেকেই আপনি এত বেশি পরিমাণে অর্থ উপার্জন করতে পারছেন ।
আমাদের শেষ কথা
সম্মানিত পাঠক, আজকের পোস্টে আমরা সারা বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ও উন্নত দেশ কানাডাতে যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে, খরচ কত এবং বেতন কত এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি । আপনি যদি কখনো কানাডা যেতে আগ্রহী হন তাহলে সবার প্রথমে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তৈরি করুন । অতঃপর সেই ভিসা সংগ্রহ করে কানাডায় গিয়ে মোটা অংকের অর্থ উপার্জন করুন ।
আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার খুবই ভালো লেগেছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আপনি যদি সামান্যতম উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব ও ফ্যামিলিতে শেয়ার করবেন । তাছাড়া এই পোস্ট সম্পর্কে যদি আপনার কোন মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন । ধন্যবাদ ।