অর্থনৈতিক অবস্থার দিক দিয়ে সারা বিশ্বে কানাডার অবস্থান দশম । মূলত কানাডার জনগণের মাথাপিছু আয় এর উপর ভিত্তি করে এখানকার মুদ্রার মান অনেক বেশি হয় । আপনি যদি খেয়াল করেন তাহলে দেখতে পাবেন কানাডার সকল মানুষ কোন না কোন জব বা চাকরি করছে । তাই আমরাও চাই কানাডা জব ভিসার খরচ কত টাকা হবে তা সম্পর্কে জানতে ।
বর্তমানে বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ কানাডাতে বিভিন্ন কোম্পানিতে জব করছে । আপনি যদি একজন শিক্ষিত ও স্মার্ট ব্যক্তি হয়ে থাকেন তাহলে বিভিন্ন কোম্পানিতে কানাডায় গিয়ে চাকরি করতে পারেন । এক্ষেত্রে আপনি শুরুতে উচ্চ বেতন চাকরি করতে পারবেন এবং উন্নত জীবন যাপন করতে পারবেন ।
আরও পড়ুন ➝ লুক্সেমবার্গ যেতে কত টাকা লাগে
আমরা অনেকেই শিক্ষিত হয়ে এদিক-সেদিক বেকার ঘুরে বেড়াচ্ছি । সরকারি চাকরিত দূরের কথা বেসরকারি কোন ভালো চাকরিও পাচ্ছিনা । এর ফলে দিন দিন ডিপ্রেশনে চলে যাচ্ছি এবং নিজের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছি । তাই আপনি যদি নিজের সফল ও প্রতিষ্ঠিত ক্যারিয়ার করতে চান তাহলে কানাডা আসতে পারেন ।
এখন আমরা কানাডা জব ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব । আপনি যদি ইতিমধ্যে এই বিষয় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হন তাহলে পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন । তো আর দেরি না করে চলুন আমাদের মূল আলোচনায় শুরু করা যাক ।
কানাডা জব ভিসার খরচ কত
আমরা যদি কখনো কানাডায় গিয়ে কোন কোম্পানিতে জব করতে চাই তাহলে অবশ্যই জানা উচিত বর্তমানে কানাডা জব ভিসার খরচ কত । সাধারণত কানাডা জব ভিসার মেয়াদ হয়ে থাকে ১ বছর থেকে ২ বছর পর্যন্ত । অতঃপর আপনাকে নতুন করে কানাডা জব ভিসার রিনিউ করতে হবে ।
সাধারণত কানাডা জব ভিসার খরচ বেশ কয়েকটি মাধ্যমের উপর ভিত্তি করে বলা যায় । আপনার পরিচিত কোন ব্যক্তি যদি কানাডা অবস্থান করে থাকে তাহলে উনার রেফারেন্স কানাডা জব ভিসা পেতে পারেন । তাছাড়া আপনি চাইলে সরকারিভাবে কানাডা জব ভিসা পেতে পারেন ।
তবে আমরা বেশিরভাগ মানুষ বিভিন্ন এজেন্সি অথবা দালালের মাধ্যমে কানাডা জব ভিসা সংগ্রহ করে থাকি । আপনি যদি কোন এজেন্সি অথবা দালালের মাধ্যমে কানাডার জব ভিসা করতে চান তাহলে আপনার খরচ হবে সর্বনিম্ন ৭ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত ।
আরও পড়ুন ➝ ফ্রান্স যেতে কত টাকা লাগে
কিন্তু আপনার পরিচিত ব্যক্তি অথবা সরকারিভাবে কানাডা জব ভিসা পেলে খরচ তুলনামূলক কম হবে । তবে আমাদের হাতে যদি অন্য কোন উপায় না থাকে তাহলে অবশ্যই কোনো এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে কানাডা যাওয়ার চেষ্টা করব / তবে এজেন্সি অথবা দালাল বাছাই করার পূর্বে ১০০% বিশ্বস্ত যাচাই করুন ।
কানাডা জব ভিসা পেতে কি কি লাগে
আমরা যদি কানাডা জব ভিসা পেতে চাই তাহলে বেশ কিছু কাগজপত্র প্রথমে সংগ্রহ করতে হবে । এখন আমরা ঐ সকল কাগজপত্র সম্পর্কে জানব যেগুলো থাকলে আপনি কানাডা জব ভিসা পেতে পারেন । আপনাদের সুবিধার্থে নিচে তা তুলে ধরা হলো ।
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
- সম্পূর্ণ বৈধ বাংলাদেশি পাসপোর্ট
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
- মেডিকেল পরীক্ষার সার্টিফিকেট
- কোম্পানির জব অফার লেটার
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট ফটোকপি
আপাতত উপরে উল্লেখ করা কাগজ থাকলে আপনি কানাডা জব ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন । আপনি যখন কানাডার জব ভিসার আবেদন করবেন সেই আবেদন কমপ্লিট করার জন্য অবশ্যই কানাডা জব ভিসা আবেদন ফি দিতে হবে ।
কানাডা জব ভিসা আবেদনের নিয়ম
আমরা যদি কখনো কানাডা জব ভিসা পেতে চাই আমাদের সবার প্রথমে কানাডার কোনো না কোনো কোম্পানির জব অফার লেটার পেতে হবে । আর তার জন্য অবশ্যই আমাদের ওই কোম্পানিতে আবেদন করতে হবে । এখন কিভাবে কানাডা জব ভিসার আবেদন করবেন তা নিচে স্টেপ বাই স্টেপ তুলে ধরা হলো ।
- প্রথমে কানাডা জব বিষয়ক ওয়েবসাইট https://www.jobbank.gc.ca/home ভিজিট করুন ।
- এখন আপনাকে সম্পূর্ণ সঠিক ও সত্য তথ্যের উপর ভিত্তি করে একটি প্রোফাইল তৈরি করতে হবে ।
- সফলভাবে প্রোফাইল তৈরি করার পর ওয়েবসাইট থেকে Search বাটনে ক্লিক করে বিভিন্ন জব খুঁজে বের করতে হবে ।
- তারপর আপনার পছন্দের জব সিলেক্ট করে how to apply বাটনে ক্লিক করে ওই জবের জন্য আবেদন করতে হবে ।
আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্য, ইংরেজি ভাষার দক্ষতা, অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্র ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের উপর ভিত্তি করে আপনি যে কোম্পানিতে জবের জন্য আবেদন করেছেন তারা আপনার তথ্য যাচাই বাছাই করবে । সবকিছু ঠিক থাকলে আপনার জবের আবেদন অনুমোদন করে দিবে ।
কানাডা জব ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা
আপনি যদি কখনো কানাডা জব ভিসা পেতে চান তাহলে অবশ্যই সেই জব ভিসার যোগ্যতা পূরণ করতে হবে । অন্যথায় আপনি কিন্তু কখনোই কানাডা জব ভিসা পাবেন না । এখন আমরা কি কি যোগ্যতা থাকলে কানাডা জব ভিসা পাওয়া যায় তা সম্পর্কে জানব ।
প্রথমে আপনাকে কানাডার জব বিষয়ক অফিশিয়াল ওয়েবসাইট https://www.jobbank.gc.ca/home ভিজিট করতে হবে । তারপর নিজের একটি প্রোফাইল তৈরি করে বিভিন্ন কোম্পানিতে জবের জন্য আবেদন করতে হবে ।
আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট কাজের, অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট এবং ইংরেজি ভাষার দক্ষতা ইত্যাদি বিষয়ক তথ্য দিয়ে জবের জন্য আবেদন করতে হবে ।
অতঃপর কানাডা জব ভিসা পাওয়ার জন্য আপনার আবেদনকৃত কোন না কোন কোম্পানি থেকে অবশ্যই আপনাকে জবের অফার লেটার পেতে হবে । অন্যথায় আপনি কানাডা জব ভিসা পাবেন না ।
তাছাড়া কানাডা জব ভিসা পাওয়ার অন্যতম শর্ত হচ্ছে আপনার বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বছর এবং সর্বোচ্চ ৪৫ বছর হতে হবে । অন্যথায় আপনি এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না ।
কানাডা জব ক্যাটাগরি সমূহ
বর্তমানে কানাডাতে বিভিন্ন ক্যাটাগরির উপর জব ভিসা পাওয়া যায় । আমরা যদি ওই সকল জব ক্যাটাগরির নাম সম্পর্কে জানি তাহলে সেখান থেকে পছন্দের জব বাছাই করতে পারব এবং সেই জব ভিসার উপর আবেদন করতে পারবো । আপনাদের সুবিধার্থে নিচে কানাডা জব ক্যাটাগরি সমূহ তুলে ধরা হলো ।
- কৃষি কাজ
- রেস্টুরেন্ট
- প্লাম্বার
- ক্লিনার
- ইলেকট্রিক্যাল
- কন্সট্রাকশন
- ড্রাইভিং
- মেকানিক্যাল
- ডেলিভারি
এখানে উল্লেখিত জব ক্যাটাগরি বর্তমানে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে কানাডাতে ব্যবহৃত হচ্ছে । আপনি যদি উল্লেখিত যেকোনো একটি কাজে পারদর্শী হন তাহলে খুব সহজে বিভিন্ন কোম্পানিতে কানাডা জব ভিসা পেতে পারেন এবং সেখানে গিয়ে উচ্চ বেতনে জব করতে পারেন ।
আমাদের শেষ কথা
সম্মানিত পাঠক, আজকের পোস্টটিতে আমরা কানাডা জব ভিসার খরচ কত, ভিসা পেতে কি কি লাগে, ভিসার যোগ্যতা ও বিভিন্ন জব ক্যাটাগরি সম্পর্কে জেনেছি । আপনি যদি কখনো কানাডা জব ভিসা পেতে চান তাহলে আমার দেখানো তথ্যগুলো ফলো করুন । আশা করি আপনি খুব সহজে কানাডা জব ভিসা পেয়ে যাবেন ।
আশা করি আমার এই পোষ্টটি পড়ে আপনার খুবই ভালো লেগেছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে আপনি যদি সামান্যতম উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আমার এই পোস্ট লিখতে যতটুকু কষ্ট হয়েছে তা সার্থক হবে বলে আমি মনে করি । তাছাড়া আমার এই পোস্ট সম্পর্কে যদি আপনার কোন মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানান । ধন্যবাদ ।