পূর্ব এশিয়ার উন্নত ও সম্ভ্রান্ত একটি দ্বীপ দেশের নাম হচ্ছে জাপান । এই দেশে বর্তমানে বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত রয়েছে । কেউ কেউ পড়াশোনা করছে, কেউ চাকরি করছে আবার কেউ ব্যবসা করছে । আপনি যদি জাপানে গিয়ে কাজ করতে চান তাহলে জাপান যেতে কত টাকা লাগে এই বিষয়ে জানতে হবে ।
বর্তমানে আমাদের দেশের পরিস্থিতি খুব সুবিধার বলে মনে হয় না । দেশের অসংখ্য তরুণ ও তরুণী উচ্চ শিক্ষিত হওয়া শর্তেও ভালো কোন চাকরি পাচ্ছে না । সরকারি চাকরির কথা বাদই দিলাম বেসরকারি কোন চাকরির সুযোগ নেই । তাই আমাদের সবার আগ্রহ বিদেশ গিয়ে অর্থ উপার্জন করা ।
দেখুন আপনি যদি উচ্চ শিক্ষিত হয়ে দেশে থেকে কিছু একটা না করতে পারেন তাহলে আমার মনে হয় ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আপনার বিদেশ যাওয়া উচিত । এতে দেখা যাবে আপনি বিদেশে গিয়ে মোটা অংকের অর্থ উপার্জন করতে পারবেন এবং নিজের সফল ও প্রতিষ্ঠিত ক্যারিয়ার তৈরি করতে পারবেন ।
আরও পড়ুন ➝ সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায়
বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষ সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে । তবে বেশিরভাগ মানুষ এশিয়ার দেশ যেমনঃ কাতার, কুয়েত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান এবং জাপানে রয়েছে । এই সকল দেশ গুলো থেকে আপনি জাপানে গিয়ে কাজ করে বিপুল পরিমাণে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন ।
আজকের পোস্টটিতে আমরা জাপান যেতে কত টাকা লাগে সহ আরো বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানব । আপনি যদি ইতিমধ্যে জাপান যেতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে । তাই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন ।
জাপান যেতে কত টাকা লাগে
আপনি যদি কখনো জাপান গিয়ে কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে চান তাহলে অবশ্যই জাপানের ভিসা তৈরি করতে হবে । মূলত জাপানে কাজ করার জন্য যে ভিসা পাওয়া যায় তাকে বলা হয় জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা । তাই আমরা জাপান যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই এই ভিসা তৈরি করে নেব ।
আমরা সাধারণত জাপান কাজের ভিসা বা ওয়ার্ক ভিসার খরচের পরিমাণ জানতে পারি আমরা কোন মাধ্যমের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ থেকে জাপান যাবো । বর্তমানে জাপান যাওয়ার জন্য দুইটি উপায় রয়েছে । প্রথমটি সরকারি ভাবে জাপান যাওয়া এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে বেসরকারিভাবে জাপান যাওয়া । আর এই দুই ধরনের ক্ষেত্রে খরচের পরিমাণ আলাদা আলাদা হয়ে থাকে ।
আপনি যদি সরকারিভাবে জাপান যান তাহলে খরচ হতেও পারে ৫ লাখ টাকা থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত । আবার আপনি যদি বেসরকারিভাবে জাপান যান তাহলে আপনার খরচ হতে পারে ৯ লাখ টাকা থেকে ১১ লাখ টাকা পর্যন্ত । তবে বেসরকারিভাবে জাপান যাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই বিশ্বস্ত এজেন্সি খুঁজে বের করুন না হলে খরচের পরিমাণ আরো বাড়তে পারে ।
জাপান যেতে কি কি লাগে
আমরা যদি বাংলাদেশ থেকে জাপান যেতে চাই তাহলে প্রথমে জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বা জাপান কাজের ভিসা তৈরি করতে হবে । আর এই ভিসা তৈরি করার জন্য আমাদের প্রথমে আবেদন করতে হবে । তাই বেশ কিছু কাগজপত্র শুরুতেই জোগাড় করে নিতে হবে । এখন নিচে তুলে ধরা হলো কি কি কাগজপত্র থাকলে জাপান যাওয়া যায় ।
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
- বৈধ বাংলাদেশী পাসপোর্ট
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ভেরিফিকেশন
- মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
- জাপানি ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট
- ব্যাংক স্টেটমেন্টের ফটোকপি
আপনি যদি কখনো জাপানের কাজের ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিতে চান তাহলে প্রথমে উল্লেখিত কাগজপত্র সংগ্রহ করুন । অতঃপর বিশ্বস্ত কোন এজেন্সি বা দালালের কাছে আপনার কাগজপত্র জমা দিন । আশা করি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন ।
জাপানে সর্বনিম্ন বেতন কত টাকা
আমরা যদি কখনো বাংলাদেশ থেকে জাপান কাজ করতে যাই তাহলে বেতন কত টাকা ধরা হবে তা যাচাই করে নিতে হবে । ধরুন আপনি ৯ লাখ টাকার বা ১০ লাখ টাকা খরচ করে জাপান গেলেন । কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখলেন আপনার বেতন খুবই অল্প । তাহলে আপনার ডিপ্রেশনে চলে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকবেনা । তাই আমরা অবশ্যই জাপানের সর্বনিম্ন বেতন কত তা জেনে নিব ।
আরও পড়ুন ➝ কাতার রেস্টুরেন্ট ভিসা বেতন কত
জাপানের সর্বনিম্ন বেতন মূলত বিভিন্ন চাকরির ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে ধরা হয়ে থাকে । তবে আমরা বিভিন্ন অনলাইন ট্রাস্টেড সোর্স এর তথ্য অনুসারে জানতে পেরেছি জাপানের সর্বনিম্ন বেতন ৯০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত । তবে কিছু কিছু চাকরিতে অতিরিক্ত ডিউটি করার সুযোগ রয়েছে ।
আপনি যদি অতিরিক্ত ডিউটি বা ওভারটাই ম করতে অভ্যস্ত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার বেতনের পরিমাণ ১ লাখ টাকা থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে । তবে এই বেতনের পরিমাণটা মূলত আপনার নতুন অবস্থায় টাকা ধরা হবে । তবে সময়ের সাথে সাথে ও কাজের অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে আপনার বেতন বাড়ানো হবে ।
জাপান যেতে কত বছর বয়স লাগে
আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে জাপান গিয়ে কাজ করা সম্পর্কে । আপনি যদি জাপানে গিয়ে কাজ করতে চান তাহলে অবশ্যই ১৮ বছরের ঊর্ধে হওয়া লাগবে । তাছাড়া আপনি যদি চিন্তা করেন আমি জাপানে গিয়ে পড়াশোনা করব তাহলেও কিন্তু আপনার ১৮ বছরের ঊর্ধে হওয়া লাগবে । তবে জাপানের টুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রম রয়েছে ।
আপনি যদি জাপান টুরিস্ট ভিসা নিয়ে যান তাহলে ১৮ বছরের নিম্নে হলেও যেতে পারবেন । এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার অভিভাবকের অনুমতি পত্র থাকা দরকার লাগবে । তবে আপনার সাথে যদি আপনার অভিভাবক জাপান টুরিস্ট ভিসা নিয়ে ভ্রমণ করতে যায় তাহলে কোন অনুমতি পত্রের দরকার হবে না ।
আমাদের শেষ কথা
সম্মানিত পাঠক, আজকের পোস্টে আমরা জাপান যেতে কত টাকা লাগে, কি কি কাগজপত্র লাগে ও কত বছর বয়স লাগে এই বিষয়ে সম্পর্কে আলোচনা করেছি । আপনি যদি কখনো জাপান যেতে আগ্রহী হন তাহলে প্রথমে উল্লেখিত তথ্যগুলো ফলো করুন । অতঃপর জাপান যাওয়ার চেষ্টা করুন ।
আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার খুবই ভালো লেগেছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আপনি যদি সামান্যতম উপকার পান তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব ও ফ্যামিলিতে পোস্টটি শেয়ার করুন । তাছাড়া আমার এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার যদি কোন মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন । ধন্যবাদ ।