আমাদের অনেক ভাই ও বোন ঢাকা টু চরফ্যাশন লঞ্চের সময়সূচী সম্পর্কে জানতে চান । আপনিও কি এই বিষয়ে জানতে আগ্রহী আছেন? আপনার উত্তরটি যদি হ্যাঁ হয় তাহলে সঠিক জায়গাতে এসেছেন । কারণ আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করব ঢাকা থেকে চরফ্যাশন লঞ্চের নাম, ভাড়ার তালিকা, সময়সূচী এবং টিকেট বুকিং সম্পর্কে ।
চরফ্যাশন হচ্ছে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলা যা ভোলা জেলার অন্তর্গত বরিশাল বিভাগে অবস্থিত । বর্তমানে চরফ্যাশন উপজেলার অনেক মানুষ ঢাকায় বসবাস করছে । কেউ কেউ চাকরি করছে আবার কেউ কেউ ব্যবসা করছে । এই সুবাদে আমাদের নিয়মিত ঢাকা টু চরফ্যাশন যাওয়া আসা করতে হয়
আমরা বেশিরভাগ সময় ঢাকা থেকে চরফ্যাশন যাওয়ার জন্য বাস অথবা মাইক্রো ব্যাবহার করি । কিন্তু আপনি চাইলে নদীপথে লঞ্চে ঢাকা টু চরফ্যাশন যাতায়াত করতে পারবেন । তাহলে অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন আমরা বাস অথবা মাইক্রো ব্যবহার না করে কেন নদীপথে লঞ্চে চলাচল করব? হ্যাঁ আপনার এই প্রশ্নটি খুবই যুক্তিসঙ্গত বলে আমি মনে করি ।
আমাদের বেশিরভাগ মানুষের হাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে টাকা থাকে না । কিন্তু আমরা চাই সঠিক সময়ে অল্প টাকা খরচ করে গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর জন্য । তাছাড়া অনেকে নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে খুবই পছন্দ করে । আপনি যদি অল্প টাকা খরচ করে এবং নদীর সৌন্দর্য উপভোগ দুটোই একসাথে করতে চান তাহলে অবশ্যই লঞ্চে চলাচল করুন ।
আরও পড়ুন ➝ সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায়
এখন আমরা ঢাকা টু চরফ্যাশন লঞ্চ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানবো । আপনি যদি এই বিষয়ে জানতে আগ্রহী হন তাহলে পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন । তো আর দেরি না করে চলুন আমাদের আজকের মূল আলোচনাতে যাওয়া যাক ।
ঢাকা টু চরফ্যাশন লঞ্চের নাম
ঢাকা থেকে চরফ্যাশন নদীপথে অসংখ্য লঞ্চ নিয়মিত চলাচল করছে । কিন্তু সকল লঞ্চ সমান সার্ভিস দেয় না সে সম্পর্কে আমরা জানি । এখন থেকে আমাদের জানা দরকার কোন লঞ্চ সার্ভিস ভালো দিচ্ছে এবং ভাড়াও তুলনামূলক কম নিচ্ছে । আপনাদের জন্য আমরা সেরা তিনটি লঞ্চ বাছাই করেছি । এখন সেই লঞ্চ গুলোর নাম নিম্নে উল্লেখ করা হলো ।
- এম. ভি. ফারহান ৫
- এম. ভি. কর্ণফুলী ১২
- এম. ভি. তাসরিফ ৪
এখানে উল্লেখ করা তিনটি লঞ্চ অত্যন্ত বিলাসবহুল এবং লঞ্চগুলোতে সম্পূর্ণ শিতা তাপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা রয়েছে । তাছাড়া এই লঞ্চগুলোতে উচ্চ আরামদায়ক সিটের ব্যবস্থা রয়েছে । আপনি যদি কখনো ঢাকা থেকে লঞ্চ ব্যবহার করে চরফ্যাশন যেতে চান তাহলে উপরোক্ত লঞ্চ ব্যবহার করে চলাচল করুন ।
ঢাকা টু চরফ্যাশন লঞ্চের সময়সূচী
আমরা যদি ঢাকা থেকে চরফ্যাশন লঞ্চে চলাচল করতে চাই তাহলে অবশ্যই লঞ্চের সময়সূচি সম্পর্কে জানার দরকার হবে । আমরা যদি লঞ্চের সময়সূচি সম্পর্কে অবগত হয় তাহলে সঠিক সময় লঞ্চঘাটে যেতে পারবো এবং লঞ্চ ধরে সময়মতো গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারব । এখন আমরা তিনটি লঞ্চের সময়সূচি সম্পর্কে জানব ।
লঞ্চের নাম | ছাড়ার সময় | পৌঁছার সময় |
এম. ভি. ফারহান ৫ | সন্ধ্যা ০৭ঃ০০ টা | সকাল ০৭ঃ০০ টা |
এম. ভি. কর্ণফুলী ১২ | সন্ধ্যা ০৭ঃ০০ টা | সকাল ০৭ঃ০০ টা |
এম. ভি. তাসরিফ ৪ | রাত ০৮ঃ৩০ মিনিটে | সকাল ০৬ঃ০০ টা |
এম. ভি. ফারহান ৫ – ঢাকা থেকে সন্ধ্যা ০৭ঃ০০ টার সময় এই লঞ্চটি যাত্রা শুরু করে এবং চরফ্যাশন লঞ্চঘাটে গিয়ে পৌঁছাই সকাল ০৭ঃ০০ টার সময় ।
এম. ভি. কর্ণফুলী ১২ – এই লঞ্চটি সন্ধ্যা ০৭ঃ০০ টার সময় ঢাকা থেকে ছাড়ে এবং সকাল ০৭ঃ০০ টার সময় চরফ্যাশন গিয়ে পৌঁছায় ।
এম. ভি. তাসরিফ ৪ – ঢাকা থেকে এই লঞ্চটি রাত ০৮ঃ৩০ মিনিটে যাত্রা শুরু করে এবং সকাল ০৬ঃ০০ টার সময় চরফ্যাশন এলাকায় পৌঁছায় ।
এখানে উল্লেখ করা সবগুলো লঞ্চের সময়সূচী সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী তুলে ধরা হয়েছে তবে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ চাইলে এই সময়সূচী যে কোন সময় পরিবর্তন করতে পারে তাই সর্বশেষ আপডেটের জন্য আপনি লঞ্চঘাটে যোগাযোগ করতে পারেন
ঢাকা টু চরফ্যাশন লঞ্চ ভাড়া
ঢাকা থেকে চরফ্যাশন লঞ্চের ভাড়া সাধারণত সিটের ক্যাটাগরি উপর ভিত্তি করে হয়ে থাকে । এখন আপনি বিভিন্ন ক্যাটাগরির সিট বুকিং করার সুযোগ পাবেন । আপনার হাতে যদি কম টাকা থাকে তাহলে কম দামি সিট বুকিং করতে পারবেন । যদি বেশি টাকা থাকে তাহলে বেশি দামি সিট বুকিং করতে পারবেন । এখন কোন সিটের ভাড়া কত টাকা তা নিম্ন তুলে ধরা হলো ।
সিটের নাম | সিটের ভাড়া |
ভিআইপি কেবিন | ৫০০০ টাকা |
সেমি ভিআইপি কেবিন | ৪০০০ টাকা |
ফ্যামিলি এসি কেবিন | ২৫০০ টাকা |
ডাবল এসি কেবিন | ১৮০০ টাকা |
ডাবল নন এসি কেবিন | ১৬০০ টাকা |
সিঙ্গেল এসি কেবিন | ১০০০ টাকা |
ঢাকা হতে চরফ্যাশন লঞ্চের ভাড়া হচ্ছে যথাক্রমে ভিআইপি কেবিন ৫০০০ টাকা, সেমি ভিআইপি কেবিন ৪০০০ টাকা, ফ্যামিলি এসি কেবিন ২৫০০ টাকা, ডাবল এসি কেবিন ১৮০০ টাকা, ডাবল নন এসি কেবিন ১৬০০ টাকা এবং সিঙ্গেল এসি কেবিন ১০০০ টাকা ।
আরও পড়ুন ➝ লুক্সেমবার্গ যেতে কত টাকা লাগে ও বেতন কত
উপরে উল্লেখ করা সবগুলো সিট থেকে আপনার পছন্দের সিট বাছাই করুন । তারপর সেই সিটের টিকিট কাটুন এবং ঢাকা থেকে ভোলার চরফ্যাশন লঞ্চে চলাচল করুন । আপনি যদি উচ্চ আরামদায়ক সিট ব্যবহার চলাচল করতে চান তাহলে অবশ্যই ভিআইপি অথবা এসি কেবিনে টিকিট কাটুন ।
ঢাকা টু চরফ্যাশন লঞ্চ টিকেট বুকিং
আমরা যদি ঢাকা টু চরফ্যাশন লঞ্চের অগ্রিম টিকিট বুকিং করতে চাই তাহলে লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার দরকার হয় । প্রতিটি লঞ্চের গ্রাহকদের যোগাযোগ করার জন্য মোবাইল নাম্বার দেওয়া রয়েছে । এখন আমরা উপরে উল্লেখ করা তিনটি লঞ্চের টিকিট বুকিং করার নাম্বার উল্লেখ করা হলো ।
লঞ্চ নাম | মোবাইল নাম্বার |
এম. ভি. ফারহান ৫ (ঢাকা অফিস) | ০১৭৯৮-২৮৮৬৯২ |
এম. ভি. ফারহান ৫ (বেতুয়া অফিস) | ০১৭৯৯-১০৬৭৩৬ |
এম. ভি. কর্ণফুলী ১২ (ঢাকা অফিস) | ০১৭৭৯-৯৭২৬৪০ |
এম. ভি. কর্ণফুলী ১২ (বেতুয়া অফিস) | ০১৭৮৬-৭৬৩০৩৬ |
এম. ভি. তাসরিফ ৪ (ঢাকা অফিস) | ০১৭৩২০৭৩৯৬৩ |
এম. ভি. তাসরিফ ৪ (বেতুয়া অফিস) | ০১৭৩০৬৭৪৮২৫ |
আপনি যদি কখনো ঢাকা থেকে লঞ্চে ভোলার চরফ্যাশন এলাকায় যেতে চান তাহলে উপরে উল্লেখ করা নাম্বারগুলোতে কল করুন । তাছাড়া যদি কখনো লঞ্চের সময়সূচি পরিবর্তন হয় তখন এই নাম্বারগুলোতে কল করে নতুন সময়সূচী সম্পর্কে জানতে পারবেন ।
আমাদের শেষ কথা
ঢাকা হতে চরফ্যাশন লঞ্চে নদী পথে চলাচল করার জন্য সেরা তিনটি লঞ্চের নাম, সময়সূচী, ভাড়া তালিকা এবং টিকিট বুকিং সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি । আপনি যদি কখনো ঢাকা টু চরফ্যাশন নদীপথে লঞ্চে চলাচল করতে চান তাহলে যে কোন একটি লঞ্চ বাছাই করুন । তারপর সেই লঞ্চের পছন্দমত টিকিট কাটুন এবং আপনার যাত্রা সম্পন্ন করুন ।
সুপ্রিয় পাঠক, আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার খুবই ভালো লেগেছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আপনি যদি সামান্যতম উপকার পান তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব ও ফ্যামিলিতে শেয়ার করবেন । তাছাড়া আমার এই পোস্ট সম্পর্কে যদি আপনার কোন ব্যক্তিগত মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন । ধন্যবাদ