বর্তমানে ভৈরবের অসংখ্য মানুষ ঢাকাতে অবস্থান করছেন । কেউ কেউ পড়াশোনা করছেন, কেউ কেউ চাকরি করছেন আবার কেউ কেউ ব্যবসা করছেন । অতঃপর দিন শেষে ঢাকা থেকে আমাদের কাঙ্খিত গন্তব্যস্থল ভৈরবে যাওয়ার দরকার হয় । তাই আমরা অনেকে ঢাকা টু ভৈরব ট্রেনের সময়সূচী সম্পর্কে জানতে চাই ।
আমরা সাধারণত ঢাকা থেকে ভৈরব যাতায়াত করার জন্য বাস অথবা মাইক্রো ব্যবহার করি । কিন্তু অনেকের মনে প্রশ্ন হতে পারে ঢাকা টু ভৈরব যাওয়ার জন্য আমরা কেন ট্রেন ব্যবহার করব । আপনার হাতের বাজেট যদি কম হয় এবং যদি চান নিরাপদে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে তাহলে আমার মতে ট্রেন করতে যাতায়াত করা ভালো ।
আরও পড়ুন ➝ সরকারিভাবে জাপান যাওয়ার উপায়
তাছাড়া ট্রেনে চলার সুবিধা হচ্ছে আপনি রাস্তাঘাটে যেমন জ্যাম থাকবে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে হবে ট্রেনে কোন জ্যাম নেই এবং অপেক্ষা করার দরকারও নেই । তাই আপনি সঠিক সময় আপনার গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পারছেন । তাছাড়া বাস বা মাইক্রো থেকে ট্রেনের ভাড়াও সাধারণত তুলনামূলক অনেক কম হয় ।
এখন আমরা জানবো ঢাকা থেকে ভৈরব ট্রেনের যাতায়াত সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য । আপনি যদি এই বিষয়ে জানতে আগ্রহী হন তাহলে পোস্টটি আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে । তাই মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পোস্টটি পড়তে থাকুন । তো আর দেরি না করে চলুন আমাদের মূল আলোচনায় যাওয়া যাক ।
ঢাকা টু ভৈরব কোন কোন ট্রেন চলে
আমরা যদি কখনো ঢাকা থেকে ভৈরব ট্রেনে চলাচল করতে চাই তাহলে অবশ্যই জানা উচিত কোন কোন ট্রেন নিয়মিত চলাচল করছে । তাহলে আমরা সেখান থেকে পছন্দের ট্রেন বাছাই করতে পারব এবং ওই ট্রেনের টিকিট কেটে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারবো । এখন নিম্নে ঢাকা ভৈরব রুটে চলাচলকারী ট্রেনগুলোর নাম তুলে ধরা হলো ।
- মহানগর প্রভাতি
- পারাবত এক্সপ্রেস
- মহানগর এক্সপ্রেস
- এগারো সিন্ধুর প্রভাতী
- উপবন এক্সপ্রেস
- তূর্ণা
- এগারো সিন্ধুর গোধূলী
- কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস
- চট্টলা এক্সপ্রেস
এখানে যতগুলো ট্রেনের নাম তুলে ধরা হয়েছে সবগুলো অত্যন্ত বিলাসবহুল এবং প্রতিটি ট্রেনে রয়েছে সম্পূর্ণ সীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা । তাছাড়া প্রতিটি ট্রেনে রয়েছে উচ্চ আরামদায়ক সিটের ব্যবস্থা । তাই আপনি চাইলে এখান থেকে যেকোনো একটি ট্রেন ব্যবহার করে ঢাকা থেকে ভৈরব চলাচল করতে পারেন ।
ঢাকা টু ভৈরব ট্রেনের সময়সূচী
আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি বেশ কিছু ট্রেনের নাম যেগুলো নিয়মিত ঢাকা থেকে ভৈরব চলাচল করছে । এখন আমরা ওই সকল ট্রেনগুলোর সময়সূচী সম্পর্কে জানব । তাহলেই আমরা সময়মত স্টেশনে যেতে পারবো এবং পছন্দের ট্রেন ধরে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারবো । এখন নিচের ঢাকা টু ভৈরব ট্রেনের সময়সূচী তুলে ধরা হলো ।
ট্রেনের নাম | বন্ধের নাম | ছাড়ায় সময় | পৌছার সময় |
মহানগর প্রভাতি | নাই | সকাল ০৭ঃ৪৫ | সকাল ০৯ঃ১৬ |
পারাবত এক্সপ্রেস | মঙ্গলবার | সকাল ০৬ঃ৩০ | সকাল ০৮ঃ০৩ |
মহানগর এক্সপ্রেস | রাবিবার | রাত ০৯ঃ২০ | রাত ১১ঃ০০ |
এগারো সিন্ধুর প্রভাতী | বুধবার | সকাল ০৭ঃ১৫ | সকাল ০৮ঃ৫৩ |
উপবন এক্সপ্রেস | বুধবার | রাত ১০ঃ০০ | রাত ১১ঃ৪০ |
তূর্ণা | নাই | রাত ১১ঃ১৫ | রাত ১২ঃ৩০ |
এগারো সিন্ধুর গোধূলী | নাই | সন্ধ্যা ০৬ঃ৪৫ | রাত ০৮ঃ৩০ |
কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস | শুক্রবার | সকাল ১০ঃ৩০ | দুপুর ১২ঃ১৫ |
চট্টলা এক্সপ্রেস | শুক্রবার | দুপুর ০১ঃ৪৫ | দুপুর ০৩ঃ৩০ |
মহানগর প্রভাতি – ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে সকাল ০৭ঃ৪৫ মিনিটে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে এবং ভৈরব রেল স্টেশনে গিয়ে পৌঁছাই সকাল ০৯ঃ১৬ মিনিটে । এই ট্রেনের সাপ্তাহিক কোন বন্ধের দিন নেই ।
পারাবত এক্সপ্রেস – সকাল ০৬ঃ৩০ মিনিটে ঢাকা থেকে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে এবং সকাল ০৮ঃ০৩ মিনিটে ভৈরব স্টেশনে গিয়ে পৌঁছায় । এই ট্রেনের সাপ্তাহিক বন্ধের দিন হচ্ছে মঙ্গলবার ।
মহানগর এক্সপ্রেস – রাত ০৯ঃ২০ মিনিটে ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে এবং রাত ১১ঃ০০ টার সময় ভৈরব রেল স্টেশনে গিয়ে পৌঁছায় । এই ট্রেনের সাপ্তাহিক বন্ধের দিন হচ্ছে রবিবার ।
এগারো সিন্ধুর প্রভাতী – সকাল ০৭ঃ১৫ মিনিটের ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে এবং সকাল ০৮ঃ৫৩ মিনিটে গন্তব্যস্থলে গিয়ে পৌঁছায় । এই ট্রেনের সাপ্তাহিক বন্ধের দিন হচ্ছে বুধবার ।
উপবন এক্সপ্রেস – ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে রাত ১০ঃ০০ টার সময় ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে এবং রাত ১১ঃ৪০ মিনিটে ভৈরব স্টেশনে গিয়ে পৌঁছায় । এই ট্রেনের সাপ্তাহিক বন্ধের দিনে হচ্ছে বুধবার ।
তূর্ণা – রাত ১১ঃ৫৫ মিনিটে ঢাকা থেকে এই ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে এবং ভৈরবে গিয়ে পৌঁছায় রাত ১২ঃ৩০ মিনিটে । এই ট্রেনের সাপ্তাহিক কোন বন্ধের দিন নেই ।
এগারো সিন্ধুর গোধূলী – সন্ধ্যা ০৬ঃ৪৫ মিনিটে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে এবং ভৈরব স্টেশনে গিয়ে পৌঁছায় রাত ০৮ঃ৩০ মিনিটে । এই ট্রেনের সাপ্তাহিক কোন বন্ধের দিন নেই ।
কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস – সকাল ১০ঃ৩০ মিনিটে ঢাকা থেকে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে এবং ভৈরব গিয়ে পৌঁছায় দুপুর ১২ঃ১৫ মিনিটে । এই ট্রেনের সাপ্তাহিক বন্ধের দিন হচ্ছে শুক্রবার ।
চট্টলা এক্সপ্রেস – দুপুর ০১ঃ৪৫ মিনিটে ঢাকা রেল স্টেশন থেকে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে এবং ভৈরব রেল স্টেশনে গিয়ে পৌঁছাই দুপুর ০৩ঃ৩০ মিনিটে । এই ট্রেনের সাপ্তাহিক বন্ধের দিন হচ্ছে শুক্রবার ।
আরও পড়ুন ➝ কম্বোডিয়া ভিসার দাম কত সর্বশেষ আপডেট
উপরে আলোচিত ঢাকা থেকে ভৈরব চলাচলকারী ট্রেনের সময়সূচী সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী বাংলাদেশ রেল মন্ত্রণালয় ওয়েবসাইট থেকে তুলে ধরা হয়েছে । তবে রেল মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ চাইলে এই সময়সূচি যে কোন সময় পরিবর্তন করতে পারে । তাই সর্বশেষ আপডেটের জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করুন ।
ঢাকা টু ভৈরব ট্রেনের বিরতি স্টেশন
আমরা ইতিমধ্যে ঢাকা থেকে ভৈরব ট্রেনের সময়সূচী সম্পর্কে জানতে পেরেছি । এখন উল্লেখিত ট্রেনগুলো ঢাকা থেকে ভৈরব রেল পথে চলাচলের সময় কয়েকটি স্থানে যাত্রা বিরতি দেয় । এখন আমরা ঐ সকল বিরতি স্টেশন গুলোর নাম জানব । নিচে তা তুলে ধরা হলো ।
- ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন
- নরসিংদী
- মেথিকান্দা
- ভৈরব বাজার জংশন
এখানে উল্লেখিত স্টেশনগুলোতে সাধারণত ঢাকা থেকে ভৈরব চলাচলকারী ট্রেন গুলো যাত্রা বিরতি দেয় । আপনি চাইলে উল্লেখিত স্টেশনে যাত্রা বিরতির সময় নামতে পারেন ।
ঢাকা টু ভৈরব ট্রেনের ভাড়া
সাধারণত ঢাকা টু ভৈরব ট্রেনের ভাড়া সিটের ধরনের উপর ভিত্তি করে হয়ে থাকে । এখানে আপনি বিভিন্ন ক্যাটাগরির সিট পাবেন । আপনার বাজেট ও চাহিদার উপর ভিত্তি করে কম দামি সিট থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ দামি সিট বুকিং করার সুযোগ রয়েছে । এখন ঢাকা টু ভৈরব কোন সিটের কত টাকা ভাড়া তুলে ধরা হলো ।
সিটের নাম | সিটের ভাড়া |
শোভন | ৮৫ টাকা |
শোভন চেয়ার | ১০৫ টাকা |
ফার্স্ট সিট | ১৩৫ টাকা |
ফার্স্ট বার্থ | ২০৫ টাকা |
স্নিগ্ধা | ১৯৬ টাকা |
এসি সিট | ২৩৬ টাকা |
এসি বার্থ | ৩৫১ টাকা |
ঢাকা টু ভৈরব ট্রেনের ভাড়া হচ্ছে যথাক্রমে শোভন ৮৫ টাকা, শোভন চেয়ার ১০৫ টাকা, ফার্স্ট সিট ১৩৫ টাকা, ফার্স্ট বার্থ ২০৫ টাকা, স্নিগ্ধা ১৯৬ টাকা, এসি সিট ২৩৬ টাকা এবং এসি বার্থ ৩৫১ টাকা ।
আরও পড়ুন ➝ লুক্সেমবার্গ যেতে কত টাকা লাগে ও বেতন কত
উল্লেখিত সবগুলো ট্রেনের ভাড়া সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী তুলে ধরা হয়েছে । তবে সময়ের সাথে সাথে ও চাহিদার উপর ভিত্তি করে রেল মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ চাইলে এই ভাড়া যে কোন সময় কিছুটা কম অথবা বেশি বেশি করতে পারে ।
আমাদের শেষ কথা
আজকের পোস্টে আমরা ঢাকা থেকে ভৈরব রেল পথে চলাচল করার জন্য সেরা কিছু ট্রেনের নাম সম্পর্কে জেনেছি । তাছাড়া ওই সকল ট্রেনগুলোর সময়সূচি, ভাড়ার তালিকা ও বিরতি স্টেশন সম্পর্কেও জেনেছি । আপনি চাইলে উল্লেখিত ট্রেনগুলো থেকে যে কোন একটি ট্রেন বাছাই করে ঢাকা থেকে ভৈরব চলাচল করতে পারেন ।
সম্মানিত পাঠক, আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার খুবই ভালো লেগেছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আপনি যদি সামান্যতম উপকার পান তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব ও ফ্যামিলিতে পোস্টটি শেয়ার করুন । তাছাড়া আমার এই পোস্ট সম্পর্কে যদি আপনার কোন মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানান । ধন্যবাদ ।