পশ্চিম এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উন্নত একটি দেশের নাম হচ্ছে তুরস্ক । যাকে আমরা সাধারণত তুর্কি নামে বেশি চিনে থাকি । বর্তমানে বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ তুরস্কে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন । তাই আমরা অনেকে তুরস্ক ভিসার দাম কত সম্পর্কে জানতে চাই ।
বর্তমানে তুরস্কের জনগণের মাথাপিছু আয় অনেক বেশি হওয়ায় এখানকার জীবনযাত্রার মান উন্নত । আপনি যদি কখনো তুরস্ককে যান তাহলে শুরুতে উচ্চ বেতনে কাজ করার সুযোগ রয়েছে । আর আমাদের বেশিরভাগ মানুষের স্বপ্ন হচ্ছে বিদেশ গিয়ে উন্নত জীবন যাপন করার পাশাপাশি উচ্চ বেতনে চাকরি করা ।
আরও পড়ুন >>> সরকারি ভাবে জাপান যাওয়ার উপায়
আপনি যদি একজন শিক্ষিত ও স্মার্ট ব্যক্তি হয়ে থাকেন এবং দেশে ভাল কোন চাকরি খুঁজে পাচ্ছেন না তাহলে অবশ্যই তুরস্কে চলে আসুন । কেননা আপনার মাথায় অন্যান্য দেশ যাওয়ার চিন্তা আসতে পারে । তবে স্বল্প টাকা খরচ করে শুরুতেই উচ্চ বেতনের চাকরি করার জন্য তুরস্কে আসা আপনার জন্য ভালো হবে ।
এখন আমরা তুরস্ক কাজের ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো । আপনি যদি এই বিষয় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হন তাহলে পোস্টটি আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে । তাই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খুব মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন । তো চলুন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক ।
তুরস্ক ভিসার দাম কত ২০২৪
আমরা জানি বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে তুরস্ক যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা পাওয়া যায় । এখানে আপনি কোন ক্যাটাগরির ভিসা নিবেন তার উপর ভিত্তি করে ভিসার দাম নির্ধারণ করা যাবে । বর্তমানে বেশি পরিমাণে বাংলাদেশ থেকে তুরস্ক যাওয়ার জন্য তিন ধরনের ভিসা ব্যবহার করা হয়ে থাকে ।
সেগুলো হচ্ছে যথাক্রমে তুরস্ক কাজের ভিসা, তুরস্ক স্টুডেন্ট ভিসা এবং তুরস্ক টুরিস্ট ভিসা । এই তিন ক্যাটাগরির ভিসার দাম আলাদা আলাদা রয়েছে । তাছাড়া আপনি ব্যক্তিগত ভাবে অথবা কোন এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে আবেদন করছেন তার ওপর ভিত্তি করে ভিসার দাম কম অথবা বেশি হতে পারে ।
বর্তমানে তুরস্ক ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম ৭ লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে । তাছাড়া তুরস্ক টুরিস্ট ভিসার দাম ২ লাখ টাকা থেকে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত । আবার তুরস্ক স্টুডেন্ট ভিসার দাম ৪ লাখ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে ।
তুরস্ক কাজের ভিসা ২০২৪
বর্তমানে তুরস্কে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা পাওয়া যায় । তবে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে আমরা বাংলাদেশিরা তুরস্ক কাজের ভিসা পেতে আগ্রহী । কারণ আমরা যদি তুরস্ক কাজের ভিসা নিয়ে সেখানে যাই তাহলে উচ্চ বেতনে চাকরি করার সুযোগ রয়েছে ।
তুরস্ক যেহেতু উন্নত ও সম্ভ্রান্ত একটি দেশ তাই এখানে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কলকারখানা, কনস্ট্রাকশন কোম্পানি, বিল্ডিং ও বাড়িঘর ইত্যাদি নির্মাণ হয়ে থাকে । আর সেই সকল প্রতিষ্ঠান তৈরি করার জন্য বিপুল পরিমাণ দক্ষ জনবল নিয়োগ করার দরকার হয় ।
মূলত এই সকল কার্য সম্পাদন করার জন্য প্রতিবছর তুরস্কর সরকার কর্তৃক অসংখ্য মানুষ নিয়োগ করা হয়ে থাকে । আপনি চাইলে তুরস্ক কাজের ভিসা নিয়ে নিজের সফল ও প্রতিষ্ঠিত একটি ক্যারিয়ার তৈরি করতে পারেন ।
তুরস্ক কাজের ভিসা পেতে কি কি লাগে
আমরা অনেকে জানতে চাই তুরস্ক কাজের ভিসা পেতে কি কি লাগতে পারে । আপনি যদি তুরস্ক কাজের ভিসা আবেদন করতে চান তাহলে প্রথমে বেশ কিছু কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে । এখন আমরা ওই সকল কাগজপত্র সম্পর্কে জানব । নিচে তা তুলে ধরা হলো ।
- সম্পূর্ণ বাংলাদেশী বৈধ পাসপোর্ট
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর ফটোকপি
- পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
- মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
- কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট
- তুরস্ক কাজের ভিসা আবেদন ফি প্রদান
আমরা যদি কখনো তুরস্ক কাজের ভিসা আবেদন করতে চাই তাহলে প্রথমে উল্লেখিত কাগজপত্র সংগ্রহ করবো । অতঃপর নিজে অথবা কোন ভিসা এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করার চেষ্টা করব ।
তুরস্ক ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম কত
আমরা যদি তুরস্ক গিয়ে কাজ করতে চাই তাহলে অবশ্যই তুরস্ক কাজের ভিসা বা তুরস্ক ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিতে হবে । আপনার পরিবারের কেউ যদি ইতিমধ্যে তুরস্ক অবস্থান করে থাকেন তাহলে উনার রেফারেন্সে সেখানে তুরস্ক ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিতে পারেন । এক্ষেত্রে আপনার খরচ তুলনামূলক কম হবে ।
আপনার পরিচিত কোন ব্যক্তি যদি তুরস্ক থাকে তাহলে আপনি ৭ লাখ টাকা থেকে ৮ লাখ টাকার মধ্যে তুরস্ক ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেয়ে যাবেন । কিন্তু কোন ভিসা এজেন্সি অথবা দালালের মাধ্যমে গেলে তুরস্ক ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম হবে 8 লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ।
কোন কোন সময় ভিসা এজেন্সি অথবা দালালের ক্ষেত্রে ১০ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত তুরস্ক ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম হতে পারে । তবে তুরস্ক ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই বিশ্বস্ত ও সততা সম্পর্কিত এজেন্সি ও দালাল ব্যবহার করুন ।
তুরস্কে কোন কাজে চাহিদা বেশি
বর্তমানে তুরস্কে বিভিন্ন কাজে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে । কিন্তু আমরা যদি ঐ সকল কাজ গুলোর নাম সম্পর্কে জানি তাহলে সেই বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়ে শুরুতে উচ্চ বেতনে চাকরি করার সুযোগ হবে । এখন আপনাদের সুবিধার্থে নিচে তুরস্কে কোন কাজে চাহিদা বেশি তা তুলে ধরা হলো ।
- কন্সট্রাকশন
- ড্রাইভিং
- রেস্টুরেন্ট কর্মী
- ক্লিনার
উল্লেখিত চারটি কাজে বর্তমানে তুরস্কে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে । আপনি যদি এই কাজ গুলোর উপর অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন তাহলে শুরুতে উচ্চ বেতনে চাকরি করতে পারবেন ।
তুরস্ক কাজের বেতন কত
ধরুন, আপনি ৮ লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ করেন তুরস্কের আসলেন কিন্তু আসার পর দেখতে পেলেন আপনার বেতন খুব সামান্য ধরা হয়েছে এক্ষেত্রে আপনার হতাশ হওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই । ফলে দেখা যাবে আপনি অর্থ উপার্জনের কথা চিন্তাভাবনা করে ডিপ্রেশনে পর্যন্ত চলে যেতে পারেন । তাই আমাদের অবশ্যই তুরস্ক বেতন কত টাকা প্রথমে জানতে হবে ।
বর্তমানে নতুন অবস্থায় একজন শ্রমিকের তুরস্ক কাজের সর্বনিম্ন বেতন ৪০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা । তবে আপনি যদি শুরুতে একজন অভিজ্ঞ শ্রমিক হিসেবে তুরস্কে আসেন তাহলে সর্বনিম্ন ৬০ হাজার টাকা থেকে ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন ধরা হবে ।
তাছাড়া আপনার কাজের অভিজ্ঞতা ও কাজের ধরনের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন সেক্টরের বেতনের তারতম্য রয়েছে । আপনি যদি একজন শিক্ষিত ও স্মার্ট ব্যক্তি হয়ে তুরস্ক বিভিন্ন আইটি কোম্পানি উচ্চ পদে চাকরি করেন তাহলে শুরুতেই ১ লাখ টাকা থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত বেতনে চাকরির সুযোগ রয়েছে ।
আমাদের শেষ কথা
আজকের পোস্টে আমরা তুরস্ক কাজের ভিসা পেতে কি কি লাগে, দাম কত, তুরস্ক পারমিট ভিসার দাম কত ও কোন কাজের চাহিদা বেশি সহ আরো বেশ কিছু তথ্য জানতে পেরেছি । আপনি যদি তুরস্কে গিয়ে উন্নত জীবন যাপন করে উচ্চ বেতনে চাকরি করতে চান তাহলে উল্লেখিত তথ্যগুলো ফলো করতে পারেন ।
আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার খুবই ভালো লেগেছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আপনি যদি সামান্যতম উপকার পান তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব ও ফ্যামিলিতে পোস্টটি শেয়ার করুন । তাছাড়া আমার এই পোস্ট সম্পর্কে যদি আপনার কোন মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন । ধন্যবাদ ।