আমাদের অনেকের দুবাই টাইলসের কাজের বেতন কত সম্পর্কে অনলাইনে তথ্য খুঁজতে থাকেন । আপনিও কি অনলাইনে তথ্য জানতে চাচ্ছেন? আপনার উত্তরটি যদি হ্যাঁ হয়ে থাকে তাহলে সঠিক জায়গাতে এসেছেন । কারণ আজকের পোস্টটিতে আমরা আলোচনা করব দুবাই টাইলস কাজে কি কি সুবিধা রয়েছে, বেতন কত এবং ডিউটি কত ঘন্টা ইত্যাদি ।
বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম সম্প্রদায় ভুক্ত অসংখ্য দেশ রয়েছে । তার মধ্যে অত্যন্ত বিলাসবহুল ও উন্নত একটি দেশের নাম হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত । আর সেই আরব আমিরাতের উন্নত একটি শহরের নাম দুবাই । এই দুবাই পৃথিবীতে যতগুলো উন্নত শহর রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি শহর ।
আরও পড়ুন ➝ বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যেতে কত টাকা লাগে
দুবাইতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বিল্ডিং, কল কারখানা এবং কনস্ট্রাকশন তৈরি করা হয়ে থাকে । তাছাড়া আপনি যদি দুবাইতে যান তাহলে দেখতে পাবেন অসংখ্য বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে । ওই সকল কলকারখানা, বিল্ডিং ও বাড়ি তৈরি করার জন্য টাইলস ব্যবহার করা হয়ে থাকে ।
তাছাড়া দুবাই যেহেতু মুসলিম সম্প্রদায়িক ভুক্ত একটি দেশ এখানে অসংখ্য মসজিদ প্রতিনিয়ত তৈরি করা হচ্ছে । আর আমরা সকলেই জানি মসজিদের ভিতরে, বাহিরে এবং দেয়ালে উন্নত মসজিদ তৈরি করার জন্য টাইলস ব্যবহার করা হয় । আর এই সকল টাইলসের কাজের জন্য প্রতি বছর বিপুল পরিমাণে বাংলাদেশী নিয়োগ করা হয়ে থাকে ।
আপনি যদি একজন টাইলস কাজে অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই সেই অভিজ্ঞতা কে কাজে লাগিয়ে দুবাই চলে আসুন এবং এখানে এসে মোটা অংকের অর্থ রোজগার করবেন । আমরা অনেকের টাইলস কাজে অভিজ্ঞ কিন্তু কিভাবে দুবাই গিয়ে কাজ করব, বেতন কত পাবো ও সুবিধা সম্পর্কে জানিনা বিধায় এই কাজে আগ্রহী হতে চাই না ।
এখন আমরা দুবাই টাইলস কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানবো । আপনি যদি এই বিষয়ে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আমাদের এই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন । তো আর দেরি না করে চলুন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক ।
দুবাই টাইলস কাজে কি কি সুবিধা রয়েছে
আমরা যদি কখনো দুবাই টাইলস কাজে যেতে চাই তাহলে সবার প্রথমে যে কথাটি মাথায় আসবে আমরা দুবাই টাইলস কাজে কি কি সুযোগ সুবিধা পাব । হ্যাঁ এই বিষয়টা সবার প্রথমে আমাদের প্রত্যেকের জানা উচিত । কারণ আমরা যদি অনেক টাকা খরচ করে দুবাই আসি এবং যদি ভালো সুযোগ-সুবিধা না পাই তাহলে কিন্তু হলো না ।
এমনটা নয় যে দুবাইতে শুধুমাত্র টাইলস কাজে প্রতি বছর নিয়োগ দেওয়া হয় । দুবাইতে বিভিন্ন ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ নিয়োগ দেয়া হয় । তবে আমাদের আজকের বিষয় হচ্ছে দুবাইয়ের টাইলস কাজ সম্পর্কে । এখন আমরা দুবাই টাইলস কাজে কি কি সুবিধা রয়েছে সে সম্পর্কে জানব ।
- আমার জানি দুবাইতে প্রচুর টাইলসের কাজের চাহিদা রয়েছে । কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ টাইলসের মিস্ত্রি পাওয়া যায় না । আপনি যদি একজন টাইলস অভিজ্ঞ ব্যক্তি হয়ে থাকেন তাহলে দুবাইতে আসা আপনার জন্য লাভ জনক হতে পারে ।
- দুবাইতে এসে আপনি দুই ভাবে টাইলসের কাজ করতে পারবেন । প্রথমটি হচ্ছে কন্ট্রাকে টাইলসের কাজ এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে কোন প্রতিষ্ঠানের আন্ডারে টাইলসের কাজ ।
- আপনি যদি টাইলস কাজে অধিক অভিজ্ঞ হন এবং জনবল দিয়ে কাজ করার মত ক্ষমতা থাকে তাহলে অবশ্যই যে প্রতিষ্ঠানের টাইলসের কাজ করবেন তার সাথে কন্ট্রাকে কাজ করে নিবেন ।
- আবার আপনি যদি টাইলস কাজে অভিজ্ঞ হন কিন্তু জনবল দিয়ে কাজ করতে না চান তাহলে কোন প্রতিষ্ঠানের আন্ডারে মাসিক বেতনে চাকরি করতে পারেন ।
- তবে টাইলস কাজে যদি কনট্রাকে কাজ করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার দুবাই পার্টনার ভিসা, দুবাই ইনভেস্টমেন্ট ভিসা অথবা দুবাই বিজনেস ভিসা থাকতে হবে ।
- মনে রাখবেন আপনি দুবাই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যদি টাইলস কাজে কন্ট্রাকে কাজ করেন তাহলে সেটা অবৈধ বলে গণ্য হবে । এক্ষেত্রে আপনি শাস্তির আওতায় পড়তে পারেন ।
ওপরে যতগুলো সুযোগ-সুবিধার কথা তুলে ধরা হয়েছে এগুলো ছাড়াও আরো অসংখ্য সুবিধা রয়েছে যা আপনি যদি টাইলস কাজে দুবাই আসেন তাহলেই দেখতে পারবেন । তাই দেরি না করে আজই টাইলসের কাজ করতে দুবাই চলে আসুন ।
দুবাই টাইলসের কাজের বেতন কত
আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি দুবাই টাইলস কাজ আপনি দুই ভাবে করতে পারবেন । যদি আপনি কোন প্রতিষ্ঠান থেকে টাইলসের কাজ কন্ট্রাকে নিয়ে আসেন সে ক্ষেত্রে আপনার বেতন কত টাকা হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা যায় না । তবে আপনি যদি কোন প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করেন তাহলে আপনার নির্দিষ্ট একটা প্রতি মাসে বেতন দেয়া হবে ।
আরও পড়ুন ➝ সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায়
বর্তমানে দুবাইতে একজন টাইলস মিস্ত্রি বেতন ধরা হয়ে থাকে ১৫০০ দিরহাম থেকে ২০০০ দিরহাম । তবে আপনি যদি নতুন অবস্থায় দুবাইতে টাইলস কাজে আসতে চান তাহলেও আসতে পারবেন । একজন নতুন টাইলস হেলপার হিসেবে দুবাই কাজের বেতন ধরা হয় ১১০০ দিরহাম থেকে ১২০০ দিরহাম পর্যন্ত ।
দুবাই টাইলস কাজে কত ঘন্টা ডিউটি
আমাদের অনেকের মনে প্রশ্ন হতে পারে আমরা প্রতি মাসে দুবাই টাইলস কাজে আসলে মোটা অংকের বেতন পাব তাহলে আমাদের দুবাই টাইলস কাজে কত ঘন্টা ডিউটি করতে হবে? আমরা জানি মধ্যপ্রাচ্যের বেশিরভাগ দেশ যেমনঃ সৌদি আরব, কাতার, ও কুয়েত এ দেশগুলোতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাজের ডিউটি ১২ ঘন্টা ধরা হয়ে থাকে ।
সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে দুবাই টাইলসের কাজের ডিউটি ৮ ঘন্টা থেকে সর্বোচ্চ ১০ ঘন্টা পর্যন্ত । তবে আপনাকে যদি এই সময়ের বেশি অতিরিক্ত ডিউটি করতে বলা হয় তাহলে অবশ্যই সেই ডিউটির পরিবর্তে আপনাকে ওভারটাইম ভাতা দিবে । আর যেহেতু আপনি দেশ ছেড়ে দুবাই যাবেন টাকা উপার্জনের জন্য অতিরিক্ত ডিউটি হলে আপনার প্রতি মাসে আরো বেশি অর্থ উপার্জিত হতে সহায়তা করবে ।
কেন দুবাই টাইলস কাজে যাবেন?
আমরা জানি দুবাইতে প্রচুর টাইলসের চাহিদা রয়েছে । কেননা প্রতিনিয়ত দুবাইতে বিভিন্ন কলকারখানা, কনস্ট্রাকশন বিল্ডিং বিলাসবহুল বাড়ি ও মসজিদের কাজ তৈরি করার জন্য টাইলস ব্যবহার করা হয় । কিন্তু আপনি একটা বিষয় খেয়াল করবেন দুবাইতে এত এত টাইলসের কাজ করা হয় কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণে টাইলস মিস্ত্রি পাওয়া যায় না ।
আপনি যদি টাইলস কাজে অভিজ্ঞ হন তাহলে অবশ্যই দুবাই চলে আসুন । যদিও আপনি টাইলস কাজ আমাদের বাংলাদেশে করতে পারবেন কিন্তু বাংলাদেশের যত টাকা রোজগার করবেন তার দ্বিগুণ পরিমাণে রোজগার দুবাইতে এসে করতে পারবেন । তাই অযথা দেশে পড়ে না থেকে আমি মনে করি আপনি দুবাই টাইলস কাজে চলে আসুন ।
আমাদের শেষ কথা
সম্মানিত পাঠক, আজকের পোস্টে আমরা দুবাই টাইলস কাজে কত ঘন্টা ডিউটি, বেতন কত টাকা এবং কি কি সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছি । আপনি যদি একজন টাইলস মিস্ত্রি হয়ে থাকেন তাহলে দেরি না করে আর যদি দুবাই চলে আসুন । আবার আপনি যদি নতুন কাজে দুবাইতে আসতে চান তাহলেও আসতে পারেন ।
আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার খুবই ভালো লেগেছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আপনি যদি সামান্যতম উপকার পান তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব ও ফ্যামিলিতে পোস্টটি শেয়ার করবেন । তাছাড়া আমার এই পোস্ট সম্পর্কে যদি আপনার কোন মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন । ধন্যবাদ ।