আপনি কি দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র নমুনা সম্পর্কে জানতে চান? যদি আপনার উত্তরটি হ্যাঁ হয়ে থাকে তাহলে সঠিক জায়গাতে এসেছেন । কেননা আজকের পোস্টে আমরা জানব দোকান ভাড়া নেওয়ার জন্য চুক্তিপত্র নমুনাতে কি কি শর্তাবলী থাকবে এবং চুক্তিপত্রের তফসিল পরিচয় সম্পর্কে ।
সাধারণত দোকান ভাড়া নেওয়ার জন্য চুক্তিপত্র করার দরকার হয় । এর মূল কারণ হচ্ছে আপনি যদি চুক্তিপত্রের মাধ্যমে ১ বছর অথবা ২ বছরের জন্য দোকান ভাড়া নেন তাহলে দোকানের মালিক আপনাকে হুট করেই দোকান থেকে বের করে দিতে পারবে না । আপনার চুক্তিপত্রের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে আপনি অনায়াসে দোকান ছেড়ে দিতে পারবেন ।
আরও পড়ুন ➝ বৈদ্যুতিক চিঠি লেখার নিয়ম
তাছাড়া আপনি যখন দোকান ভাড়ার জন্য চুক্তিপত্র করতে যাবেন তখন দোকানের মালিককে আপনাকে চুক্তি পত্রের জন্য টাকা জমা দিতে হবে । তারপর স্ট্যামপ পেপারে দুজনের সিগনেচার থাকতে হবে এবং তফসিল পরিচয় নির্ধারিত থাকতে হবে । এই ভাবে যদি আপনি কখনো দোকান ভাড়া দেন তাহলে উভয় পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হবে না ।
সাধারণত দোকান ভাড়ার জন্য ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যামপ পেপার এর দরকার হয় । মূলত তিনটি ১০০ টাকার স্ট্যাম্প ব্যবহার করা মাধ্যমে এই চুক্তিনামা তৈরি করতে হয় । এই চুক্তিনামা সাধারণত তিন পৃষ্ঠার হয়ে থাকে । যদি তিন পৃষ্ঠার বেশি হয় তাহলে কার্টিজ পেপার দিয়ে সংযুক্ত করতে হবে ।
দোকানে ভাড়ার জন্য চুক্তি পত্রের মূল কপি থাকবে ভাড়াটিয়ার কাছে এবং ফটো কপি থাকবে মালিকের কাছে । কিন্তু উভয়ে চাইলে দুইটি মূল কপি তৈরি করে নিজেদের কাছে রাখতে পারবে । অবশ্যই এই চুক্তিনামার জন্য তিনজন সাক্ষীর স্বাক্ষর সহ নির্ধারিত করতে হবে ।
আপনি যদি ইতিমধ্যে দোকান ভাড়া নিতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে এই পোস্টটি শুধুমাত্র আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে । পোস্টটি পড়ার পর আপনি দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়ে যাবেন । তাই প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন ।
দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র নমুনা
আমরা যদি কোন দোকান ভাড়া নিতে চাই তাহলে অবশ্যই চুক্তিপত্র করতে হবে যা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি । এখন এই চুক্তিপত্রের সাধারণ একটি নমুনা কেমন হতে পারে সে সম্পর্কে আমাদের ধারণা থাকা জরুরী । আপনাদের সুবিধার্থে দোকান ভাড়ার জন্য চুক্তিপত্র সাধারণ নমুনা তুলে ধরা হলো ।
দোকান মালিকের নামঃ রফিক মিয়া , পিতার নামঃ হাফিজ মিয়া মাতার নামঃ রহিমা আক্তার সাং- তারুন্দিয়া, ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ । পেশা: ব্যবসা, ধর্ম: ইসলাম জাতীয়তা: বাংলাদেশী । জাতীয় পরিচয় পত্র নং- ২১০৭১৯২৩৪৫৬ ।
রফিক মিয়া (মালিক/স্বাক্ষর)
ভাড়াটিয়ার নামঃ রুবেল মিয়া, পিতার নামঃ মাহাবুব মিয়া, মাতার নামঃ মমতা বেগম সাং- তারুন্দিয়া, ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ । পেশা: ব্যবসা, ধর্ম: ইসলাম, জাতীয়তা: বাংলাদেশী, জাতীয় পরিচয় পত্র নং- ৩২০৭৯১৩৪৫৬ ।
রুবেল মিয়া (ভাড়াটিয়া/স্বাক্ষর)
দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্রের শর্তাবলী
আপনি যখন দোকান ভাড়া নিবেন তখন মালিকপক্ষের বেশ কিছু শর্তাবলী থাকবে । এখন সাধারণত দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্রের যে যে শর্তাবলী থাকে তা নিচে তুলে ধরা হলো ।
- ভাড়াটে প্রতি মাসে ৪০০০ টাকা ভাড়া হিসাবে দিবে । ভাড়া প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে দিতে হবে ।
- এই চুক্তিপত্রের মেয়াদ ১০/০৫/২০২৪ থেকে ১০/০৫/২০২৭ পর্যন্ত থাকবে ।
- ভাড়াটে ৩ লাখ টাকা নিরাপত্তা জমা হিসাবে দিতে হবে । চুক্তির মেয়াদ শেষে এবং সমস্ত শর্তাবলী পূরণের পর নিরাপত্তা জমা ফেরত দেওয়া হবে ।
- ভাড়াটে সম্পত্তি কেবলমাত্র বেবসায়িক কাজে ব্যবহার করতে পারবে । অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য বাড়িওয়ালার পূর্ব অনুমোদন লাগবে ।
- ভাড়াটে সম্পত্তির ভিতরের অংশের মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে । বাড়িওয়ালা সম্পত্তির বাইরের অংশের মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে ।
- ভাড়াটে কে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির বিল প্রতি মাসে দিতে হবে ।
- দোকানের কোন বিশেষ ক্ষতির জন্য কোন পক্ষই অন্য পক্ষের কাছে দায়ী থাকবে না ।
দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্রের তফসিল পরিচয়
আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি দোকান ভাড়া নেওয়ার জন্য চুক্তিপত্রের সাধারণ নমুনা এবং শর্তাবলী সম্পর্কে । এখন আমরা জানবো দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্রের তফসিল পরিচয় সম্পর্কে । আপনাদের সুবিধার্থে চুক্তিপত্রের তফসিল পরিচয় সম্পর্কে নিচে তুলে ধরা হলো ।
জেলা: ময়মনসিংহ, থানা: ভালুকা, জামিরদিয়া, ধানখলার মোড়ে অবস্থিত … ভবনের নীচ তলার ৩ নাম্বার দোকান টি অত্র চুক্তিপত্র দলিল দ্বারা আমি মালিক পক্ষ ভাড়া দিলাম এবং আমি ভাড়াটিয়া পক্ষ ভাড়া নিলাম।
এখান থেকে যেকোন ধরনের অনলাইন সেবা নিতে পারেন ।
এতদ্বার্থে স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে, সুস্থ শরীরে অত্র দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র পাঠ করিয়া আমরা উভয় পক্ষের ইচ্ছানুযায়ী রচিত হওয়ায় উহার মর্ম ও ফলাফল সম্বন্ধে অবগত হইয়া অত্র ভাড়াটিয়া চুক্তিপত্রে নিজ নিজ নাম সাক্ষীগণের মোকাবেলায় সহি করিয়া দিলাম। ইতি তাং- ১০/০৫/২০২৪
স্বাক্ষীগণের স্বাক্ষর: মালিকের স্বাক্ষর
নামঃ রফিক মিয়া
পিতার নামঃ হাফিজ মিয়া
ঠিকানাঃ তারুন্দিয়া, ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ
এনআইডি নংঃ ২১০৭১৯২৩৪৫৬
মোবাইল নংঃ ০১৭——-
নাম: হাফিজ মিয়া
পিতার নামঃ রাকিব মিয়া
ঠিকানাঃ তারুন্দিয়া, ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ
এনআইডি নংঃ ২১০———-
মোবাইল নং-০১৯——–
নামঃ কাসেম খান
পিতার নামঃ কামাল খান
ঠিকানাঃ তারুন্দিয়া, ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ
এনআইডি নংঃ ২৩৪——–
মোবাইল নংঃ ০১৭——
ভাড়াটিয়ার স্বাক্ষর
নামঃ রুবেল মিয়া
পিতার নামঃ মাহাবুব মিয়া
ঠিকানাঃ তারুন্দিয়া, ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ
এনআইডি নংঃ ৩২০৭৯১৩৪৫৬
মোবাইল নংঃ ০১৮——
আমাদের শেষ কথা
সম্মানিত দর্শক, আজকের পোস্টটিতে আমরা দোকান ভাড়া নেওয়ার জন্য কিভাবে চুক্তি করতে হয় তার নমুনা সম্পর্কে জানতে পেরেছি । তাছাড়া দোকান ভাড়া নিতে গেলে কি কি শর্তাবলী রয়েছে এবং তফসিল পরিচয় সম্পর্কেও জেনেছি । আপনি যদি কখনো দোকান ভাড়া নিতে চান তাহলে উপরোক্ত স্টেপগুলো ফলো করে নিতে পারেন ।
আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে । পোস্টটি পড়ে আপনি যদি সামান্যতম উপকৃত হন তাহলে এই পোস্ট লিখতে যত টুকু কষ্ট হয়েছে তা সার্থক হবে বলে আমি মনে করি । ধন্যবাদ ।