বর্তমান বিশ্বে যতগুলো উন্নত মানের ও চাকচিক্যময় শহর রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে লন্ডন । যুক্তরাজ্যের রাজধানীর নাম হচ্ছে লন্ডন যে আমরা প্রায় সকলেই জানি । আমরা অনেকে লন্ডন যেতে খুব আগ্রহী । কিন্তু বাংলাদেশ থেকে লন্ডন যাওয়ার উপায় সম্পর্কে আমরা বেশিরভাগ মানুষ জানিনা ।
আমরা বেশিরভাগ মানুষ লন্ডন যেতে চাই কাজ করার জন্য । কারণ যদি কখনো লন্ডন গিয়ে কাজ করেন তাহলে উচ্চ বেতনে চাকরি করার সুযোগ পাবেন । তাছাড়া সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে এখানে বেশি পরিমাণে বেতন পাওয়ার পাশাপাশি আপনি অন্যতম জীবন যাপন করার সুযোগ পাবেন ।
তাছাড়া অনেকে লন্ডনে ভ্রমণ করার জন্য যেয়ে থাকেন । আবার কেউ কেউ লন্ডন পড়াশোনা করার জন্য যান । এখন আপনার উদ্দেশ্য কি এবং কেনইবা লন্ডন যাচ্ছেন সেটা আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার । তবে আপনার মূল বিষয় হচ্ছে কিভাবে বাংলাদেশ টু লন্ডন যাওয়া যায় এ সম্পর্কে জানা ।
আরও পড়ুন ➝ কানাডা ভিসা পাওয়ার সহজ উপায়
আশা করি আপনি ইতিমধ্যে বাংলাদেশ থেকে লন্ডন যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী আছেন তাই আপনার জন্য পোস্টটি তৈরি করা হয়েছে । এখন আমরা এই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানবো । তো চলুন আমাদের আজকের মূল আলোচনা শুরু করা যাক ।
বাংলাদেশ থেকে লন্ডন যেতে কি কি লাগে
আমরা যদি কখনো বাংলাদেশ থেকে লন্ডন যেতে চাই তাহলে প্রথমে জানা উচিত কি কি কাগজপত্র থাকলে লন্ডন যাওয়া যায় । এর কারণ হচ্ছে আপনি ওই সকল কাগজপত্র ব্যবহার করে লন্ডন ভিসা তৈরি করবেন । এখন নিচে লন্ডন যাওয়ার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের নাম তুলে ধরা হলো ।
- সম্পূর্ণ বৈধ বাংলাদেশী পাসপোর্ট
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
- মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট
- করোনা ভ্যাকসিন টিকা কার্ড
- মিনিমাম IELTS স্কোর ৬.০ লাগবে (স্টুডেন্ট ভিসার জন্য)
- ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট ফটোকপি
- বিশ্ববিদ্যালয় হতে এডমিশন অফার লেটার (স্টুডেন্ট ভিসার জন্য)
- কোম্পানির হতে চাকরির অফার লেটার (ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য)
সাধারণত উপরে উল্লেখিত কাগজপত্র ব্যবহার করার মাধ্যমে লন্ডনের ভিসা তৈরি করা হয়ে থাকে । এর পরেও যদি আপনার কোন আরো অতিরিক্ত কাগজপত্রের দরকার হয় তাহলে আপনার কাঙ্ক্ষিত ভিসা এজেন্সি অথবা দালালের কাছ থেকে জেনে নিতে পারেন ।
বাংলাদেশ থেকে লন্ডন যাওয়ার উপায়
আমরা জানি যুক্তরাজ্য সারা বিশ্বের যতগুলো উন্নত দেশ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি দেশ । সাধারণত অন্যান্য দেশ গুলোতে ভিসা পাওয়ার যতটুকু সহজ ঠিক তেমনি লন্ডনের ভিসা পাওয়া অতটা সহজ ব্যাপার নয় । তবে আপনি কিছু বিষয়ে সম্পর্কে অবগত হলে খুব সহজে লন্ডন ভিসা পেতে পারেন ।
আপনি যদি ভ্রমণ করতে খুব পছন্দ করেন তাহলে লন্ডন টুরিস্ট ভিসা পেতে পারেন । এক্ষেত্রে আপনাকে লন্ডনের টুরিস্ট ভিসা পেতে কাটখর পোড়াতে হবে না । বিশ্বস্ত কোন এজেন্সির মাধ্যমে আপনি চাইলে লন্ডনের টুরিস্ট ভিসা পেয়ে যেতে পারেন । তারপর আপনার প্ল্যান অনুযায়ী যা যা করার মন চাই সেখানে গিয়ে করতে পারেন ।
তাছাড়া আপনি যদি একজন স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন তাহলে লন্ডন স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে পড়াশোনা করতে পারেন । বর্তমানে লন্ডনে সারা বিশ্বের উন্নত বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে । আপনি চাইলে ওই সকল বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করতে পারেন ।
কিন্তু আমাদের বেশিরভাগ মানুষের ইচ্ছা হচ্ছে লন্ডন গিয়ে কাজ করা অর্থাৎ লন্ডন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সংগ্রহ করা । যদিও বা লন্ডন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার সহজ ব্যাপার নয় । কিন্তু আপনি যদি উচ্চ শিক্ষিত এবং কোন একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে কাজে পারদর্শী হন তাহলে লন্ডন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে পারেন ।
সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে আপনি যদি লন্ডন টুরিস্ট ভিসা নিয়ে যান তাহলে সেখানে যতদিন অবস্থান করবেন আপনার পরিচিত কোন ব্যক্তি যদি থাকে অথবা বিশ্বস্ত এজেন্সির মাধ্যমে আপনি চাইলে পার্মানেন্ট ভাবে লন্ডন থাকতে পারেন । অর্থাৎ লন্ডন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে কাজ করতে পারেন ।
লন্ডনের ভিসা পেতে কত দিন সময় লাগে
আমরা অনেকে জানতে চাই লন্ডনের ভিসা পেতে কতদিন সময় লাগতে পারে । এখানে মূলত আপনি কোন ধরনের ভিসা আবেদন করেছেন তার উপর ভিত্তি করে সময়ের পরিমাণ নির্ধারণ করা যাবে । আপনি যদি লন্ডন টুরিস্ট ভিসা ও স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন করেন তাহলে সেই ভিসা পেতে সময় লাগতে পারে ৩০ দিন থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত ।
আরও পড়ুন ➝ দুবাই হোটেল ভিসা বেতন কত
কিন্তু আপনি যদি লন্ডনে কাজের ভিসা অর্থাৎ লন্ডন ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন করেন এক্ষেত্রে আপনার সময় লাগতে পারে ২ মাস থেকে সর্বোচ্চ ৩ মাস পর্যন্ত । তবে সচরাচর ভালো কোন ভিসা এজেন্সি পেলে আপনি ২ মাসের ভিতরে লন্ডন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা হাতে পেয়ে যাবেন ।
বাংলাদেশ থেকে লন্ডন যেতে কত সময় লাগে
আমরা সাধারণত বাংলাদেশ থেকে লন্ডন যাওয়ার জন্য বিমান ব্যবহার করে থাকি । আপনি চাইলেই কিন্তু বাস, মাইক্রো অথবা ট্রেন ব্যবহার করার মাধ্যমে বা লঞ্চের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে লন্ডন যেতে পারবেন না । তাই এক্ষেত্রে আমাদের যাতায়াতের সময়ের পরিমাণটা বিমানের উপর নির্ধারণ করতে হয় ।
বাংলাদেশ থেকে লন্ডন যাওয়ার জন্য দুই ধরনের ফ্লাইট এর বিমান পাওয়া যায় । প্রথমটি হচ্ছে ননস্টপ ফ্লাইট এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে স্টপ ওভার ফ্লাইট । সাধারণত ননস্টপ ফ্লাইট বিমান ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে লন্ডন যেতে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা পর্যন্ত সময় লাগতে পারে ।
কিন্তু আপনি যদি স্টপ ওভার ফ্লাইট বিমান ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে লন্ডন যান তাহলে সময় লাগতে পারে ১৫ ঘণ্টা থেকে সর্বোচ্চ ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত । সুতরাং আপনি ননস্টপ ফ্লাইট বিমান নাকি স্টপ ওভার ফ্লাইট বিমান ব্যবহার করেন লন্ডন যাবেন সেটা প্রথমে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিন ।
বাংলাদেশ থেকে লন্ডনের দূরত্ব কত কিলোমিটার
ধরুন আপনি ইতিমধ্যে লন্ডনে অবস্থান করছেন এখন আপনাকে আপনার বন্ধু-বান্ধব অথবা পরিবারের কেউ প্রশ্ন করল বাংলাদেশ থেকে লন্ডনের দূরত্ব কত কিলোমিটার অথবা কত মাইল । কিন্তু আপনি আর সঠিক কোন উত্তর দিতে পারলেন না । তখন নিঃসন্দেহে আপনার নিজের ভিতরে এক ধরনের লজ্জা অনুভূতি সৃষ্টি হবে । তাই আমাদের প্রত্যেকের এই বিষয়ে জানা উচিত ।
বাংলাদেশ থেকে লন্ডনের দূরত্ব হচ্ছে ৭৯৯৭ কিলোমিটার । কিন্তু আপনারা যদি মাইল হিসেবে বিবেচনা করে তাহলে বাংলাদেশ টু লন্ডনের দূরত্ব ৪৯৬৯ মাইল । এখন আপনাকে যদি কেউ বাংলাদেশ থেকে লন্ডনের দূরত্ব কত কিলোমিটার বা কত মাইল প্রশ্ন করে আশা করি আপনি সঠিক উত্তর দিতে পারবেন ।
আমাদের শেষ কথা
আজকের পোস্টে আমরা লন্ডন যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে, যাওয়ার উপায়, যেতে কত সময় লাগে ও দূরত্ব কত কিলোমিটার সহ আরো বেশি তথ্য সম্পর্কে জেনেছি । আপনি যদি ইতিমধ্যে লন্ডন যেতে আগ্রহী হন অথবা ভবিষ্যতে কখনো লন্ডন যেতে চান তাহলে উল্লেখিত তথ্য গুলো ফলো করতে পারেন ।
সম্মানিত পাঠক, আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার খুবই ভালো লেগেছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আপনি যদি সামান্যতম উপকার পান তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব ও ফ্যামিলিতে এই পোস্টটি শেয়ার করুন । তাছাড়া আমার এই পোস্ট সম্পর্কে যদি আপনার কোন মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানান । ধন্যবাদ ।