আপনি কি বৈদ্যুতিক চিঠি লেখার নিয়ম জানতে চাচ্ছেন ? আপনার উত্তরটি যদি হ্যাঁ হয় তাহলে সঠিক জায়গাতে এসেছেন । কেননা আজকের পোস্ট আমরা জানবো বৈদ্যুতিক চিঠি কি, লেখার নিয়ম, কেন লিখব এবং বৈদ্যুতিক চিঠির নমুনা সম্পর্কে ।
আমরা সকলেই জানি প্রযুক্তি দিন দিন আপডেট হচ্ছে । একটা সময় ছিল আমরা হাতে চিঠি লিখতাম । ওই চিঠি কাগজ ও কলম ব্যবহার করার মাধ্যমে লিখা হত । একজন ব্যক্তি অপর পাশের মানুষকে তার মনের কথা এই চিঠির মাধ্যমে লিখে পাঠাতো । এর জন্য সাধারণত ডাক বাক্স ব্যবহার করা হতো ।
সেই সময় হাতে চিঠি লিখে যাকে চিঠি পাঠানো হতো তার ঠিকানা বরাবর ডাকবক্সে জমা দেওয়া হতো । তারপর সেই চিঠি অপর পাশের ব্যক্তি পেতে পেতে প্রায় ১০-১৫ দিন বা কোন কোন সময় ৩০ দিনের উপরে লেগে যেত । যখন ওই ব্যক্তি চিঠি হাতে পেত তখন সে অপর পাশের ব্যক্তির মনের ভাব বুঝতে পারতো ।
আরও পড়ুন ➝ সেরা ৬টি প্রেমের চিঠি
কিন্তু দেখুন প্রযুক্তির পরিবর্তনের সাথে সাথে এখন আর সেই হাতে লেখা চিঠির প্রচলন নেই । এখন আর কেউ চিঠি লিখে গিয়ে ডাকবক্সে জমা দেয় না । এখন আর বাড়ি বাড়ি পিয়ন চিঠি দিতে আসেনা । যেখানে হাতে লেখা চিঠি পেতে পেতে সময় লাগতো ১০-১৫ দিন আর সেখানে বৈদ্যুতিক চিঠি পেতে সময় লাগে মাত্র কয়েক সেকেন্ড ।
বিষয়টা সত্যি অবাক করার মত । হ্যাঁ, আমরা বৈদ্যুতিক চিঠি ব্যবহার করার মাধ্যমে অপর পাশের ব্যক্তির সাথে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারি এবং ওই ব্যক্তি আপনার মনের কথা জানতে পারে কয়েক সেকেন্ডের ভিতরে । এর জন্য আপনাকে আর ১০-১৫ দিন বা ১ মাস অপেক্ষা করার দরকার হয় না ।
আপনি যদি ইতিমধ্যে বৈদ্যুতিক চিঠি বিষয়ে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে । তাই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন । তো আর দেরি না করে চলুন আমাদের আজকের মূল আলোচনাতে যাওয়া যাক ।
বৈদ্যুতিক চিঠি কি?
বৈদ্যুতিক চিঠি বলতে সাধারণত ইমেইলকে বুঝানো হয়ে থাকে । আমাদের এখন প্রায় সকলেরই ২-৩ টি ইমেইল থাকে । ইমেইল বলতে আমরা সাধারণত জিমেইল, yahoo mail বা আউটলুক মেইল এগুলোকে বুঝে থাকি । এখন যারা স্মার্টফোন ব্যবহার করছে প্রায় সকলের অবশ্যই একটি করে জিমেইল রয়েছে ।
আপনি চাইলে আপনার জিমেইল অথবা অন্য মেইল ব্যবহার করার মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারবেন । আপনি যদি আপনার প্রিয়তমা অথবা পরিবার-পরিজনের সাথে মনের ভাব প্রকাশ করতে চান তাহলে ইমেইল করতে পারেন ।
বৈদ্যুতিক চিঠি লেখার নিয়ম
আপনি যদি ইমেইল বা বৈদ্যুতিক চিঠি লেখার নিয়ম জানেন তাহলে খুব সহজে আপনার ব্যক্তিগত অথবা ব্যবসায়িক কাজে চিঠি লিখতে পারবেন । এখন কিভাবে বৈদ্যুতিক চিঠি লিখতে হয় সে সম্পর্কে আমরা জানবো । বৈদ্যুতিক চিঠি বা ইমেইল লেখার জন্য নিচের স্টেপ গুলো ফলো করুন ।
- বিষয় লাইনে চিঠির বিষয়টি স্পষ্টভাবে লিখুন ।
- যার কাছে চিঠি পাঠাতে চান উনার ইমেইল ঠিকানা সঠিকভাবে লিখুন ।
- চিঠির লেখার শুরুতে প্রাপককে অভিবাদন জানান ।
- চিঠির মাঝের অংশ বা মূল অংশে আপনার কথা স্পষ্ট, ছোট আকারে এবং সুন্দর ভাবে লিখুন ।
- সবশেষে চিঠিতে আপনার নাম, পদবী এবং যোগাযোগের তথ্য লিখুন ।
এখানে যেভাবে বৈদ্যুতিক চিঠি বা ইমেইল লেখার নিয়ম বলা হয়েছে ঠিক একইভাবে আপনি বৈদ্যুতিক চিঠি বা ইমেইল লিখবেন । তাহলে আশা করা যায় আপনি সফলভাবে আপনার প্রিয়জনের কাছে বৈদ্যুতিক চিঠি লিখতে পেরেছেন ।
বৈদ্যুতিক চিঠি লেখার নমুনা
কিভাবে বৈদ্যুতিক চিঠি লিখতে হয় সে সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি । এখন আমরা বৈদ্যুতিক চিঠির একটি নমুনা দেখব । আপনাদের সুবিধার্থে ওই নমুনা টি নিম্নে তুলে ধরা হলো ।
হতে – factbn@gmail.com (আপনার ইমেইল লিখুন)
প্রতি – ajkerft@gmail.com (প্রাপকের ইমেইল লিখুন)
বিষয়: (বিষয়টি স্পষ্টভাবে লিখুন)
প্রিয়, (প্রাপকের নাম লিখুন)
আশা করি ভালো আছেন।
আমি (আপনার নাম লিখুন), (আপনার পদবী/প্রতিষ্ঠান) থেকে (আপনার সম্পর্ক) ।
আমি আপনাকে এই ইমেইলটি (কারণ উল্লেখ করুন) লিখছি।
(আপনার কথা স্পষ্ট, ছোট আকারে এবং সুন্দর ভাবে লিখুন)
(দরকার হলে, আপনি নিম্নলিখিত বিষয়গুলি চিঠির মধ্যে লিখতে পারেন)
আপনার অনুরোধ বা প্রশ্ন স্পষ্টভাবে লিখুন ।
প্রাসঙ্গিক তথ্য যোগ করুন ।
আপনার পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে প্রাপককে জানান।
ধন্যবাদ,
আপনার নাম
পদবী
যোগাযোগের ঠিকানা
কেন বৈদ্যুতিক চিঠি লিখব?
আমরা ইতিমধ্যে বৈদ্যুতিক চিঠি কি এবং লেখার নিয়ম সম্পর্কে জেনেছি । এখন অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন ভাই কেন আমরা বৈদ্যুতিক চিঠি লিখব? হ্যাঁ আপনার এই প্রশ্নটি খুবই যুক্তি সঙ্গত বলে আমি মনে করি । কেননা কোন কারণ ছাড়া তো আর আমরা চিঠি লিখতে পারিনা ।
আপনি যদি একজন স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন তাহলে বৈদ্যুতিক চিঠি এসএসসি বা এসএসসি পরীক্ষায় আসতে পারে । তাই আমাদের বৈদ্যুতিক চিঠি লেখার নিয়ম hsc অথবা বৈদ্যুতিক চিঠি লেখার নিয়ম ssc জেনে রাখা ভালো । তাহলে আমরা পরীক্ষায় সফলভাবে বৈদ্যুতিক চিঠি লিখতে পারবো ।
আপনি চাইলে প্রিয়জনের কাছে বৈদ্যুতিক চিঠি বাংলা নববর্ষ অথবা ইংরেজি নববর্ষের দিন লিখে পাঠাতে পারেন । এর ফলে আপনার সাথে ওই ব্যক্তির সম্পর্কে আরও ঘনিষ্ঠ ও সুমধুর হবে । তাছাড়া আপনি চাইলে ব্যবসায়িক খাতে কোন প্রতিষ্ঠানকেও বৈদ্যুতিক চিঠি লিখতে পারেন ।
আরও পড়ুন ➝ কিভাবে প্রত্যয়ন পত্র লিখা হয়
সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে হাতে লিখে ডাক বাক্সে লেখা চিঠি প্রাপকের হাতে পৌঁছাতে পৌছাতে সময় লাগতো ১০ থেকে ১৫ দিন । কিন্তু এই চিঠি আপনার প্রাপকের কাছে পৌঁছাতে পৌঁছাতে সময় লাগবে মাত্র কয়েক সেকেন্ড । তাছাড়া এই চিঠি লিখার জন্য আপনার কোন কাগজে-কলম দরকার হবে না যা খুবই পরিবেশবান্ধব বলা যায় ।
আমাদের শেষ কথা
সম্মানিত দর্শক, আজকের পোস্টে বৈদ্যুতিক চিঠি বা ইমেইল লেখার নিয়ম সম্পর্কে আমরা জানতে পেরেছি । তাছাড়া আমরা কেনই বা এই চিঠি ব্যক্তিগত অথবা ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করব সে সম্পর্কেও জেনেছি । আপনি যদি কখনো বৈদ্যুতিক চিঠি লিখতে চান তাহলে উপরের স্টেপ গুলো ফলো করে লিখতে পারেন ।
আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আমার দৃঢ় বিশ্বাস আপনিও সুন্দরভাবে বৈদ্যুতিক চিঠি বা ইমেইল লিখতে পারবেন । আমার এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই বন্ধুবান্ধব ও ফ্যামিলিতে শেয়ার করবেন । তাছাড়া এই পোস্ট নিয়ে যদি কোন মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন । ধন্যবাদ ।