সুপ্রিয় পাঠক, আপনি কি ১ লক্ষ টাকা লোন নিতে চাই অনলাইনে এমন তথ্য খুঁজতেছেন? আপনার উত্তরটি যদি হ্যাঁ হয় তাহলে বলব সঠিক জায়গায় এসেছেন । কারণ আমাদের আজকের পোষ্টের মূল আলোচনার বিষয় হচ্ছে কিভাবে আমরা ১ লক্ষ টাকা লোন পেতে পারি ।
আমরা দৈননিন্দ জীবনে বিভিন্ন কারণে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে থাকি । আবার অনেকে বিভিন্ন ধরনের এনজিও বা সমিতি থেকে লোন নিয়ে থাকে । মূলত আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে লোন নেওয়ার মাধ্যমে আমাদের ব্যক্তিগত অথবা ব্যবসায়িক স্বার্থ হাসিল করা ।
আপনি যদি নতুন অবস্থায় থেকে থাকেন কিভাবে লোন নেওয়া যায় ব্যাংক থেকে তাহলে এই বিষয় সম্পর্কে আপনার জানা উচিত । বিশেষ করে ১ লক্ষ টাকা লোন নিতে হলে আপনাকে কি কি স্টেপ ফলো করতে হবে কি কি ডকুমেন্ট লাগবে বা যোগ্যতা কি কি সে সম্পর্কে জানা উচিত ।
আরও পড়ুন ➝ সিটি ব্যাংক পার্সোনাল লোন নেওয়ার উপায়
তাহলে দেখা যাবে আপনি কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়া অল্প সময়ের লোন অনুমোদন পেয়ে যাবেন এবং আপনার কাঙ্খিত লোন পেয়ে সঠিক কাজ করতে পারবেন । তাই আপনি যদি ১ লক্ষ টাকা লোন পেতে চান তাহলে এই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন । তো চলুন মূল আলোচনা শুরু করা যাক ।
১ লক্ষ টাকা লোন নিতে চাই – সহজ উপায়
বর্তমান সময়ে আমরা বিভিন্ন ধরনের জরুরি প্রয়োজন ব্যবসায়িক কাজ অথবা ব্যক্তিগত কারণে লোন নিতে চাই । এক্ষেত্রে অনেকের এই লোনের পরিমাণ এক লক্ষ টাকা থেকে আরো বেশি পরিমাণে হতে পারে । মূলত আপনার চাহিদার উপর ভিত্তি করে লোনের পরিমাণ হিসাব করা হয় ।
আপনি যদি ১ লক্ষ টাকা লোন নিতে চান তাহলে বিভিন্ন ধরনের ব্যাংক, এনবিএফআই এবং কিছু অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে খুব সহজে এই লোন নিতে পারবেন । কিন্তু এই লোন গুলো নেওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে কিছু স্টেপ ফলো করা উচিত । তাই নিচে তুলে ধরা ধাপগুলো পর্যায়ক্রমে অনুসরণ করতে থাকুন ।
কোন ব্যাংক থেকে ১ লক্ষ টাকা লোন পাওয়া যায়
বর্তমানে বাংলাদেশে অসংখ্য ব্যাংক রয়েছে যেখান থেকে আপনি ১ লক্ষ টাকা লোন নিতে পারবেন । কিন্তু আমরা অনেকে হয়তো ঐ সকল ব্যাংক গুলোর নাম জানিনা অথবা ব্যাংকের নাম ঠিকই জানে কিন্তু ওরা যে ১ লক্ষ টাকা লোন দেয় সে সম্পর্কে জানিনা । তাই আমাদের প্রথমে এই বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে ।
এখন আমরা জানবো বর্তমানে বাংলাদেশের সেরা কিছু জনপ্রিয় ব্যাংক নাম সম্পর্কে । বর্তমানে এই সকল ব্যাংক গুলো খুব অল্প পরিমাণ শর্ত অনুসারে আপনাকে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন দিবে । নিচে ওই সকল ব্যাংক গুলোর তালিকা তুলে ধরা হলো ।
-
ব্র্যাক ব্যাংক
-
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক
-
ইসলামী ব্যাংক
-
সিটি ব্যাংক
-
প্রাইম ব্যাংক
- ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (UCB)
আপনি চাইলে এই সকল ব্যাংকগুলো থেকে খুব সহজে ১ লক্ষ টাকা লোন পেতে পারেন । তবে প্রতিটি ব্যাংকের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভিন্ন শর্ত থাকতে পারে । তাই অবশ্যই ওই ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার পূর্বে শর্ত এবং কত সুদের হার সেই সম্পর্কের জেনে নিবেন ।
অনলাইনে ১ লক্ষ টাকা লোন নেওয়ার প্রক্রিয়া
বর্তমানে আধুনিকতার যুগে আপনি চাইলে অনলাইন এর মাধ্যমে খুব সহজে ১ লক্ষ টাকা লোন নিতে পারেন । এক্ষেত্রে আপনাকে বেশ কিছু ধাপ অতিক্রম করতে হবে । তাই আমাদের ওই সকল ধাপগুলো কি কি সে সম্পর্কে প্রথমে জেনে নেওয়া উচিত ।
সাধারণত অনলাইনে বাংলাদেশে ব্যাংকের অ্যাপ এবং ফিনটেক প্ল্যাটফর্ম এর মাধ্যমে অনলাইনে লোন নেওয়ার প্রক্রিয়ার ধাপগুলো নিচে তুলে ধরা হলো ।
- প্রথমে অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে
- ব্যাংকের একাউন্ট তৈরি করতে হবে
- প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে হবে
- এন আই ডি যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে
- আপনার আয়ের তথ্য জমা দিতে হবে
- নোন অ্যামাউন্ট নির্ধারণ করতে হবে
মূলত উল্লেখিত কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করার মাধ্যমে আপনি খুব সহজে ১ লক্ষ টাকার লোন নিতে পারবেন । আপনি সফলভাবে আবেদন করার পর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনার সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে খুব সহজে লোন অনুমোদন করে দিবে ।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও যোগ্যতা
আমরা যদি কোন ব্যাংক থেকে লোন নিতে চাই তাহলে অবশ্যই বেশ কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বা যোগ্যতা থাকতে হবে । এটা ব্যাংক ভেদে আলাদা আলাদা হতে পারে । তবে বেসিক বা সাধারণ যে যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দরকার সেই সম্পর্কে এখন আমরা জানব ।
বর্তমানে ১ লক্ষ টাকা লোন নিতে সাধারণত যেসব কাগজপত্র লাগে সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো ।
-
জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)
-
পাসপোর্ট সাইজ ছবি
-
আয়ের প্রমাণ (বেতন স্লিপ, ব্যাংক স্টেটমেন্ট)
-
চাকরির প্রমাণপত্র বা ব্যবসার কাগজপত্র
-
মোবাইল নম্বর ও ইমেইল
১ লক্ষ টাকার লোনের সুদের হার
আপনি যদি কখনো ১ লক্ষ টাকা লোন নেন সেটা হতে পারে ব্যাংক অথবা এনজিও থেকে তাহলে আপনার শুরুতে এক লক্ষ টাকার লোনের সুদের হার সম্পর্কে জানা উচিত । প্রতিটি সচেতন নাগরিকের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি না জেনে লোন নিলে পরবর্তীতে ঝামেলা তৈরি হতে পারে । তাই আমরা অবশ্যই লোন নেওয়ার পূর্বে সুদের হার সম্পর্কে জেনে নেব ।
সাধারণত ব্যক্তিগত লোনের ক্ষেত্রে ৯% থেকে ১৪% এর মধ্যে সুদ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে । তবে কিছু কিছু ব্যাংক তাদের বিভিন্ন অফার বা প্রচারণার সময় সুদের হার কম নিয়ে থাকে । তাছাড়া অবশ্যই লোন নেওয়ার আগে সুদের হার প্রসেসিং ফি এবং কি কি সার্ভিস চার্জ রয়েছে সেগুলো জেনে তারপর লোন নিবেন ।
লোন অনুমোদনে কত সময় লাগে
আপনি যদি অনলাইন অ্যাপের মাধ্যমে ১ লক্ষ টাকা লোন নেন তাহলে সেই লোন অনুমোদন পেতে ১-৩ কার্য দিবস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে । তবে ব্যাংকের মাধ্যমে যদি আপনি এক লক্ষ টাকা লোন দেন সে ক্ষেত্রে আপনার ২-৭ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে ।
এখানে মূলত আপনার কাগজপত্র কতটুকু সঠিক রয়েছে তার উপর ভিত্তি করে লোন অনুমোদনের সময় কম বা বেশি হতে পারে । তাছাড়া আপনার ব্যাংকের কত টাকা রয়েছে বা অতীতে ব্যাংক রেকর্ড কেমন ভালো না খারাপ সবকিছু যাচাই-বাছাইয়ের উপর ভিত্তি করে সময় নির্ধারণ করা হয় ।
চাকরিজীবী ও ফ্রিল্যান্সারের জন্য লোন অপশন
বর্তমানে বিভিন্ন ব্যাংক চাকরিজীবী ও ফ্রিল্যান্সারদের জন্য লোন অপশন দিয়েছে । আপনি যদি একজন চাকরিজীবী হয়ে থাকেন তাহলে খুব সহজে ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন । আপনার স্থায়ী চাকরি থাকলে লোন পাওয়া তুলনামূলক সহজ হবে । এক্ষেত্রে বেতনের একাউন্টের ভিত্তিতে দ্রুত লোন অনুমোদন পাওয়া যায় ।
আবার আপনি যদি একজন ফ্রিল্যান্সার হন তাহলে ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ইনকাম রিপোর্ট বা পোর্টফলিও দেখাতে হবে । তাছাড়া কিছু ব্যাংক এখন ফ্রিল্যান্সিং ইনকামকে আয় হিসেবে বিবেচনা করছে । তাই এই দুই ক্ষেত্রে স্থায়ী আয় দেখাতে পারলে লোন পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় ।
লোন নেওয়ার আগে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন
আমরা যদি কখনো লোন নিতে চাই সেটা হতে পারে এক লক্ষ টাকা অথবা তার বেশি অথবা কম অবশ্যই বেশ কিছু বিষয় খেয়াল রাখা উচিত । পরবর্তীতে যাতে আমাদের কোন ধরনের ঝামেলা পোহাতে না হয় তাই এ বিষয়ে সম্পর্কে জেনে নিব । নিচে লোন নেওয়ার আগে যে সকল বিষয় খেয়াল রাখবেন তা তুলে ধরা হলো ।
-
সুদ ও চার্জ
-
মাসিক কিস্তি আপনার আয় অনুযায়ী সম্ভব কিনা
-
লোনের মেয়াদ
-
লুকানো চার্জ আছে কি না
-
ব্যাংকের বিশ্বাসযোগ্যতা
১ লক্ষ টাকার লোনের সুবিধা ও অসুবিধা
আমরা যদি ১ লক্ষ টাকা লোন নিতে চাই তাহলে সুবিধা ও অসুবিধা দুটোই রয়েছে । এখন আমরা এই সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে জানব নিচে তা তুলে ধরা হয়েছে ।
সুবিধা:
-
জরুরি প্রয়োজন দ্রুত মেটানো যায়
-
কিস্তিতে পরিশোধ করতে সুবিধা
-
প্রয়োজনীয় কাজে বিনিয়োগ করা যায়
অসুবিধা:
-
সুদের কারণে বাড়তি টাকা ফেরত দিতে হয়
-
সময়মতো কিস্তি না দিলে জরিমানা হতে পারে
দ্রুত লোন অনুমোদন পাওয়ার টিপস
আপনি যদি দ্রুত ১ লক্ষ টাকা লোন অনুমোদন নিতে চান তাহলে বেশ কিছু টিপস অনুসরণ করতে পারেন । তাহলে আশা করি আপনি খুব দ্রুত ওই লোন অনুমোদন পাবেন । আপনাদের সুবিধার্থে এখন নিচে তুলে ধরা হলো দ্রুত লোন অনুমোদন পাওয়ার টিপস গুলো ।
-
সব কাগজপত্র আপডেট রাখুন
-
ব্যাংক স্টেটমেন্ট ভালো রাখুন
-
পূর্বের কোনো লোন থাকলে নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করুন
-
অনলাইন আবেদন করলে সঠিক তথ্য দিন
-
স্থায়ী আয় উৎস প্রমাণ করতে সক্ষম হন
আপনি যদি উল্লেখিত ধাপ গুলো অনুসরণ করুন তাহলে আশা করি খুব সহজে এবং দ্রুত লোন অনুমোদন পেতে পারেন ।
আমাদের শেষ কথা
আজকের পোস্টে আমরা কিভাবে ১ লক্ষ টাকার লোন পেতে পারি সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনেছি । আপনি যদি ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক অথবা ইমার্জেন্সি কোনো কারণে এক লক্ষ টাকা লোন নিতে চান তাহলে উল্লেখিত তথ্যগুলো ফলো করতে পারেন । আশা করি আপনার এক লক্ষ টাকা লোন খুব দ্রুত অনুমোদন হয়ে যাবে ।
আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার খুবই ভালো লেগেছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আপনি যদি সামান্যতম উপকার পান তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব ও ফ্যামিলিতে পোস্টটি শেয়ার করবেন । তাছাড়া আমার এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার যদি কোন মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন । ধন্যবাদ ।