আপনি কি দুবাই যেতে কত টাকা লাগে এই বিষয়ে অনলাইনে তথ্য খুঁজতেছেন? আপনার উত্তরটি যদি হ্যাঁ হয়ে থাকে তাহলে সঠিক জায়গাতে এসেছেন । কেননা আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করব দুবাইতে কোম্পানি ভিসা খরচ কত, ভিজিট ভিসা খরচ কত, দুবাই যেতে কত বছর বয়স লাগে ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কে ।
আমরা অনেকে দুবাইকে দেশ হিসেবে বিবেচনা করি । কিন্তু আসলে দুবাই কোন দেশের নাম নয় । আপনি যদি দুবাইকে দেশ হিসেবে মনে করে থাকেন তাহলে এটা সম্পূর্ণ ভুল । দুবাই হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উন্নত একটি শহরের নাম । এখানকার জনগণের মাথাপিছু আয় ও জীবনযাত্রার মান তুলনামূলক বেশি । তাছাড়া দুবাইয়ের মুদ্রার মান অনেক বেশি হয় ।
আরও পড়ুন ➝ সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায়
মূলত উন্নত জীবনযাপন ও উচ্চ বেতন পাওয়ার আশায় আমরা দুবাইতে প্রবাসী হিসেবে যেতে খুবই আগ্রহী । কারণ আপনি যদি বিদেশে গিয়ে বেশি পরিমাণে অর্থ উপার্জন না করতে পারেন তাহলে যাওয়া আর না যাওয়া একই কথা । তাই আমরা দুবাইকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি ।
আপনার চিন্তাভাবনা যদি থাকে আমি দুবাই যাব এবং সেখানে গিয়ে উচ্চ বেতনে চাকরি করব তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে । তাই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন । তো আর দেরি না করে চলুন আমাদের আজকের মূল আলোচনায় যাওয়া যাক ।
দুবাই যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে
আমরা যদি দুবাই যেতে চাই তাহলে সবার প্রথমে আমাদের কিছু কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে । শুধুমাত্র দুবাই নয় আপনি সারা বিশ্বের যে কোন দেশে যেতে চান তাহলে অবশ্যই শুরুতে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে । যা আপনার ভিসা তৈরি করতে সহায়তা করবে । এখন আমরা দুবাই যাওয়ার জন্য কি কি কাগজপত্র লাগে সেগুলো সম্পর্কে জানব । আপনাদের সুবিধার্থে নিচে তা তুলে ধরা হলো ।
- বৈধ বাংলাদেশী পাসপোর্ট
- ভিসা আবেদন ফরম পূরণ
- পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
- কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট (যদি থাকে)
- মেডিকেল সার্টিফিকেট
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
আপনি যদি কখনো দুবাই যেতে চান তাহলে অবশ্যই সবার প্রথমে উপরে উল্লেখিত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বা ডকুমেন্টগুলো সংগ্রহ করবেন । অতঃপর আপনার যদি কোন পরিচিত ব্যক্তি থাকে তাহলে তার কাছে জমা দিবেন । কিন্তু কোন পরিচিত ব্যক্তি না থাকলে এজেন্সি অথবা দালালের কাছে জমা দিবেন ।
তবে একটা বিষয় সব সময় মাথায় রাখবেন যদি দুবাই যেতে চান তাহলে বিশ্বস্ত এজেন্সি অথবা দালালের শরণাপন্ন হন । এজেন্সি অথবা দালাল কর্তৃক ভিসা পাওয়ার সাথে সাথে সেই ভিসা চেক করে নিন । তাহলে আশা করি আপনি পরবর্তীতে কোন ভোগান্তিতে পড়বেন না ।
দুবাই যেতে কত টাকা লাগে
দুবাই যেতে কত টাকা লাগে এই প্রশ্নটির উত্তর সম্পর্কে আমরা অনেকে জানতে চাই । আপনি যদি দুবাই যাওয়ার খরচ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে নির্ধারণ করতে হবে আপনি কোন ক্যাটাগরির ভিসা নিয়ে দুবাই যাবেন । বর্তমানে দুবাইতে অসংখ্য ক্যাটাগরির ভিসা রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করে আপনি দুবাইতে যেতে পারবেন ।
আপনি যদি দুবাই কোম্পানি ভিসা নিয়ে যান তাহলে তার খরচ এক রকম হবে । আবার যদি দুবাই ভিজিট ভিসা নিয়ে যান তাহলে তার খরচ আরেক রকম হবে । তাই আপনি কোন ক্যাটাগরির ভিসা নিয়ে দুবাই যাবেন তা প্রথমে নির্ধারণ করুন । তাহলেই সঠিকভাবে বলা যাবে দুবাই যেতে কত টাকা খরচ হয় ।
আরও পড়ুন ➝ ইন্দোনেশিয়া যেতে কত টাকা লাগে
তাছাড়া দুবাইতে আপনি দুইভাবে ভিসা নিয়ে যেতে পারবেন । প্রথমটি হচ্ছে সরকারিভাবে দ্বিতীয়টি হচ্ছে বেসরকারিভাবে । আমরা বেশিরভাগ মানুষ বেসরকারিভাবে সাধারণত দুবাই যেয়ে থাকি । তবে খুব কম সংখ্যক মানুষ যাদের ভাগ্য ভালো তারা সরকারিভাবে দুবাই যাওয়ার সুযোগ পায় ।
আপনি যদি সরকারিভাবে দুবাই যান তাহলে খরচ হতে পারে ৩ লাখ টাকা থেকে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত । কিন্তু যদি বেসরকারিভাবে দুবাই যান তাহলে খরচ হতে পারে ৫ লাখ টাকা থেকে ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত । তবে বেসরকারিভাবে যাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে গেলে কিছু টাকা কমের মাধ্যমে যেতে পারবেন ।
দুবাই কোম্পানি ভিসা খরচ কত
দুবাই কোম্পানি ভিসা খরচ কত হবে তা সাধারণত কাজের ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা যায় । দুবাইতে কোম্পানিতে আপনি বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারবেন । যেমনঃ মেকানিক, ড্রাইভিং, ইলেকট্রিক, প্লাম্বিং এবং প্লাম্বার ইত্যাদি কাজ । এই প্রতিটি ভিসার জন্য আলাদা আলাদা দাম রয়েছে ।
তাছাড়া অনেক সময় সরকারিভাবে কোম্পানি ভিসা নিয়ে দুবাই যাওয়া যায় । আমরা সবকিছু গড় হিসাব করার পর পাই সরকারিভাবে কোম্পানি ভিসার খরচ ৩ লাখ টাকা থেকে ৪ লাখ টাকা এবং বেসরকারিভাবে দুবাই কোম্পানি ভিসা ফরজ ৫ লাখ থেকে ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত ।
দুবাই ভিজিট ভিসা খরচ কত
আপনি যদি দুবাই বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে ঘুরে দেখতে চান ও উপভোগ করতে চান তাহলে ভিজিট ভিসা সংগ্রহ করতে হবে । দুবাই ভিজিট ভিসা আপনি দুইটি মাধ্যমে সংগ্রহ করতে পারবেন । প্রথমে হচ্ছে আপনি ভ্রমণ সম্পর্কিত ওয়েবসাইটে নিজে নিজে ভিসার জন্য আবেদন করে এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে কোন ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে ভিজিট ভিসা সংগ্রহ করে ।
দুবাই ভিজিট ভিসার খরচ ১ লাখ টাকা থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে । সাধারণত ভিজিট ভিসার মেয়াদ .২ মাস থেকে সর্বোচ্চ ৩ মাস পর্যন্ত হয়ে থাকে । তাই আপনি কত মাসের জন্য ভিজিট ভিসা সংগ্রহ করতে চাচ্ছেন তার উপর ভিত্তি করে আপনার খরচ নির্ধারণ করা যায় ।
দুবাই যেতে কত বছর বয়স লাগে
আমাদের অনেকের প্রশ্ন দুবাই যেতে কত বছর বয়স হওয়া বাধ্যতামূলক । আপনি যদি দুবাইতে প্রবাসী হিসেবে কাজ করতে যান তাহলে অবশ্যই বয়স ২২ বছরের উর্ধ্বে হতে হবে । আবার আপনি যদি একজন স্টুডেন্ট হিসেবে দুবাইতে পড়াশোনা করতে যান তাহলে বয়স ১৮ বছর হওয়া লাগবে ।
তবে দুবাই ভিজিট ভিসা সংগ্রহ করার জন্য বয়সের কোন সীমাবদ্ধতা নেই । ১৮ বছরের নিম্নে কোন ছেলে অথবা মেয়ের ভিজিট ভিসা সংগ্রহ করার জন্য অবশ্যই অভিভাবকের অনুমতি পত্র দরকার হবে । তাছাড়া কোন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অনুমতি পেলে ১৮ বছরের নিম্নে কোন স্টুডেন্ট দুবাই স্টুডেন্ট ভিসা সংগ্রহ করতে পারবে ।
আমাদের শেষ কথা
আজকের পোস্টে আমরা দুবাই যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে, কত টাকা লাগে, বয়স কত হতে হবে এবং খরচ কত সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনেছি । আপনি যদি কখনো দুবাই যেতে চান তাহলে উপরে উল্লেখিত স্টেপ গুলো ফলো করুন এবং ভিসা সংগ্রহ করে আপনার দুবাই যাত্রা সম্পন্ন করুন ।
সুপ্রিয় পাঠক, আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার খুবই ভালো লেগেছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আপনার যদি সামান্যতম উপকার হয় তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুবান্ধব ও ফ্যামিলিতে পোস্টটি শেয়ার করবেন । তাছাড়া আমার এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার যদি কোন মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন । ধন্যবাদ ।