বর্তমান সময়কার মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম সম্প্রদায় ভুক্ত উন্নত একটি দেশের নাম হচ্ছে কুয়ে ত । এখানে বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন । আমরা যারা মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোতে গিয়ে অর্থ উপার্জন করতে চাই তাদের প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন কত ।
কারণ আমরা যদি কখনো বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যাই তাহলে দেখা যাবে মোটামুটি ভালো টাকা খরচ হবে । কিন্তু তার বিপরীতে যদি আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণ বেতন না পাই তাহলে হতাশা হওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই । এক্ষেত্রে দেখা যাবে আপনি কুয়েত গিয়ে আরো ডিপ্রেশনে চলে যেতে পারেন ।
আরও পড়ুন ➝ সরকারি ভাবে জাপান যাওয়ার উপায়
আমরা যদি কখনো বাংলাদেশ থেকে কুয়েত আসি তাহলে প্রথম কাজ হচ্ছে ভালো কোন এজেন্সি অথবা দালাল বাছাই করা । তারপর জানতে হবে আপনাকে কোন কোম্পানিতে চাকরি দেওয়া হবে এবং বেতন কত টাকা ধরা হবে । তাহলে আশা করি আপনি কুয়েতে এসে ঠকার যাওয়ার সম্ভাবনা নেই ।
এখন আমরা জানবো বর্তমানে কুয়েতে কোম্পানির কোন কাজে বেশি চাহিদা রয়েছে এবং বেতন কত টাকা এই বিষয় সম্পর্কে । আপনি যদি ইতিমধ্যে কুয়েত যেতে আগ্রহী হন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে । তাই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন । তো চলুন শুরু করা যাক ।
কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন কত
আমরা জানি মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম উন্নত ও সম্ভ্রান্ত দেশের নাম হচ্ছে কুয়েত । এখানে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কলকারখানা, বাড়িঘর ও বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করা হয়ে থাকে । এই সকল কাজে প্রতিনিয়ত লাখ লাখ শ্রমিকের দরকার হয় । যার জন্য প্রতিবছর কুয়েত সরকার বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ শ্রমিক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে ।
সাধারণত কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন কাজের ধরনের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে । আপনি যদি অভিজ্ঞতা ছাড়া কুয়েত আসেন তাহলে নতুন অবস্থায় আপনার বেতন ধরা হবে সর্বনিম্ন ৩৫ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত । অতঃপর আপনার কাজের অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে দিন দিন বেতন বাড়তে থাকবে ।
আরও পড়ুন ➝ সিঙ্গাপুর যেতে কত টাকা লাগে
এখন আমরা কুয়েত কোম্পানি ভিসার কোন কাজের বেতন কত টাকা সে সম্পর্কে জানব । আপনাদের সুবিধার্থে একটি ছক তৈরি করা হলো । সেই ছকে কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন তুলে ধরা হলো ।
কাজের নাম | মাসিক বেতন |
---|---|
নির্মাণ শ্রমিক | ৩৫,৫০০ টাকা |
ডেলিভারি ম্যান | ৪৪,৩৭৫ টাকা |
এসি মেকানিক | ৪৮,১৭৫ টাকা |
ইলেকট্রিশিয়ান | ৪৪,৩৭৫ টাকা |
ড্রাইভিং | ৪৮,১৭৫ টাকা |
প্লাম্বিং | ৩৮,৫০০ টাকা |
ওয়েল্ডিং | ৩৮,৫০০ টাকা |
বর্তমান সময়কার বিভিন্ন অনলাইন ট্রাস্টেড সোর্স এবং গুগল সার্চ এর তথ্য অনুসারী উল্লেখিত কুয়েত কোম্পানি ভিসা কাজের বেতন তুলে ধরা হয়েছে । তবে সময়ের সাথে সাথে ও কাজের চাহিদার উপর ভিত্তি করে কুয়েত কোম্পানি ভিসার বেতন কিছুটা কম অথবা বেশি হতে পারে ।
কুয়েত কোম্পানি ভিসা কোন কাজে চাহিদা বেশি
আমরা অনেকেই জানতে চাই কুয়েত কোম্পানি ভিসায় কোন কাজে চাহিদা সবচেয়ে বেশি রয়েছে । এখানে আপনি সাধারণত কোম্পানি ভিসায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে কাজ করতে পারবেন । এখন আমরা জানব বর্তমানে কুয়েত কোম্পানি ভিসার ক্ষেত্রে কোন কাজে সবচেয়ে চাহিদা বেশি । নিচে তা তুলে ধরা হলো ।
- নির্মাণ শ্রমিক
- ডেলিভারি ম্যান
- এসি মেকানিক
- ইলেকট্রিশিয়ান
- ড্রাইভিং
- প্লাম্বিং
- ওয়েল্ডিং
আপনি যদি সম্পূর্ণ নতুন অবস্থাতেও উল্লেখিত কাজ করার জন্য কুয়েতে আসেন তাহলে শুরুতেই মোটা অংকের অর্থ উপার্জন করতে পারবেন । তবে আপনি যদি অভিজ্ঞতা অনুযায়ী উল্লেখিত কাজে আসেন তাহলে শুরুতে উচ্চ বেতনে আয় করার সুযোগ রয়েছে ।
কুয়েত কোম্পানি ভিসা পেতে কি কি লাগে
আমরা যদি কখনো কুয়েত কোম্পানি ভিসা পেতে চাই তাহলে এই ভিসার জন্য প্রথমে আবেদন করতে হবে । আবার আবেদন করার জন্য আমাদের দরকার হবে বেশ কিছু কাগজপত্র বা ডকুমেন্টের । এখন নিচে তুলে ধরা হলো কি কি কাগজপত্র থাকলে কুয়েত কোম্পানি ভিসা পাওয়া যায় ।
- জাতীয় পরিচয় পত্র ফটোকপি
- পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
- সম্পূর্ণ বৈধ বাংলাদেশি পাসপোর্ট
- মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
- পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
- ব্যাংক স্টেটমেন্টের ফটোকপি
- কুয়েত ভিসা আবেদন ফরম পূরণ
- কুয়েত ভিসা আবেদন ফি প্রদান
আপাতত উল্লেখিত কাগজপত্র থাকলে আপনি কুয়েত কোম্পানি ভিসা আবেদন করার সুযোগ পাচ্ছেন । আপনি ব্যক্তিগত অথবা কোন এজেন্সির মাধ্যমে কুয়েত কোম্পানি ভিসায় আবেদন করার জন্য সবার প্রথমে উল্লেখিত কাগজগুলো সংগ্রহ করুন ।
কুয়েত কোম্পানি ভিসা পাওয়ার সহজ উপায়
আমরা অনেকেই জানতে চাই কিভাবে খুব সহজে কুয়েত কোম্পানি ভিসা পাওয়া যায় । ইতিমধ্যে আপনার পরিবারের অথবা আত্মীয়-স্বজনের কেউ যদি কুয়েত অবস্থান করে থাকে তাহলে আপনি খুব সহজে উনার রেফারেন্সে কুয়েত যেতে পারবেন । এক্ষেত্রে ভিসা পাওয়ার পাশাপাশি অল্প টাকা খরচ করে কুয়েত যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।
তাছাড়া বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে সরকারিভাবে কুয়েত দেওয়ার সুযোগ রয়েছে । প্রতি বছর বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বিভিন্ন কোম্পানিতে কুয়েতে লোক নিয়োগ করা হয়ে থাকে । ওই সময় আপনি চাইলে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যেতে পারেন । এক্ষেত্রে আপনার খরচের পরিমাণ কম হয়ে থাকে ।
আবার কুয়েত কোম্পানি ভিসা পাওয়ার সর্বশেষ উপায় হচ্ছে কোন এজেন্সি অথবা দালালের শরণাপন্ন হওয়া । আপনি যদি কুয়েত কোম্পানি ভিসা পেতে চান তাহলে অবশ্যই বিশ্বস্ত এজেন্সি অথবা দালাল বাছাই করুন । তাহলে আশা করি আপনি খুব সহজে কুয়েত কোম্পানি ভিসা পেয়ে যাবেন ।
আমাদের শেষ কথা
আজকের পোস্টটিতে আমরা বর্তমান সময়কার মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম পরাশক্তি দেশ কুয়েতের ভিসা বেতন কত টাকা, কোন কাজে চাহিদা বেশি এবং ভিসা পাওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে আলোচনা করেছি । আপনি যদি কখনো কুয়েত গিয়ে অর্থ উপার্জন করতে চান তাহলে আমার দেখানো উল্লেখিত তথ্য গুলো ফলো করুন ।
সম্মানিত পাঠক, আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার খুবই ভালো লেগেছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে আপনি যদি সামান্যতম উপকার পান তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব ও ফ্যামিলিতে এই পোস্টটি শেয়ার করুন । তাছাড়া আমার এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার যদি কোন মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন । ধন্যবাদ ।