মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম উন্নত ও শীর্ষ ধনী দেশের নাম হচ্ছে ওমান । বর্তমানে ওমানে বাংলাদেশের হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন পেশায় নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন । আমরা যারা বিদেশ গিয়ে অর্থ উপার্জন করতে চাই তাদের কাছে স্বপ্নের দেশ হচ্ছে ওমান । তাই অনেকে জানতে চায় ওমান ভিসার দাম কত ।
আমরা যখন বিদেশ গিয়ে অর্থ উপার্জন করার চিন্তা মাথায় আনি তখন সবার প্রথমে মাথায় আসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর কথা । যেমনঃ সৌদি আরব। কাতার, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ওমান ইত্যাদি । এখানকার সবগুলো দেশ থেকে বর্তমানে ওমানে শুরুতে বেশি বেতন ধরা হয়ে থাকে ।
আরও পড়ুন ➝ ফ্রান্স যেতে কত টাকা লাগে
বর্তমানে বাংলাদেশের অসংখ্য তরুণ ও তরুণী উচ্চ শিক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও ভালো কোন চাকরি করার সুযোগ পাচ্ছে না । আপনি সরকারি চাকরির কথা বাদই দিলেন বেসরকারি ভালো কোন চাকরি পাচ্ছে না পর্যাপ্ত পরিমাণ শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও । অতঃপর ওই সকল তরুণ বা তরুণী বিদেশ গিয়ে টাকা ইনকাম করার চিন্তা ভাবনা করে থাকে ।
আপনার চিন্তা যদি থাকে কখনো বিদেশ গিয়ে অর্থ উপার্জন করবেন তাহলে অবশ্যই ওমানে আসুন । এখন আমরা ওমান ভিসার দাম কত এবং যেতে কি কি লাগে শো আরও বেশ কিছু তথ্য সম্পর্কে জানব । আপনি যদি এই বিষয়ে জানতে চান তাহলে পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন । তো চলুন শুরু করা যাক ।
ওমান ভিসার দাম কত
আমরা যদি কখনো বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে চাই সবার প্রথমে দরকার হবে ওমানের ভিসা তৈরি করা । কারণ আপনি চাইলে ভিসা ছাড়া কখনো ওমান যেতে পারবেন না । আবার যদি আপনি ভিসা ছাড়া বা জাল ভিসা নিয়ে কখনো ওমান যান তাহলে সেখানকার পুলিশ আপনাকে ধরবে । অতঃপর জেলেও প্রেরণ করে দিতে পারে ।
আমরা যদি কখনো ওমান যেতে চাই তাহলে প্রথমে ওমানের ভিসা তৈরি করব । কিন্তু বর্তমানে ওমানের ভিসার দাম কত এই সম্পর্কে আমরা জানিনা । এখানে সাধারণত বিভিন্ন ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে ভিসা পাওয়া যায় । তাই ওমানের প্রতিটি ভিসার জন্য আলাদা আলাদা খরচ হয়ে থাকে । এখন নিচে একটি ছক তৈরি করা হলো যেখানে আপনারা জানতে পারবেন ওমানের কোন ভিসার দাম কত টাকা ।
ভিসার নাম | ভিসার দাম |
---|---|
স্টুডেন্ট ভিসা | ৫০ হাজার – ১ লাখ টাকা |
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা | ৩ লাখ – ৫ লাখ টাকা |
টুরিস্ট ভিসা | ৫০ হাজার – ৮০ হাজার টাকা |
সাধারণত বাংলাদেশ থেকে ওমান যাওয়ার জন্য আমরা উল্লেখিত তিনটি ভিসা ব্যবহার করে থাকি । এখন আপনি যদি ওমানে গিয়ে অর্থ উপার্জন করতে চান তাহলে ওমান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিবেন । আবার পড়াশোনার জন্য স্টুডেন্ট ভিসা অথবা ভ্রমণ করার জন্য টুরিস্ট ভিসা নিতে পারেন ।
ওমান যেতে কি কি লাগে
আমরা যদি বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে চাই তাহলে প্রথমে বেশ কিছু কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে । কারণ ওই সকল কাগজপত্র গুলো ব্যবহার করে আপনি ওমান ভিসার জন্য আবেদন করবেন । এখন নিচে তুলে ধরা হলো কি কি কাগজপত্র থাকলে ওমান যাওয়া যায় ।
- বৈধ বাংলাদেশী পাসপোর্ট
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
- পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
- মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
- কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট (যদি থাকে)
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট ফটোকপি
- ওমান ভিসা আবেদন ফি
এখানে যতগুলো কাগজপত্রের নাম তুলে ধরা হয়েছে আপনি যদি কখনো ওমান ভিসা পেতে চান তাহলে প্রথমে উল্লেখিত কাগজপত্র গুলো সংগ্রহ করুন । অতঃপর বিশ্বস্ত কোন এজেন্সি অথবা দালালের কাছে উল্লেখিত কাগজপত্র গুলো জমা দিন ।
ওমানে কোন কাজের চাহিদা বেশি
আপনি যদি কখনো বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে চান তাহলে প্রথমে জেনে নিবেন বর্তমানে ওমানে কোন কাজের চাহিদা বেশি । তাহলে দেখা যাবে আমরা ওই কাজে অভিজ্ঞ হয়ে ওমান গেলে শুরুতে উচ্চ বেতনের চাকরি করতে পারব । এখন নিচে তুলে ধরা হলো ওমানে কোন কোন কাজে চাহিদা সবচেয়ে বেশি রয়েছে ।
- রাজমিস্ত্রী
- ইলেকট্রিশিয়ান
- ওয়েটার
- শেফ
- বাগানের কাজ
- সুপার মার্কেট
- ক্লিনার
- ড্রাইভিং
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী আমরা জানতে পারি উল্লেখিত কাজগুলোতে বর্তমানে মানে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে । আপনি যদি এই কাজগুলো থেকে যেকোন একটি বিষয়ে পারদর্শী হন তাহলে সারা বছর উচ্চ বেতনে কাজ করার সুযোগ পাবেন ।
ওমান যেতে কত বছর বয়স লাগে
আমরা অনেকে জানতে চাই ওমান যেতে কত বছর বয়স লাগে । এখানে সাধারণত বয়সের পরিমাণ ভিসার ক্যাটাগরির ধরনের উপর ভিত্তি করে হয়ে থাকে । আপনি যদি ওমান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে কাজ করতে চান তাহলে বয়স এক রকম হবে । আবার ওমান টুরিস্ট ভিসার জন্য বয়সের পরিমাণ আরেক রকম হবে ।
আরও পড়ুন ➝ দুবাই কাজের বেতন কত
সাধারণত ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় ওমান যেতে ১৮ বছরের উর্ধ্বে হওয়া লাগবে । তাছাড়া আপনি যদি ওমান স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে যেতে চান তাহলেও ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে হতে হবে । কিন্তু আপনি যদি ওমান টুরিস্ট ভিসা নিয়ে যান তাহলে ১৮ বছরের নিম্নে হলেও সেখানে যেতে পারবেন । তবে এখানে একটি শর্ত আপনাকে অবশ্যই মানতে হবে ।
১৮ বছরের নিম্নে কোন ব্যক্তি যদি ওমান টুরিস্ট ভিসা নিয়ে যেতে চায় তাহলে অবশ্যই অভিভাবকের অনুমতি পত্র থাকা লাগবে । তবে আপনার অভিভাবক সহ আপনি যদি টুরিস্ট ভিসা নিয়ে ওমান যান এক্ষেত্রে কোনরকম অনুমতি ছাড়াই ১৮ বছরের নিম্নে ওমান যাওয়ার সুযোগ পাবেন ।
আমাদের শেষ কথা
সম্মানিত পাঠক, আজকের পোস্টে আমরা মধ্যপ্রাচ্যের উন্নত ও শীর্ষ ধনী দেশ ওমান ভিসার দাম কত সম্পর্কে জানতে পেরেছি । তাছাড়া ওমান যেতে কত টাকা লাগে, কোন কাজে চাহিদা বেশি এবং কি কি কাগজপত্র লাগে এই বিষয়ে সম্পর্কেও বিস্তারিত জেনেছি । আপনি যদি কখনো ওমান যেতে চান তাহলে উল্লেখিত তথ্যগুলো ফলো করতে পারেন ।
আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার খুবই ভালো লেগেছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আপনি যদি সামান্যতম উপকার পান তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুবান্ধব ও ফ্যামিলিতে পোস্টটি শেয়ার করুন । তাছাড়া আমার এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার যদি কোন মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন । ধন্যবাদ ।