আমাদের অনেক ভাই ও বোন অনলাইনে খুশকি দূর করার উপায় সম্পর্কে তথ্য জানতে চান । আপনিও কি এই বিষয় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী রয়েছেন? আপনার উত্তরটি যদি হ্যাঁ হয় তাহলে সঠিক জায়গাতে এসেছেন । কারণ আজকের পোস্টটিতে আমরা চিরতরে খুশকি দূর করার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব ।
আমরা জানি খুশকি একটি মাথার ত্বকের সমস্যা যা আমাদের প্রত্যেকের জন্যই বিব্রতকর এবং অস্বস্তিকর হতে পারে । এটি মূলত ত্বকের শুকনো বা অতিরিক্ত তৈলাক্ত অবস্থার কারণে সৃষ্টি হয় । এর ফলে আমাদের মাথা থেকে চুল পড়তে থাকে এবং দেখা যায় এই সমস্যা দীর্ঘদিন থাকলে চুল শূন্য হয়ে পড়ে ।
আরও পড়ুন ➝ গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
তবে আপনি যদি সঠিক পরিচর্যা এবং নিয়মিত অভ্যাস মেনে চলেন তাহলে চিরতরে খুশকি দূর করা সম্ভব । আমরা অনেকে জানিনা খুশকি হলে কিভাবে তা দ্রুত নির্মূল করা যায় । এখন আমরা এই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব ।
আপনি যদি ইতিমধ্যে ঘরোয়া উপায়ে খুশকি দূর করার উপায় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে পোস্টটি আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে । তাই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন । তো চলুন আমাদের আজকের মূল আলোচনায় যাওয়া যাক ।
খুশকি হওয়ার কারণ কি কি
আমরা বেশিরভাগ মানুষ জানি না কেন আমাদের খুশকি হয়ে থাকে । এই বিষয় সম্পর্কে জানা আমাদের অতীত জরুরী । কারণ আমরা যদি কি কি কারণে খুশকি হয় এই বিষয়ে সম্পর্কে জানতে পারি তাহলে খুব দ্রুত খুশকি সম্পর্কিত সকল সমস্যা থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে পারব ।
এখন আমি আপনাদের সামনে খুশকি হওয়ার বেশ কয়েকটি কারণ তুলে ধরব ।আপনি যদি ওই সকল কারণ গুলো সম্পর্কে অবগত হন তাহলে আশা করি আপনার ভবিষ্যৎে কখনও খুশকি সমস্যার সৃষ্টি হবে না । নিচে ওই সকল খুশকি হওয়ার কারণ গুলো তুলে ধরা হলো ।
- আপনার ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হলে খুশকির ঝুঁকি বাড়ে ।
- অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বক হলে খুশকি হতে পারে ।
- নিয়মিত চুল পরিষ্কার না করলে তেল এবং মৃত কোষ জমে খুশকি হতে পারে ।
- পুষ্টিহীন খাবার খাওয়ার ফলে খুশকি হতে পারে।
- অতিরিক্ত টেনশন ও মানসিক চাপ খুশকি তৈরি করতে পারে
- এলার্জি সম্পর্কিত কিছু প্রসাধনী পণ্যের প্রতি সংবেদনশীলতা খুশকি হতে পারে ।
সাধারণত ছেলেদের খুশকি অথবা মেয়েদের খুশকি হওয়ার পেছনে উল্লেখিত কারণ গুলোই যথেষ্ট । তাই আমরা অবশ্যই উপরে উল্লেখিত বিষয় সম্পর্কে স্পষ্ট অবগত থাকবো । তাহলে এই খুশকি সম্পর্কিত সমস্যা থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে পারব ।
আরও পড়ুন ➝ গর্ভাবস্থায় ডালিম খেলে কি হয়
খুশকি দূর করার উপায়
আপনি জানলে হয়তো অবাক হবেন খুশকি দূর করার ঘরোয়া উপায় রয়েছে । কিন্তু কি কি ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করার মাধ্যমে খুব দ্রুত খুশকি সমস্যা থেকে পরিত্রান লাভ করা যায় সে সম্পর্কে আমরা অনেকে জানিনা । এখন আপনাদের সামনে নিচে এই বিষয় সম্পর্কে তুলে ধরা হলো ।
লেবুর রস ব্যবহার করুন
সাধারণত লেবুর রসে রয়েছে প্রাকৃতিক এন্টি ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য যা খুশকি কমাতে সাহায্য করে । এখন লেবুর রস ব্যবহার করে খুশকি থেকে পরিত্রাণের পদ্ধতি হলো –
- একটি তাজা লেবু কেটে রস বের করে নিন ।
- রস মাথার ত্বকে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন ।
- মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন ।
নারকেল তেল এবং লেবুর রস মিশ্রণ
নারকেল তেল মাথার ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং লেবুর রস অ্যান্টি-ফাঙ্গাল গুণাগুণ খুশকি দূর করতে কার্যকর । নারকেল তেল ও লেবুর রস মিশ্রণে খুশকি দূর করার পদ্ধতি হচ্ছে –
- ২ টেবিল চামচ নারকেল তেলে ১ টেবিল চামচ লেবুর রস মেশান ।
- মিশ্রণটি মাথার ত্বকে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিন ।
- শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ।
অ্যাপল সিডার ভিনেগার
অ্যাপল সিডার ভিনেগার মাথার পিএইচ ব্যালান্স বজায় রেখে খুশকির সমস্যা কমায় । নিচে অ্যাপল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করার মাধ্যমে খুশকি দূর করার পদ্ধতি হচ্ছে –
- পানির সঙ্গে সমপরিমাণ অ্যাপল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে নিন ।
- এই মিশ্রণটি মাথার ত্বকে স্প্রে করে ২০ মিনিট রেখে দিন ।
- ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন ।
মেথির বীজের পেস্ট
আমরা জানি মেথি একটি প্রাকৃতিক প্রতিষেধক যা খুশকি দূর করতে সহায়ক । মেথির বীজের পেস্ট ব্যবহার করে খুশকি দূরের পদ্ধতি –
- ২ টেবিল চামচ মেথির বীজ সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।
- সকালে এটি পেস্ট করে মাথার ত্বকে লাগান।
- ৩০ মিনিট পর চুল ধুয়ে ফেলুন।
খুশকি প্রতিরোধে করণীয়
আমরা ইতিমধ্যে ঘরোয়া উপায়ে খুশকি দূর করার পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করেছি । কিন্তু কথা হচ্ছে উল্লেখিত পদ্ধতি অবলম্বন করার পাশাপাশি আমাদের খুশকি প্রতিরোধ করার আরো অসংখ্য করণীয় রয়েছে । এখন আপনাদের সুবিধার্থে সেই সকল করণীয় গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো –
নিয়মিত চুল পরিষ্কার রাখুন
শ্যাম্পু দিয়ে চুল ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার রাখুন । খুশকি প্রতিরোধে অ্যান্টি-ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু ব্যবহার করুন ।
সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন
ভিটামিন বি, জিঙ্ক এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খেলে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো থাকে ।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন
ত্বক হাইড্রেট রাখতে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি ।
প্রসাধনী পণ্য ব্যবহারে সতর্ক থাকুন
কম কেমিক্যাল যুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন এবং নতুন প্রোডাক্ট ব্যবহারের আগে স্কিন টেস্ট করুন ।
আমাদের শেষ কথা
সম্মানিত পাঠক, আজকের পোস্টটিতে আমরা ঘরোয়া উপায়ে চিরতরে খুশকি দূর করার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করেছি । তাছাড়া মূলত কি কি কারণে খুশকি হতে পারে এবং খুশকি প্রতিরোধে আমাদের কি কি করণীয় রয়েছে সে সম্পর্কেও আলোচনা করেছি । আপনি যদি ইতিমধ্যে খুশকি সম্পর্কিত সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে উল্লেখিত তথ্য গুলো ফলো করুন ।
আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার খুবই ভালো লেগেছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আপনি যদি সামান্যতম উপকার পান তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব ও ফ্যামিলিতে এই পোস্টটি শেয়ার করুন । তাছাড়া আমার এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার যদি কোন মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন । ধন্যবাদ ।