আমাদের অনেক ভাই ও বোন দুবাই হোটেল ভিসা বেতন কত এ সম্পর্কে জানতে চান । আপনিও কি এই বিষয়ে জানতে আগ্রহী রয়েছেন? আপনার উত্তরটি যদি হ্যাঁ হয় তাহলে সঠিক জায়গাতে এসেছেন । কারণ আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করব বর্তমান সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ধনী শহর দুবাইতে হোটেল ভিসার খরচ কত, কি কি কাজ করতে হবে এবং বেতন কত ।
বর্তমানে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ বিদেশে প্রবাসী হিসেবে কাজ করছেন । তবে বেশিরভাগ বাংলাদেশী এশিয়ার বিভিন্ন দেশের অবস্থান করছেন । যেমনঃ সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত এবং কিরগিজস্তান ইত্যাদি । তাছাড়া কেউ কেউ ইউরোপের দেশ ফ্রান্স, ইতাল্ জার্মানি ও রোমানিয়া এবং আমেরিকার বিভিন্ন দেশে প্রবাসী হিসেবে কাজ করছেন ।
আরও পড়ুন ➝ দুবাই হোটেল ভিসা বেতন কত
মূলত আমাদের দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণে চাকরির সুব্যবস্থা নেই এই কারণে দেশে বেকারত্ব হার বেড়েছে । দেশে যে পরিমাণে শিক্ষিত যুবক যুবতী রয়েছে সেই তুলনায় সরকার চাকরির সুব্যবস্থা করতে পারছে না । আর চাকরি না থাকলে একজন বেকার ব্যক্তি বলতে পারবে তার মূল্য কতটুকু পরিবার ও সমাজে রয়েছে ।
যখন আমাদের দেয়ালে পিঠ থেকে যায় তখন আমরা অর্থ উপার্জনের জন্য বিদেশেও যেতে পিছপা হই না । প্রবাসীরা বিদেশে গিয়ে অনেক কষ্ট করে অর্থ উপার্জন করে তা আমরা জেনেও সেখানে নিজের ভবিষ্যৎ এবং পরিবারের কথা চিন্তা ভাবনা করে কাজ করতে চাই । তারপর সেখানে কাজ করে দেশের জন্য বিপুল পরিমাণে রেমিট্যান্স নিয়ে আসি ।
আমাদের পরিবারের আত্মীয়-স্বজনের অথবা আশপাশের অনেক মানুষ বর্তমানে দুবাই প্রবাসী হিসেবে কাজ করছেন । অনেকে হয়তো দুবাইকে দেশ হিসেবে মনে করেন ।কিন্তু দুবাই হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি শহরের নাম । আপনি যদি এই কথাটি না জেনে থাকেন তাহলে এখন জেনে রাখুন, দুবাই হচ্ছে একটি শহরের নাম ।
বর্তমানে দুবাইতে বিভিন্ন ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে লোক নিয়োগ দেওয়া হয় । যেমন দুবাই কোম্পানি ভিসা, দুবাই হোটেল ভিসা, দুবাই জব ভিসা, এবং দুবাই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ইত্যাদি । তবে এখন সবচেয়ে বেশি পরিমাণে লোক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে দুবাই হোটেল ভিসায় । আপনি যদি দুবাই হোটেল ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন । তো চলুন শুরু করা যাক ।
দুবাই হোটেল ভিসা বেতন কত
আপনি যদি দুবাইতে হোটেল ভিসা নিয়ে কাজ করতে আসেন তাহলে বেতন কত টাকা হবে সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন । তবে এই বিষয়ে জানার পূর্বে আপনি কি হোটেল কাজে পারদর্শী নাকি একদম নতুন সেটা আগে জানতে হবে । যদি হোটেল কাজে পারদর্শী থাকেন তাহলে শুরুতেই মোটা অংকের অর্থ উপার্জন করতে পারবেন ।
তবে আপনি যদি সম্পূর্ণ নতুন অবস্থাতেও দুবাইতে হোটেল কাজে আসেন তাহলেও অর্থ উপার্জন করতে পারবেন । তবে পারদর্শী ব্যক্তির থেকে আপনি নতুন অবস্থায় কম টাকা বেতন পাবেন । এখন আমরা জানবো দুবাইতে নতুন অবস্থায় এবং পারদর্শী অবস্থায় কত টাকা বেতন ধরা হয় ।
আরও পড়ুন ➝ কানাডা ভিসা পাওয়ার সহজ উপায়
সম্পূর্ণ নতুন অবস্থায় দুবাইতে হোটেল ভিসার বেতন ধরা হয় ৪০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত । আপনি যদি হোটেলের কোন কিছু কাজ নাও জানেন তবুও নতুন অবস্থায় আপনাকে এই টাকা বেতন দেয়া হবে । তারপর আস্তে আস্তে আপনি যখন হোটেল কাজে পারদর্শী হবেন তখন আপনার বেতন বৃদ্ধি করা হবে ।
কিন্তু আপনি যদি হোটেল কাজে অভিজ্ঞ থাকেন তাহলে নতুন অবস্থায় বেতন ৮০ হাজার টাকা থেকে ৯০ হাজার টাকা পাবেন । তাহলে বুঝতেই পারছেন একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি হোটেল কাজে কত বেশি পরিমানে অবস্থা উপার্জন করতে পারে । তাই যদি দুবাইতে মোটা অঙ্কের উপার্জন করতে চান তাহলে অবশ্যই হোটেল কাজে পারদর্শী হয়ে আসুন ।
দুবাই হোটেলে কি কি কাজ রয়েছে
আমাদের অনেকের প্রশ্ন দুবাইতে হোটেল কি কি কাজ রয়েছে । হ্যাঁ, এই বিষয়টা সম্পর্কে আমাদের জানা দরকার । আমরা যদি কখনো হোটেল ভিসা নিয়ে দুবাই যাই তাহলে আমাদের দিয়ে কি কি কাজ করানো হবে । কেননা আমরা যে কোন কাজ করার জন্যই কিন্তু দুবাইতে হোটেল ভিসাতে যাব না । এখন দুবাইতে হোটেলে কি কি কাজ রয়েছে তা তুলে ধরা হলো ।
- রাধুনী
- ওয়েটার
- রুম সার্ভিস
- ক্লিনার
আপনি যদি সম্পূর্ণ নতুন অবস্থায় দুবাইতে হোটেল ভিসা নিয়ে যান তাহলে ওয়েটার হিসেবে কাজ করতে পারেন । তাছাড়া চাইলে রুম সার্ভিস ম্যান হিসেবেও কাজ করতে পারেন । কিন্তু আপনি যদি রাধুনী হিসেবে কাজ করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে রান্নাবান্না কাজে পারদর্শী হতে হবে ।
তাছাড়া আপনি যদি দেশে পরিচ্ছন্নতা কর্মী (ক্লিনার) হিসেবে কাজ করে থাকেন তাহলে দুবাইতেও হোটেল ভিসা নিয়ে সেখানে একই কাজ করতে পারেন । এক্ষেত্রে আপনার বেতন শুরু থেকেই ভালো ধরা হবে । মোট কথা আপনি উপরোক্ত যে কাজে পারদর্শী সেই কাজে কাজ করতে পারেন ।
দুবাই হোটেল ভিসার খরচ কত
আমরা ইতিমধ্যে দুবাইতে হোটেল ভিসায় বেতন কত টাকা ধরা হয় এবং হোটেলে কি কি কাজ করানো হয় সে সম্পর্কে জেনেছি । এখন আমরা দুবাই হোটেল ভিসার খরচ কত টাকা সে সম্পর্কে জানব । এর মূল কারণ হচ্ছে আমরা যদি কোন দালাল অথবা এজেন্সির মাধ্যমে হোটেল ভিসা তৈরি করি তাহলে ভিসার সঠিক দাম সম্পর্কে জানা দরকার ।
আমরা যদি দুবাইয়ের হোটেল ভিসার সঠিক খরচ সম্পর্কে না জানি তাহলে কিন্তু দালাল চক্র আমাদের ঠকিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । তবে সবচেয়ে বেশি ভালো হয় আপনি নিজে থেকে যদি হোটেল ভিসার যাবতীয় কাজকর্ম সম্পাদন করতে পারেন । তাছাড়া আপনি চাইলে আপনার পরিবারের কেউ যদি দুবাইতে থাকে তাহলে ওনার রেফারেন্সে হোটেল ভিসা করতে পারেন ।
আপনার পরিবারের কেউ যদি দুবাই থাকে তাহলে ওনার রেফারেন্সে হোটেল ভিসা নিয়ে যেতে খরচ হবে ৩ লাখ টাকা থেকে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত । কিন্তু আপনি যদি দালাল অথবা এজেন্সির মাধ্যমে হোটেল ভিসায় দুবাই যান তাহলে খরচ হবে ৫ লাখ থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত ।
আমাদের শেষ কথা
সম্মানিত পাঠক, আজকের পোস্টে আমরা দুবাই হোটেল ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনেছি । যেমনঃ হোটেল ভিসার বেতন কত ,ভিসার দাম কত এবং হোটেলে কি কি কাজ করানো হয় ইত্যাদি । আপনি যদি কখনো দুবাইয়ে হোটেল ভিসা নিতে চান তাহলে অবশ্যই উপরুক্ত তথ্য ফলো করবেন । তারপর আপনার ভিসার কাজকর্ম সম্পাদন করবেন ।
আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার খুবই ভালো লেগেছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আপনি যদি সামান্যতম উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব ও ফ্যামিলিতে শেয়ার করবেন । তাছাড়া এই পোস্ট সম্পর্কে যদি আপনার কোন মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না । ধন্যবাদ ।