সম্মানিত পাঠক, আপনি কি প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করার উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? আপনার উত্তরটি যদি হ্যাঁ হয় তাহলে সঠিক জায়গাতে এসেছেন । কারণ আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করব কিভাবে অনলাইন থেকে প্রতি মাসে ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করা যায় ।
আমার এই কথাটি শোনার পর অনেকের কাছে বিষয়টা সত্যি অবাক করার মতো হতে পারে । আসলেই কি প্রতি মাসে অনলাইন থেকে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা ঘরে বসে আয় করা সম্ভব? হ্যাঁ আপনি চাইলে ৩০ থেকে ৪০ হাজার নয় চাইলে ৫০ থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঘরে বসে আয় করতে পারবেন ।
আরও পড়ুন ➝ দিনে ৫০০ টাকা ইনকাম অ্যাপস ২০২৪
দেখুন আমরা পড়াশোনা করি তারপর পড়াশোনা শেষ করে বিভিন্ন কোম্পানিতে ও সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করতে থাকি । কিন্তু আমাদের সরকারি ও বেসরকারি কোন চাকরি হতে চায় না । যদিও বা ভাগ্যক্রমে বেসরকারি চাকরি হয় তাও আমাদের বেতন খুব অল্প টাকা ধরা হয় যা দিয়ে সুন্দরভাবে জীবন উপভোগ করা যায় না ।
আর সরকারি চাকরির কথা কি বলবো এটা তো বর্তমানে সোনার হরিণ হয়ে গেছে । আপনার মামা ও খালো না থাকলে এখন কোন চাকরি পাওয়া যায় না । তার ওপর আপনাকে মোটা অংকের টাকা ঘুষ দিতে হবে । অতঃপর আপনার যদি চাকরি হয় তাও সেটা ভাগ্যের উপর ।
কিন্তু আমরা যারা ইতিমধ্যে পড়াশোনা করছি অথবা পড়াশোনা শেষ করেছি তারা এদিক সেদিক চাকরির জন্য খুঁজা খুঁজি না করে আমরা চাইলে ঘরে বসে প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত অনায়াসে ইনকাম করতে পারি । কিন্তু তার জন্য আমাদের দরকার পর্যাপ্ত পরিশ্রম ও সঠিক গাইডলাইন সম্পর্কে ।
এখন আমরা কিভাবে অনলাইনে ঘরে বসে প্রতি মাসে ৩০০০০ থেকে ৪০ হাজার টাকা স্মার্ট ইনকাম করা যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানবো । আপনি যদি এই বিষয়ে জানতে চান তাহলে পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন । তো দেরি না করে চলুন আমাদের আজকের মূল আলোচনাতে যাওয়া যাক ।
মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করার সেরা ১০ টি উপায়
বর্তমানে ঘরে বসে অনলাইন থেকে টাকা উপার্জন করার জন্য অসংখ্য উপায় বা পদ্ধতি রয়েছে । কিন্তু একজন ব্যক্তি চাইলে সব উপায় অবলম্বন করার মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে পারবেনা । আমরা হয়তো দুই একটা উপায় বা কেউ কেউ যাদের মেধা শক্তি ভালো তারা কয়েকটি উপায় অবলম্বন করে অনলাইন থেকে মোটা অংকের অর্থ উপার্জন করতে পারে ।
আরও পড়ুন ➝ ভিডিও দেখে টাকা ইনকাম ২০২৪ [অ্যাপ ও ওয়েবসাইট]
কিন্তু আমরা এখন জানব অনলাইন থেকে টাকা উপার্জন করার সবচেয়ে সহজ ও সেরা ১০ টি উপায় সম্পর্কে । যে উপায়গুলো থেকে আপনি যদি কোন একটি বিষয়ে অভিজ্ঞ হদ তাহলে প্রতি মাসে মোট অংকের অর্থ উপার্জন করতে পারবেন । আপনাদের সুবিধার্থে এখন সেই সেরা ১০ টি উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো ।
অনলাইন কোর্স বিক্রি করা
ধরে নিলাম, আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইনে অভিজ্ঞ আছেন অথবা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরি, ডিজিটাল মার্কেটিং এবং ডাটা এন্ট্রি ইত্যাদি যে কোন একটি বিষয়ে অভিজ্ঞ আছেন । আপনি চাইলে আপনার এই অভিজ্ঞতা অবলম্বন করার মাধ্যমে অনলাইন থেকে মোটা অংকের অর্থ উপার্জন করতে পারেন । অনেকে হয়তো বলতে পারেন যে ফ্রিল্যান্সিং করে এই অভিজ্ঞতা গুলো দিয়ে অর্থ উপার্জন করা যায় ।
হ্যাঁ অনেক সময় দেখা যায় আপনার হাতে কোন কাজ থাকে না অথবা আপনার কাজ থাকলেও যে অর্থ পেয়ে থাকেন সে দিয়ে আপনি স্মার্ট ক্যারিয়ার চালাতে পারেন না । কিন্তু আপনি চাইলে গ্রাফিক্স ডিজাইনে অভিজ্ঞ হলে তাহলে সে বিষয়ে কোর্স তৈরি করতে পারেন । অথবা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বা যে বিষয়ে আপনি অভিজ্ঞ সেই বিষয়ে ভিডিও কোর্স তৈরি করতে পারেন ।
তাছাড়া বর্তমানে আপনার লাইভ কোর্স চালু করতে পারেন যেখানে বিভিন্ন স্টুডেন্ট আপনার করতে ভর্তি হবে । অতঃপর তাদের থেকে আপনি কোর্স ফি বাবদ মোটা অঙ্গের টাকা উপার্জন করতে পারবেন । আপনি যত ভালো কোর্স তৈরি করতে পারবেন আপনার ইনকাম ঠিক তত বেশি হবে। তাই আপনার অভিজ্ঞতা কে কাজে লাগিয়ে প্রতি মাসে কোর্স বিক্রি করে ৩০০০০ থেকে ৪০ হাজার টাকা অনায়াসে উপার্জন করতে পারবেন ।
এফিলিয়েট মার্কেটিং করা
আমরা হয়তো অনেকে এফিলিয়েট মার্কেটিং নামটি শুনে থাকব । বর্তমানে বাংলাদেশের অনেক মানুষ বিশেষ করে তরুণ ও তরুণীরা এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের দিকে ঝুঁকছে । কারণ অনলাইন থেকে খুব অল্প সময়ে অর্থ উপার্জন করার নাম এফিলিয়েট মার্কেটিং । এই উপায় অবলম্বন করার মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারী শুরু থেকে প্রতি মাসে ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারে ।
আরও পড়ুন ➝ ফ্রি লটারী খেলে টাকা ইনকাম করার উপায়
এফিলিয়েট মার্কেটিং বলতে মূলত ধরুন আপনি amazon ওয়েবসাইটে এফিলিয়েট মার্কেটিং এ প্রোগ্রামে যোগদান করলেন । অতঃপর তাদের বিভিন্ন পণ্যের এফিলিয়েট লিংক জেনারেট করলেন । অতঃপর সেই লিংকগুলো আপনি ফেসবুক, ইউটিউব এবং টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে ছড়িয়ে দিলেন ।
দিনশেষে ওই লিংকগুলোতে যারা যারা ক্লিক করে বিভিন্ন পণ্য কিনবে সেই পণ্যের উপর আপনি একটি কমিশন পাবেন । সাধারণত amazon পণ্যগুলোর ওপর ৫ থেকে ১০% পর্যন্ত কমিশন পাওয়া যায় । ধরুন কোন একটি পণ্যের মূল্য ধরা হয়েছে ১০০ ডলার তাহলে কোন ব্যক্তি যদি ওই পণ্যটি কিনে তাহলে হিসাব করলে ৫% পাঁচ ডলার বোনাস পেয়ে যাবেন ।
এইভাবে এমাজন আলিবাবা, ইবে এবং ক্লিক ব্যাংক সহ আরো অন্যান্য জনপ্রিয় ই-কমার্স ওয়েবসাইট গুলোতে নিজের এফিলিয়েট একাউন্ট তৈরি করুন । অতঃপর সেখান থেকে যে পণ্যগুলোর রিভিউ খুব ভালো সেগুলোর লিংক জেনারেট করুন এবং আপনার বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে ছড়িয়ে দিন । তাহলে আশা করি আপনি প্রতিমাসে শুরু থেকেই অনায়াসে ত্রিশ হাজার থেকে চল্লিশ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন ।
ই-কমার্স ব্যবসা করা
আমাদের অনেকের কাছে মোটা অংকের অর্থ আছে কিন্তু আমরা চাচ্ছি কোন একটি দোকান ভাড়া নিবো এবং সেখান থেকে যে কোন একটি বিষয়ের উপর ব্যবসা তৈরি করব । সেটা হতে পারে কসমেটিক্স ব্যবসা, জামা কাপড়ের ব্যবসা, রেস্টুরেন্ট ব্যবসা এবং ঔষধের ব্যবসা সহ আরো অন্যান্য ব্যবসার সম্পর্কে । কিন্তু দেখা যায় এই ব্যবসা গুলো করার ক্ষেত্রে আমাদের ভালো কোন জায়গায় দোকান ভাড়া নিতে হয়।
বর্তমানে আপনি যদি কোন ভালো একটি জায়গায় ব্যবসা করতে যান তাহলে ওই দোকান এডভান্স বাবদ আপনাকে ৫ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানত রাখতে হয় । তবে এমন এমন জায়গা রয়েছে যেখানে আপনি ব্যবসা করতে গেলে ১০ লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানত রাখতেই হবে । অন্যথায় আপনি দোকান ভাড়া নিতে পারবেন না ।
তাহলে প্রথমেই আপনাকে ৫ লাখ থেকে ১০ লাখ বা ১০ লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত দোকান ভাড়ার জন্য জামানত দিয়ে দোকান নিতে হচ্ছে । অতঃপর সেই দোকান বিভিন্ন পণ্য উঠানোর জন্য আরো অনেক টাকা দরকার হবে । কিন্তু আপনি যদি ই-কমার্স ব্যবসা করেন সে ক্ষেত্রে আপনার কোন দোকান ভাড়া বাবদ এডভান্স টাকা দিতে হবে না ।
সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে দোকানে যেমন আপনি পণ্য কিনে সেই দোকান ভরপুর করে রাখবেন তারপর বিক্রি করবেন । ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে সেরকম নয় । আপনাকে কোন পণ্য অগ্রিম কিনে রাখতে হবে না । আপনি শুধুমাত্র পণ্যের ছবি ওয়েবসাইটে অথবা ফেসবুক পেইজে প্রদান করবেন তারপর গ্রাহকরা সেই বন্ধের অর্ডার করবে ।
অতঃপর আপনি ভালো কোন শপ থেকে সেই পণ্য কিনে আপনার গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিলেন । ব্যাস এক্ষেত্রে আপনি কোন ইনভেস্ট না করেই শুরু থেকেই মোটা অংকের অর্থ উপার্জন করতে পারছেন । আর এই উপায়টা অবলম্বন করে বর্তমানে লাখ লাখ তরুণ ও তরুণী নিজের সফল ক্যারিয়ার ইতিমধ্যে দাঁড় করিয়েছে ।
অনলাইনে টিউশনি করা
আপনি যদি একজন শিক্ষক হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই টিউশনিকে প্রাধান্য দিয়ে থাকবেন । আমরা বর্তমানে যারা ছাত্র ও ছাত্রী রয়েছি তারা বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনা করার জন্য শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট পড়ে থাকি । কিন্তু আমাদের অনেক শিক্ষক আছে যারা চাইলে কিন্তু অনলাইনে তার স্টুডেন্টদেরকে প্রাইভেট পড়াতে পারেন ।
ধরে নিলাম আপনি একজন গণিত শিক্ষক অথবা ইংরেজি শিক্ষক তাহলে আপনি স্টুডেন্টদেরকে অনলাইনে গণিত অথবা ইংরেজি বিষয়ের টিউশনি করাতে পারেন । যদি আপনি সরাসরি ভাবে ছাত্রদেরকে টিউশনি করান সে ক্ষেত্রে দেখা গেল আপনার পরিচিত স্কুল অথবা কিন্ডারগার্টেনের স্টুডেন্টরা আপনার কাছে শুধুমাত্র প্রাইভেট পড়তে আসবে ।
কিন্তু আপনি যদি অনলাইনে টিউশনি করান তাহলে দেখা যাবে শুধুমাত্র আপনার পরিচিত স্কুল অথবা কিন্ডারগার্টেনের স্টুডেন্টরা আপনার কাছে প্রাইভেট পড়বে তাই নয় বরঞ্চ অনেক অপরিচিত স্কুল ও কিন্ডারগার্টেন এর স্টুডেন্টরাও আপনার কাছে প্রাইভেট পড়বে । এক্ষেত্রে দেখা যাবে আপনার খুব অল্প সময়ে অনেক বেশি অর্থ উপার্জন হয়ে যাবে ।
ফ্রিল্যান্সিং করা
আমরা বেশিরভাগ মানুষ অনলাইনে অর্থ উপার্জন করা বলতে ফ্রিল্যান্সিং করাকে বুঝে থাকি । ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে মুক্ত পেশা যে পেশাই কোন সরাসরি সরকারি চাকরি অথবা বেসরকারি চাকরির মত কোন জবাবদিহিতা নেই । আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং পেশাই কাজ করেন তাহলে টাকা পাবেন আর যদি কাজ না করেন কোন টাকা পাবেন না ।
আপনি নিজের মতো করে নির্দিষ্ট সময় বেছে নিয়ে কাজ করতে পারবেন এবং বায়ারদের থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন । বর্তমানে বাংলাদেশের অসংখ্য তরুণ ও তরুনীরা নিজেদের স্মার্ট ক্যারিয়ার দাঁড় করানোর উদ্দেশ্যে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় ঢুকে পড়ছেন । যেখানে একজন তরুণ তরুণী চাইলে যে কোন একটি বিষয়ে খুব অল্প সময়ে নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারে ।
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং করে অর্থ উপার্জন করার জন্য অসংখ্য মাধ্যম রয়েছে । যেমনঃ গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট মোবাইলে অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, ডাটা এন্ট্রি এবং কন্টেন্ট রাইটিং ইত্যাদি । আপনি যদি এই বিষয়গুলো থেকে যেকোনো একটি বিষয়ে পারদর্শী হন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় নিজেকে জড়াতে পারেন ।
তবে যদি আপনি ফ্রিল্যান্সিং পেশায় নিজেকে জড়াতে চান তাহলে উপরে উল্লেখিত যে কোন একটি বিষয়ে শুরুতে পারদর্শী হন । অতঃপর আপনাকে অবশ্যই ইংরেজি বিষয়ে অভিজ্ঞ হতে হবে । কারণ ফ্রিল্যান্সিং কাজগুলো করার ক্ষেত্রে আপনাকে বাইরের দেশের বায়ারদের সাথে ইংরেজিতে কথা বলতে হবে । তাহলে আপনি অনেক বেশি অর্ডার পাবেন এবং ইনকামও আপনার হু হু করে বেড়ে যাবে ।
ব্লগিং করা
অনলাইনে টাকা ইনকাম করার জন্য যতগুলো উপায় রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে ব্লগিং করে টাকা উপার্জন করা । বিশেষ করে যারা স্টুডেন্ট আছেন অথবা মহিলাদের ক্ষেত্রে গৃহিণী আছেন তারা চাইলে ঘরে বসে ব্লগিং করতে পারেন এবং প্রতি মাসে একটা স্মার্ট ইনকাম করতে পারেন । অনেকে হয়তো ব্লগিং করাকে শুরুতে পার্ট টাইম হিসেবে ইনকামের মাধ্যমে হিসেবে বেছে নেন ।
কিন্তু একটা সময় এসে দেখা যায় এই ব্লগিং আপনার ফুলটাইম ক্যারিয়ার হিসেবে নেওয়া যায় । আপনি যদি ব্লগিং বিষয়ে নিজেকে মেলে ধরতে পারেন তাহলে কোন সরকারি অথবা বেসরকারি চাকরির দিকে নিজেকে জড়াতে হবে না । শুধুমাত্র ভালো মানের আর্টিকেল লিখে প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন ।
তবে একজন ব্যক্তি ব্লগিং করে বেশ কিছু উপায় অবলম্বন করার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারে । সেগুলো হচ্ছে
- গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে
- এফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করে
- বিভিন্ন স্পন্সরশিপ কমিশন নিয়ে
মূলত এই কয়েকটি উপায় অবলম্বন করেন একজন ব্যক্তি চাইলে প্রতি মাসে মোট অংকের অর্থ উপার্জন করতে পারে ব্লগ ব্যবহার করার মাধ্যমে ।
একজন সফল ব্লগার হওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে ভালো মানের আর্টিকেল লেখা শিখতে হবে । অতঃপর সেই ব্লগের মার্কেটিং করতে হবে । আপনার ব্লগে যত বেশি পরিমাণে ভিজিটর আসবে আপনার ইনকাম ঠিক তত বেশি পরিমাণে বেড়ে যাবে । তাই আপনি যদি ব্লগিং করে অর্থ উপার্জন করতে চান তাহলে অবশ্যই ভালো মানের আর্টিকেল লিখার পাশাপাশি ভিজিটরের দিকে নজর দিন ।
মোবাইল অ্যাপ তৈরি করা
ধরুন আপনি অনলাইনে কোরআন তেলাওয়াত শুনতে যাচ্ছেন অথবা আরবি অর্থ সহ কোরআন তেলাওয়াত পড়তে চাচ্ছেন । এক্ষেত্রে গুগল প্লে স্টোরে আসেন এবং সেখানে বিভিন্ন অ্যাপ খুঁজে থাকেন । বর্তমানে অনেক অ্যাপ রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি কুরআন তেলাওয়াত শুনতে পারবেন অথবা বাংলা অর্থসহ পড়তে পারবেন ।
এই অ্যাপগুলো কিন্তু আপনা আপনি ভাবে তৈরি হয়ে যায়নি এবং গুগল প্লে স্টোরে পাবলিশ হয়নি । এই অ্যাপ গুলো কোন না কোন ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছে । সেই ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠান এই অ্যাপ গুলোতে গুগল এডসেন্সের বিজ্ঞাপন বসিয়ে দিয়েছে । একজন ব্যক্তি যখন এই অ্যাপ ডাউনলোড করবে এবং শুনবে অথবা পড়বে ওই অ্যাপে কিন্তু google এডসেন্সের বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হবে ।
ওই অ্যাপগুলো যত বেশি পরিমাণে ডাউনলোড হবে এবং গ্রাহকরা শুনবে অথবা পড়বে ঠিক তত বেশি পরিমাণে google এডসেন্সের বিজ্ঞাপন দেখানো হবে । অতঃপর সেই বিজ্ঞাপনের উপর ভিত্তি করে গুগল ওই ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠানকে অর্থ প্রদান করবে । মূলত একজন ব্যক্তি অ্যাপ তৈরি করার মাধ্যমে এভাবে নিজের ইনকাম জেনারেট করতে পারেন ।
আপনার যে বিষয়ে অ্যাপ তৈরি করার চিন্তাভাবনা আছে আপনি সেই বিষয়ে একটি অ্যাপ তৈরি করুন । অতঃপর ওই অ্যাপের মার্কেটিং করুন । মার্কেটিং করার জন্য google বিজ্ঞাপন দিন, ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিন অথবা ইউটিউবে বিজ্ঞাপন দিন । অতঃপর সেখান থেকে অনেক মানুষ আপনার অ্যাপ ডাউনলোড করবে ।
আপনার তৈরিকৃত অ্যাপে গুগল এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন ব্যবহার করুন , এক্ষেত্রে দেখা যাবে অনেক মানুষ আপনার অ্যাপ ব্যাবহার করবে অথবা শুনবে । তারপর সেখানে google নিজে থেকে এডসেন্সের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করাবে । সেখান থেকে আপনি প্রতিমাসে মোটা অংকের অর্থ জেনারেট করতে পারবেন ।
ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করা
আমরা জানি ইউটিউব হচ্ছে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নাম । আমরা যখন কোন নতুন গান এবং মুভি ট্রেইলার সহ আরো অন্যান্য তথ্য জানতে চাই তার জন্য সবার প্রথমে ইউটিউবে এসে সার্চ করি । অতঃপর সেই গান অথবা মুভি ট্রেইলার বা অন্য যেকোনো বিষয় সম্পর্কে আমরা ভিডিও দেখতে পারি ।
আপনি চাইলে নিজের নামে অথবা প্রতিষ্ঠানের নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে পারেন । অতঃপর সেই চ্যানেলে ভিডিও পাবলিশ করতে পারেন । খুব ভালো মানের ভিডিও পাবলিশ করলে খুব দ্রুতই আপনার ভিডিওগুলো অসংখ্য মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে এবং সেখান থেকে আপনি অনেক বেশি পরিমাণে ভিউজ পেতে পারেন ।
আপনার তৈরি করা ভিডিওতে যত বেশি পরিমাণে ভিউজ হবে আপনার ইনকাম ঠিক তত বেশি পরিমাণে বাড়বে । একজন ব্যক্তি সফল ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করার জন্য অবশ্যই ভালো মানের ভিডিও তৈরি করতে হবে । অগোছালো ও নিম্ন মানের ভিডিও তৈরি করে আপনি কিন্তু কখনোই জীবনে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারবেন না ।
আপনি যদি ইউটিউব থেকে ঘরে বসে টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে অবশ্যই শুরুতে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করুন । অতঃপর আপনি যে বিষয়ের উপর অভিজ্ঞ আছেন সেই বিষয়ের উপরে ভিডিও তৈরি করুন এবং নিয়মিত পাবলিশ করে যেতে থাকুন । একটা সময় দেখা যাবে আপনি ভিডিওগুলো থেকে অনেক বেশি ভিউজ পাচ্ছেন এবং মোটা অংকের অর্থও উপার্জন করতে পারছেন ।
ফেসবুক পেজ তৈরি করা
আমরা বেশিরভাগ মানুষ নিজেদের অবসর সময় কাটানোর জন্য ফেসবুক ব্যবহার করে থাকি । বিশেষ করে বিভিন্ন তরুণ ও তরুণী নিজেদের ছবি আপলোড করা, স্ট্যাটাস আপডেট করা এবং ভিডিও পাবলিশ করা ইত্যাদি কাজে দিনের বেশিরভাগ সময় ফেসবুকে ব্যবহার করে থাকেন । তবে বেশিরভাগ মানুষ ফেসবুক প্রোফাইল ব্যবহার করতে পছন্দ করে ।
কিন্তু আপনি চাইলে ফেসবুক প্রোফাইল ব্যবহার করে একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করতে পারেন । কেননা ফেসবুক পেজ যদি তৈরি করেন তাহলে আপনি অনেক বেশি পরিমাণে মানুষের কাছে আপনার ভিডিও অথবা স্ট্যাটাস পৌঁছাতে পারবেন । এতে দেখা গেল খুব অল্প সময়ে আপনার ফেসবুক পেজের পরিচিতি লাভ করবে ।
আপনার পেইজে যদি অনেক বেশি ফলোয়ার থাকে তাহলে তাদেরকে কাজে লাগিয়ে আপনি ফেসবুক থেকে অনেক বেশি অর্থ উপার্জন করতে পারেন । বর্তমানে ফেসবুক বেশ কিছু মাধ্যম চালু করেছে যেগুলো দিয়ে আপনি ফেসবুক থেকে টাকা উপার্জন করতে পারবেন । সেগুলো হচ্ছে
- ভিডিও মনিটাইজেশন
- রিলস মনিটাইজেশন
- স্টার গিফট সিস্টেম
- সাবসক্রিপশন সিস্টেম
আপনি যদি কোন বিষয়ের উপর অভিজ্ঞ হন তাহলে ওই বিষয়ের উপর ভিডিও তৈরি করতে পারেন এবং সেই ভিডিও গুলো ফেসবুকে আপলোড করবেন । আপনার পেজে যদি অনেক বেশি ফলোয়ার থাকে তাহলে মুহূর্তের মধ্যে ভিডিওগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে । সেখান থেকে আপনি অনেক বেশি ভিউজ পাবেন এবং ফেসবুক ওই ভিডিও গুলোতে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করাবে ।
অতঃপর প্রতি ভিডিওতে আপনি আলাদা আলাদা রেভিনিউ জেনারেট করতে পারবেন । তারপর প্রতিমাসে আপনার একাউন্টে যদি ১০০ ডলার জমা হয় তাহলে ফেসবুক আপনাকে পেমেন্ট করে দিবে । মূলত এই পদ্ধতি অবলম্বন করার মাধ্যমে আপনি চাইলে ঘরে বসে ফেসবুক পেজ দিয়ে প্রতি মাসে ৩০ থেকে হাজার টাকা উপার্জন করতে পারবেন ।
অনলাইন আর্টিকেল তৈরি করা
অনলাইন থেকে টাকা রোজগার করার জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় এর নাম হচ্ছে আর্টিকেল তৈরি করে টাকা ইনকাম করা । অনেকে হয়তো এই বিষয়টা মেনে নিতে পারবেন না । তবে হ্যাঁ আপনি যদি মানতে না চান তাহলে আমি অবশ্যই বলব আর্টিকেল তৈরি করে খুব সহজে অনলাইন থেকে টাকা উপার্জন করা যায় । তাহলে সেটা কিভাবে সম্ভব?
আর্টিকেল তৈরি করে টাকা ইনকাম করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে ইংরেজি বিষয়ে অভিজ্ঞ হতে হবে । যদি আপনি ইংরেজি বিষয়ে পারদর্শী হন তাহলে আর্টিকেল তৈরি করে স্মার্ট ইনকাম করতে পারবেন তাও খুব সহজে । আপনি বেশ কিছুদিন কিভাবে আর্টিকেল লিখতে হয় সেই বিষয়ে গুগল অথবা ইউটিউবে ভিডিও ও তথ্য সম্পর্কে জানতে থাকুন ।
কিভাবে এস ই ও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখতে হয় সেই বিষয়ে জানুন । অতঃপর আপনি যে খুব ভালো মানের আর্টিকেল লিখতে পারেন সেই বিষয় সম্পর্কে বিভিন্ন মানুষকে জানান । এর জন্য আপনি ফেসবুকে অথবা ইউটিউবে ভিডিও তৈরি করতে পারেন অথবা বিভিন্ন স্ট্যাটাস আপডেট করতে পারেন ।
তাছাড়া আপনার যদি কোন ওয়েবসাইট থাকে সেই ওয়েবসাইটে ভালো মানের আর্টিকেল লিখুন এবং সেই আর্টিকেলে বলে দিন আপনি আর্টিকেল লিখতে পারেন । প্রতি আর্টিকেল যদি আপনার কাছ থেকে কেউ নেয় আপনি ঠিক এত টাকা নির্ধারণ করে দিবেন । তাহলে দেখা যাবে সেখান থেকে আপনাকে বিভিন্ন ব্যক্তি আর্টিকেলের জন্য অর্ডার করবে ।
অতঃপর আপনি তাদের কাছ থেকে পেমেন্ট নিবেন এবং ভালো মানের আর্টিকেল প্রদান করবেন । তাছাড়া আপনি চাইলে আর্টিকেল তৈরি করার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে পারেন । বর্তমানে ফাইবার, আপ ওয়ার্ক এবং পিপল পার আওয়ার সহ বেশ কিছু জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট গুলোতে নিজের আর্টিকেলের ডেমু পাবলিশ করুন ।
সেখান থেকে যদি কোন বায়ার আপনার আর্টিকেলের উপর আকর্ষিত হয় নিঃসন্দেহে উনি আপনার আর্টিকেলের জন্য অর্ডার করবে । তারপর আপনি যখন উনি যতটুকু প্রত্যাশা করে তার থেকে ভালো মানের আর্টিকেল প্রদান করতে পারেন তাহলে উনার সাথে আপনি লম্বা সময় ধরে কাজ করার সুযোগ পাবেন । এভাবেই চাইলে আপনি প্রতি মাসে .৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আর্টিকেল লিখে উপার্জন করতে পারেন ।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আমরা ইতিমধ্যে উপরে সেরা ১০ টি উপায় অবলম্বন করে কিভাবে প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪০ হাজার টাকা উপার্জন করা যায় সে সম্পর্কে জেনেছি । কিন্তু একটা বিষয় হচ্ছে আমরা অনেকে অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জন করতে চাই এবং কাজও শুরু করে দেই কিন্তু অল্প কয়েকদিনে কাজ করে কোন সফলতা পাইনা বলে সেই কাজ ছেড়ে দেই । কিন্তু এইটা করা কখনো ঠিক নয় ।
আপনি যদি অনলাইন থেকে টাকা রোজগার করতে চান তাহলে আপনাকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে এবং প্রতিনিয়ত নিজের স্কিল ডেভেলপমেন্ট করতে হবে । তারপর একটা সময় দেখা যাবে আপনার কাজের অভাব হবে না এবং আপনি ভালো অংকের টাকা রোজগার করতে পারছেন । তাই শুরুতে টাকার পিছনে না ছুটে নিজের স্কিল তৈরি করুন এবং কাজ করতে থাকুন । ইনশাল্লাহ একদিন আপনি নিশ্চয়ই সফল হবেন ।
আমাদের শেষ কথা
আজকের পোস্টটিতে আমরা কিভাবে অনলাইন থেকে ঘরে বসে প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা যায় তার জন্য সেরা ১০ টি উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি । আপনি যদি ইতিমধ্যে অনলাইন থেকে টাকা রোজগার করার চিন্তা-ভাবনা করে থাকেন তাহলে উপরে উল্লেখিত স্টেপ গুলো ফলো করুন এবং আপনার অনলাইন ইনকাম জার্নি শুরু করে দিন ।
আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার খুবই ভালো লেগেছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আপনি যদি সাবানতম উপকার পান তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের কাছে পোস্টটি শেয়ার করে দিন । তাছাড়া আমার এই পোস্ট সম্পর্কে যদি আপনার কোন মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন । ধন্যবাদ ।