আমাদের অনেক ভাই ও বোন কুয়েতে কোন কাজের চাহিদা বেশি এ সম্পর্কে জানতে চান । আপনিও কি অনলাইনে এই বিষয়ে তথ্য খুঁজতেছেন? আপনার উত্তরটি যদি হ্যাঁ হয় তাহলে সঠিক জায়গাতে এসেছেন । কেননা আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করব কুয়েত যেতে কত টাকা লাগে, কি কি কাগজপত্র লাগে, ভিসার দাম কত এবং কুয়েতে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি ।
আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে দামি মুদ্রার নাম কি এবং মুদ্রাটি কোন দেশের । উত্তরটি আসবে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে দামি মুদ্রার নাম হচ্ছে কুয়েতি দিনার এবং মুদ্রার দেশের নাম হচ্ছে কুয়েত । বর্তমানে কুয়েতের দিনার মূল্য ডলারের মূল্যের প্রায় তিন গুণের সমান । সেই সুবিধার্থে কুয়েতের মানুষ উন্নত জীবন যাপন বা লাক্সারি লাইফ উপভোগ করে থাকে ।
আরও পড়ুন ➝ দুবাই ট্যাক্সি ড্রাইভার বেতন কত
আপনি যদি চান বাংলাদেশ থেকে বিদেশে গিয়ে উচ্চ বেতন এবং উন্নত জীবন যাপন উপভোগ করবেন তাহলে অবশ্যই সবার প্রথমে কুয়েতকে রাখুন । তাই আমাদের অনেকে জানতে চান বাংলাদেশ থেকে কুয়েতে যেতে কত টাকা লাগে, ভিসার দাম কত এবং কি কি কাগজপত্র লাগে সম্পর্কে । হ্যাঁ আমাদের এ বিষয়ে সম্পর্কে জানা অতীব জরুরী ।
আমরা এখন বাংলাদেশ থেকে কুয়েত সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানবো । আপনি যদি এ বিষয়ে জানতে চান তাহলে পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন । তো আর দেরি না করে চলুন আমাদের আজকের মূল আলোচনায় যাওয়া যাক ।
কুয়েতে যেতে কত টাকা লাগে
বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যেতে কত টাকা লাগে তা সাধারণত দুইটি মাধ্যমের ওপর ভিত্তি করে বলা যায় । আপনি যদি কোন এজেন্সি অথবা দালালের মাধ্যমে কুয়েত যেতে যান তাহলে খরচ হতে পারে সর্বনিম্ন ৭ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত ।
তবে কুয়েতে যদি আপনার পরিচিত কোন ব্যক্তি অথবা আত্মীয় স্বজন থাকে তাহলে উনার রেফারেন্সে গেলে আপনি ৫ লাখ টাকা থেকে ৬ লাখ টাকায় কুয়েত যেতে পারবেন । কিন্তু আমাদের সকলের তো আর কুয়েতে পরিচিত কোন ব্যক্তি নেই । তাই আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দালাল অথবা এজেন্সি ব্যবহার করে যেয়ে থাকি ।
আপনি যদি পরিচিত ব্যক্তি বা আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে কুয়েত যেতে না পারেন তাহলে অবশ্যই দালাল এবং এজেন্সি ব্যবহার করা পূর্বে সেটি আদৌ বিশ্বস্ত কিনা যাচাই করে নিবেন । কারণ বর্তমানে অনেক প্রতারক চক্র রয়েছে যা আপনার টাকা হাতিয়ে নিবে এবং বিদেশে গিয়ে আপনার বিপদের মুখে সম্মুখীন হতে হবে ।
কুয়েত যেতে কি কি লাগে
আমরা যদি কখনো বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যেতে চাই তাহলে বেশ কিছু কাগজপত্র বা ডকুমেন্ট সবার প্রথমে সংগ্রহ করতে হবে । এখন আমরা জানবো কি কি কাগজপত্র থাকলে কুয়েত যাওয়া যায় । আপনাদের সুবিধার্থে সেই কাগজপত্র গুলোর নাম নিম্নে তুলে ধরা হলো ।
- সম্পূর্ণ বৈধ বাংলাদেশী পাসপোর্ট
- পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট
- কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট (যদি থাকে)
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর ফটোকপি
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ভেরিফিকেশন
- মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
আপনি যদি কুয়েতের ভিসা আবেদন করতে চান তাহলে অবশ্যই সবার প্রথমে উপরে উল্লেখিত কাগজপত্রগুলো সংগ্রহ করবেন এবং পরবর্তীতে ভিসার আবেদন করবেন । আশা করি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন ।
কুয়েতের ভিসার দাম কত টাকা
আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি বাংলাদেশ হতে কুয়েত যেতে কত টাকা খরচ হয় । কিন্তু আমরা সঠিকভাবে জানি না কুয়েতের ভিসার দাম কত । হ্যাঁ এই বিষয়টা সম্পর্কে আমাদের প্রত্যেকের জানা দরকার । কারণ যদি কোন এজেন্সি অথবা দালাল ব্যবহার করে আমরা ভিসার আবেদন করি তাহলে হয়তো আমাদের থেকে বেশি টাকা নিতে পারে ।
আরও পড়ুন ➝ দুবাই ভিসা ২০২৪ আজকের খবর
সাধারণত ভিসার ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে কুয়েতের ভিসার দাম হয়ে থাকে । তবে বর্তমানে কুয়েতের ভিসার দাম হচ্ছে ৬০,০০০ টাকা থেকে ৭০,০০০ টাকা (সর্বশেষ আপডেট মোতাবে) । তবে একটা বিষয় সব সময় মাথায় রাখবেন সময়ের সাথে সাথে এই ভিসার দাম কম অথবা বেশি হতে পারে ।
কুয়েতে কোন কাজের চাহিদা বেশি
আমরা যদি বাংলাদেশ থেকে কুয়েতে গিয়ে শুরু থেকেই উচ্চ বেতনে চাকরি করতে চাই তাহলে জানা দরকার বর্তমানে কুয়েতে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি রয়েছে । এখন আমরা সেই সকল কাজগুলোর নাম সম্পর্কে জানব । আপনাদের সুবিধার্থে এখন নিম্নে সেগুলো উল্লেখ করা হলো ।
- ড্রাইভিং
- রেস্টুরেন্ট
- কনস্ট্রাকশন
- ওয়েল্ডিং
- হোটেল
- ইলেকট্রিশিয়ান
উপরে যতগুলো কাজের নাম তুলে ধরা হয়েছে বর্তমানে কুয়েতে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে এই কাজগুলো করা হয় । আপনি যদি উপরে উল্লেখিত যেকোনো একটি কাজে পারদর্শী হন তাহলে শুরু থেকেই উচ্চ বেতনের চাকরি করতে পারবেন ।
কুয়েত ড্রাইভিং ভিসার বেতন কত
বর্তমানে বাংলাদেশের অসংখ্য তরুণ ড্রাইভিং পেশাকে নিজের ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে । ড্রাইভিং হচ্ছে বর্তমান সময়ের একটি স্মার্ট পেশার নাম । আপনি যদি একজন শিক্ষিত তরুণ হয়ে থাকেন তাহলে বেকার বসে না থেকে আজই ড্রাইভিং শিখে ফেলুন এবং ড্রাইভিং কাজে কুয়েত চলে আসুন ।
বিভিন্ন কলকারখানা বা বাসা বাড়িতে কুয়েতে অসংখ্য ড্রাইভার নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে এবং তাদেরকে বেতন দেওয়া হয় উচ্চ পর্যায়ের । বর্তমানে কুয়েত ড্রাইভিং ভিসার বেতন হচ্ছে সর্বনিম্ন ৪৫ হাজার টাকা । তবে আপনার কাজের অভিজ্ঞতা এবং ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে প্রতিনিয়ত বেতনের পরিমাণ বাড়তে থাকবে ।
আমাদের শেষ কথা
আজকের পোস্টে আমরা মধ্যপ্রাচ্যের উন্নত ও সম্ভ্রান্ত মুসলিম সম্প্রদায় ভুক্ত দেশ কুয়েতের কোন কাজে চাহিদা বেশি, বেতন কত টাকা, এবং যেতে কত টাকা লাগে সহ আরও অসংখ্য তথ্য জানতে পেরেছি । আপনি যদি কখনো বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যেতে চান তাহলে সবার প্রথমে যে কোন একটি কাজে পারদর্শী হয়ে তারপর কুয়েত চলে আসুন । তাহলে আশা করি শুরু থেকেই উচ্চ বেতনে চাকরি করতে পারবেন ।
সম্মানিত পাঠক, আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার খুবই ভালো লেগেছে । সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আপনি যদি সামান্যতম উপকার পান তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুবান্ধব ও ফ্যামিলিতে এই পোস্টটি শেয়ার করবেন । তাছাড়া এই পোস্ট সম্পর্কে যদি আপনার কোন মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই জানাবেন । আজকের মত এখানেই শেষ করছি । সবাই ভালো থাকুন । সুস্থ থাকুন । আল্লাহ হাফেজ ।